এর দুর্বলতা ও সীমাবদ্ধতা দূর করা জরুরি-শিশুখাদ্য আইন

বুকের দুধ ও শিশুখাদ্যবিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে যে পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে, তা খুবই উদ্বেগজনক। শিশুখাদ্য বাজারজাত করার ব্যাপারে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা হচ্ছে না বাংলাদেশে। এ আইন সঠিকভাবে কার্যকর না হওয়ায় ফলটি যাদের ওপর গিয়ে পড়ছে, তারা আর কেউ নয়, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম—আজকের শিশুরা।


বাংলাদেশে এখন এ-সংক্রান্ত যে আইনটি আছে, তা ১৯৮৪ সালে অধ্যাদেশের মাধ্যমে জারি করা হয়েছিল। এটা স্পষ্ট যে এ আইনটির দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে কোম্পানিগুলো।
সেমিনারে উপস্থাপিত এক প্রবন্ধে শিশু পুষ্টিবিদ এম কিউ কে তালুকদার তথ্য দিয়ে জানিয়েছেন, আইন ভঙ্গের অভিযোগে তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং তারা হেরেছেও। কিন্তু শাস্তির বিধান কম থাকায় আইন মেনে না-চলা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে যে আইনটি কার্যকর রয়েছে, তা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে দ্বিতীয় শ্রেণীর বলে চিহ্নিত হয়েছে। আমাদের পাশের দেশ ভারতে এ আইনটি যথেষ্ট শক্তিশালী। সেখানে এটি ফৌজদারি আইন এবং কোনো চিকিৎসক এ আইন ভাঙলে কারাদণ্ড ও নিবন্ধন বাতিলের মতো কঠোর বিধান রয়েছে। এ কারণে আমাদের আইনটি যে পরিবর্তন করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্বের সুযোগ নেই।
আমরা মনে করি, বর্তমান আইনের যে সীমাবদ্ধতা ও দুর্বলতা রয়েছে, যার সুযোগ নিচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, তা দূর করে একটি কঠোর আইন করার উদ্যোগ নিতে হবে এখনই। এ ক্ষেত্রে যে অগ্রগতি হয়েছে তা হচ্ছে, বাংলাদেশ ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশন বর্তমান আইনটি সংশোধন করে একটি খসড়া তৈরি করেছে। নতুন আইন করার ক্ষেত্রে এ খসড়াকে বিবেচনায় নেওয়া যায়। আমরা আশা করব, বিকল্প শিশুখাদ্যের মতো একটি সংবেদনশীল বিষয়ে সরকার নিষ্পৃহ ভূমিকা না নিয়ে আইনটি সংশোধন করার পদক্ষেপ নেবে।

No comments

Powered by Blogger.