কাতালোনিয়ায় ভোট-জয় পেলেও হোঁচট খেলেন আর্তুর মাস

স্পেনের সমৃদ্ধ শিল্পাঞ্চল কাতালোনিয়ার আঞ্চলিক পার্লামেন্ট নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী দলগুলোর জোট জিতেছে। তবে স্বাধীনতা লাভের স্বপ্ন নিয়ে আগাম নির্বাচনের ডাক দেওয়া এ জোট তাদের প্রত্যাশিত নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।
অর্থাৎ স্বাধীনতার প্রশ্নে এগোনোর ক্ষেত্রে এখন অন্য দলগুলোর সমর্থনও নিতে হবে তাদের। জোটের প্রধান প্রেসিডেন্ট আর্তুর মাসের জন্য নির্বাচনের এ ফলকে হোঁচট হিসেবে দেখা হচ্ছে।
নির্বাচনের এই ফলকে অবশ্য ইতিবাচকভাবে নিয়েছে কেন্দ্রের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাহয়ের নেতৃত্বাধীন সরকার।
কাতালোনিয়ার ১৩৫ আসনের পার্লামেন্টে গত রবিবার নির্বাচন হয়। ক্ষমতাসীন জোট কনভারজেন্স অ্যান্ড ইউনিয়ন (সিআইইউ) এবং স্বাধীনতাপ্রত্যাশী আরো দুটি ছোট দল মিলেও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। জোটের প্রধান দল মাসের নেতৃত্বাধীন ডেমোক্র্যাটিক কনভারজেন্স অব কাতালোনিয়া পেয়েছে ৫০ আসন। ২০১০ সালের নির্বাচনে তারা পেয়েছিল ৬২ আসন। তবে তাদের জোটসঙ্গী ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন অব কাতালোনিয়া পেয়েছে ২১টি আসন। গতবার তারা পেয়েছিল ১০ আসন। ৫২ লাখ ভোটারের মধ্যে এবার ভোট দিয়েছে ৬৮ শতাংশ ভোটার।
নির্বাচনে জিতলে কাতালানরা স্বাধীনতা চায় কি না সে প্রশ্নে গণভোটের আয়োজন করা হবে_এটাই ছিল মাসের নির্বাচনী প্রচারের মূল বক্তব্য। ফলেই পরিষ্কার হয়ে যায়, এ মত কাতালানরা পুরোপুরি গ্রহণ করেনি। তবে ফল ঘোষণার পর সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে মাস বলেন, এখনো গণভোট আয়োজনে আত্মবিশ্বাসী তিনি। মেয়াদের আগামী চার বছর এ চেষ্টা নিয়েই তিনি কাজ করে যাবেন বলেও জানান।
কেন্দ্রীয় সরকার অবশ্য এ ফলে সন্তুষ্ট। অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত কেন্দ্র ঠিক এ মুহূর্তেই কাতালোনিয়ার মতো সমৃদ্ধ অঞ্চলের আলাদা হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি নিতে চাইছে না। এ ছাড়া স্পেনের সংবিধানেও দেশের কোনো অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতা প্রশ্নে গণভোটের সুযোগ নেই। স্বাধীনতার ব্যাপারে গণভোট চাইলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। এ মুহূর্তে কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টে রাহয়ের পিপলস পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। তাই ওই সংশোধনী পাস হওয়া প্রায় অসম্ভব।
কাতালনদের সঙ্গে কেন্দ্রের মূল দ্বন্দ্ব অর্থনৈতিক। কাতালানদের দাবি, প্রতি বছর তারা কেন্দ্রকে দুই হাজার ১০০ কোটি ডলার কর দেয়। এর বেশির ভাগই কাতালোনিয়া নয় বরং স্পেনের অন্য অঞ্চলে ব্যয় করে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রেসিডেন্ট মাস এ হিস্যা বাড়ানো কথা বললে কেন্দ্র তা নাকচ করে দেয়। এ নিয়ে গত সেপ্টেম্বর থেকেই কাতালোনিয়ায় অসন্তোষ শুরু হয়। তখনই নির্ধারিত সময়ের দুই বছর আগেই আগাম নির্বাচনের ডাক দেন মাস।
সূত্র : বিবিসি, টেলিগ্রাফ।

No comments

Powered by Blogger.