ইরাকে রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে বাইডেনের আলোচনা

নতুন একটি সরকার গঠনের লক্ষ্যে ইরাকে চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গতকাল সোমবার ইরাক সফরের শেষ দিনে তিনি ইরাকি প্রেসিডেন্ট জালাল তালাবানির সঙ্গে বৈঠক করেন। এর আগে তিনি সে দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিকদের প্রতি আহ্বান জানান জনগণের আস্থার প্রতিদান দেওয়ার জন্য।
গত ৭ মার্চ ইরাকে পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়। কিন্তু গত চার মাসেও সেখানে কোনো সরকার গঠিত হয়নি। নির্বাচনে আইয়াদ আলাবির নেতৃত্বাধীন জোট সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসনে জয়ী হয়নি। অন্যদিকে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা নূরি আল-মালিকির জোট ১৫৯টি আসনে নিজেদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেছে। কিন্তু ৩২৫ আসনের পার্লামেন্টে সরকার গঠনের জন্য তাদের আরও চারটি আসন দরকার।
গত রোববার আইয়াদ আলাবি ও নূরি আল-মালিকির সঙ্গে বৈঠক করেন বাইডেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এই নির্বাচন বা সরকার গঠন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোপন কোনো অভিসন্ধি নেই। অচলাবস্থা কাটিয়ে একটি সরকার গঠনের জন্য তিনি দুই নেতা ও সংশ্লিষ্ট রাজনীতিবিদদের প্রতি আহ্বান জানান। বাইডেন বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, যা শুরু করেছিলেন তা শেষ করুন। আমার মত হচ্ছে, নিজেদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য আনুপাতিক হারে আপনাদের সব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব সরকারে থাকা উচিত।’ তিনি বলেন, ‘ইরাকিয়া, স্টেট অব ল, ইরাকি ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স, কুর্দিস্তান অ্যালায়েন্স—সব জোটই নতুন সরকারকে কার্যকর করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
বৈঠকের ব্যাপারে আলাবি বলেন, ‘মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে আসেননি। তিনি ইরাকের স্থিতিশীলতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন এবং দ্রুত একটি সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।’
মালিকি বলেন, ‘তিনি আশা করছেন, আগামী ১৪ জুলাই পরবর্তী পার্লামেন্ট অধিবেশন বসার আগেই প্রধান রাজনৈতিক জোটগুলো সরকার গঠনের ব্যাপারে একটি মতৈক্যে পৌঁছাতে পারবে।’
এদিকে শিয়া সম্প্রদায়ের নেতা মুকতাদা আল-সদর এক বিবৃতিতে মালিকি ও আলাবিকে যুক্তরাষ্ট্রের নয় বরং ইরাকের স্বার্থের ব্যাপারে মনোযোগী থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আলোচনায় অবশ্যই ইরাকি স্বার্থকে গুরুত্ব দিতে হবে, মার্কিন স্বার্থকে নয়।’
২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনী ইরাকে অভিযান চালিয়ে সাদ্দাম হোসেনের সরকারকে উৎখাত করে। সম্প্রতি সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে মার্কিন প্রশাসন। ওয়াশিংটন ও বাগদাদের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী ২০১১ সালের মধ্যে ইরাক থেকে সব মার্কিন সেনা সরিয়ে নেওয়ার কথা।

No comments

Powered by Blogger.