অবশেষে প্রধান নির্বাহী

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ঈদের আগে শেষ দিনের মতো চলছিল জাতীয় দলের অনুশীলন। ছুটির আগের দিনের মেজাজে চলছিল ক্রিকেট বোর্ডের অফিসও। হঠাৎই অফিসজুড়ে ছোটাছুটি। ফুলের তোড়া নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচের দিকে ছুটলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী।
বিশেষ কেউ এলেন নাকি? হ্যাঁ, দীর্ঘ আড়াই বছর পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে পা রাখলেন একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা—মঞ্জুর আহমেদ। ১৯৯২ সাল থেকে ব্রুনাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পালন করতে থাকা মঞ্জুর আহমেদের বিসিবিতে নিয়োগের প্রক্রিয়া আগেই শেষ হয়ে গেছে। কাল আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করলেন অফিস।
দীর্ঘদিনের অপেক্ষায় অবশেষে একজন প্রধান নির্বাহী পেয়েছে বিসিবি। স্বভাবতই তাঁর কাছে প্রত্যাশাও আছে বেশ। কিন্তু প্রত্যাশা পূরণে মঞ্জুর আহমেদ কতটা কী করবেন, সেটা নিয়ে কাল অন্তত কথা বলতে চাইলেন না। শুধু বললেন, নিজের আদর্শের কথা, ‘কী করব না করব, সেটা নিয়ে এখনই কথা বলতে পারছি না। এখনো সবার সঙ্গে পরিচয়ও হয়নি। প্রেসিডেন্ট সাহেবের সঙ্গে, বোর্ড পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলব। তবে এটুকু বলতে পারি, আমার কাছে মূলত গুরুত্ব পাবে সুপ্রশাসন গঠন করা এবং ক্রিকেটে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা।’
ব্রুনাইতে কাজ করার অভিজ্ঞতা এ কাজে তাঁকে সাহায্য করবে অবশ্যই। তবে মঞ্জুর আহমেদ মানছেন, ব্রুনাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনে কাজ করা আর বিসিবিতে কাজ করা এক কথা নয়, ‘এটা অনেক অনেক বড় জায়গা। তার পরও ব্রুনাই বলুন আর বাংলাদেশ, ক্রিকেট বলুন আর ফুটবল; দুনিয়ার সব জায়গাতেই প্রশাসন প্রায় একইভাবে চালাতে হয়। সেই অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই কাজে লাগবে।’
এই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ব্রুনাইতে নিজের ‘লক্ষ্যপূরণ’ করতে পারার তৃপ্তিও সঙ্গী হয়ে এসেছে মঞ্জুর আহমেদের, ‘আমি যখন ব্রুনাইতে যাই, তখনো ওখানে শুধু বিদেশিরা, মূলত ব্রিটিশরা ক্রিকেট খেলত। আমার লক্ষ্য ছিল, স্থানীয়দের মধ্যে ক্রিকেটটাকে কিছুটা হলেও ছড়িয়ে দেওয়া। সেটা খানিকটা হলেও করতে পেরেছি।’
তা বাংলাদেশ নিয়েও কি বিশেষ কোনো লক্ষ্য আছে তাঁর? মঞ্জুর আহমেদ হাসলেন, ‘এই দেশের মানুষ আমি, এই দেশে খেলেছি। এই দেশ নিয়ে অনেক স্বপ্ন তো আছে। কিন্তু জাতীয় ক্রিকেটের প্রশ্নে আমার একার লক্ষ্যটা খুব গুরুত্বপূর্ণ না। এখানে সবার লক্ষ্য এক হলেই সেটা পূরণ সম্ভব।’
অন্য লক্ষ্যের কথা পরে। আপাতত প্রধান নির্বাহীর চেয়ারে বসেই বিশ্বকাপের উত্তাপ টের পাওয়ার কথা মঞ্জুর আহমেদর। সেটা টের পাচ্ছেনও। বিশ্বকাপ নিয়ে তিনি নিজেও রোমাঞ্চিত। কিন্তু শুধু একটা বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক হওয়ার উত্তেজনাই তো আর সব নয়, ‘দেশে এত বড় দায়িত্ব নিয়ে আসা, বিশ্বকাপের সময় দায়িত্ব পালন করা; সবই রোমাঞ্চকর। তবে আমি বিশ্বকাপের চেয়ে দূরে তাকাতে চাই।’
বিসিবির প্রধান নির্বাহীর চেয়ারটা বরাবরই টলমল। মঞ্জুর কতটা শক্ত হয়ে বসতে পারেন সেই চেয়ারে, সেটাই এখন দেখার।

No comments

Powered by Blogger.