চীনা মুসলিম জঙ্গিরা পাকিস্তানে পালিয়ে যাচ্ছে

চীনের সরকার-নিয়ন্ত্রিত একটি পত্রিকা জানিয়েছে, সে দেশের মুসলিম জঙ্গিরা পাকিস্তানে পালিয়ে যাচ্ছে। সেখানে তারা বসতি স্থাপন করে ভবিষ্যৎ হামলার পরিকল্পনা করছে। এসব জঙ্গিদের সঙ্গে তালেবান ও আল-কায়েদার নেতাদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে।
জিনজিয়াং প্রদেশে সংখ্যালঘু উইঘুর সম্প্রদায় ও জাতিগত হান সম্প্রদায়ের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সোমবার চায়না ডেইলি এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। জাতিগত সহিংসতার বার্ষিকী উপলক্ষে ফের সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় জিনজিয়াং প্রদেশের রাজধানী উরুমচি ও অন্যান্য এলাকায় কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
চায়না ডেইলি জানায়, মুসলিম অধ্যুষিত জিনজিয়াং প্রদেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্টের (ইটিআইএম) একটা উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সদস্য পাকিস্তানে পালিয়ে গেছে। সেখানে তারা বসতি স্থাপন করে নতুন করে হামলার ষড়যন্ত্র করছে।
পত্রিকাটি বলেছে, তালেবান ও আল-কায়েদার সঙ্গে ইটিআইএমের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। সংগঠনটির প্রধান নেতাও পাকিস্তানে আত্মগোপন করে আছেন। পাকিস্তানভিত্তিক তালেবান বাহিনীতে ইটিআইএম সদস্যদের ‘চায়নিজ ব্যাটালিয়ন’ নামে একটি শাখা রয়েছে। এই ব্যাটালিয়নে ৩২০ জন সদস্য রয়েছেন।
চায়না ডেইলি আরও বলেছে, ‘ইটিআইএম সদস্যদের পাকিস্তানে পালিয়ে যাওয়াটা কঠিন কিছু নয়। কেননা, তাদের ধর্ম, চেহারা ও ভাষার মধ্যে মিল রয়েছে।’
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির সপ্তাহব্যাপী বেইজিং সফর শুরুর এক দিন আগে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলো। এ সফরকালে পাকিস্তানে ৬৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি পরমাণু চুল্লি স্থাপনে চীনের অর্থসহায়তা-সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে।
উরুমচিতে গত বছরের ৫ জুলাই উইঘুর ও হান সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতিগত সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে দুই শতাধিক লোক নিহত হয়। আহত হয় অন্তত এক হাজার ৭০০ জন। জিনজিয়াং প্রদেশের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় হান সম্প্রদায়ের বসতি স্থাপন বেড়ে যাওয়ার প্রতিবাদ করতে গিয়ে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে এ সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
গত বছরের সহিংসতাকে কেন্দ্র করে আবার সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে—এই আশঙ্কায় গতকাল জিনজিয়াং প্রদেশের রাজধানীজুড়ে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। সশস্ত্র ও দাঙ্গা পুলিশ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে টহল জোরদার করে। তবে এদিন বেশির ভাগ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও রেস্তোরাঁ খোলা ছিল।

No comments

Powered by Blogger.