‘আগে আওয়ামী লীগ খেয়েছে, এখন আমরা খাবো’ by প্রতীক ওমর

সাফ কথা। দীর্ঘদিন না খেয়ে ছিলাম। আওয়ামী লীগ সবকিছু লুটেপুটে খেয়েছে। এখন আমাদের সময় এসেছে খাওয়ার। এখন থেকে যেসব টেন্ডার হবে সব বিএনপি’র লোকজন নেবে। ৫ টাকার জিনিস ১ টাকায় নেবে। আমাদের দিকে নজর দিলে পরিণাম ভয়াবহ হবে। এভাবেই এই প্রতিবেদককে জানান গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শহিদুল ইসলাম বাদল।

ঘটনার সূত্রপাত অন্যখানে। সাঘাটার ঘড়িদহ ইউনিয়নের বটতলা বাজারে অবস্থিত কমলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারটি গাছের টেন্ডার নিয়ে। ২ লাখ টাকার গাছ মাত্র ২৮ হাজার ১০০ টাকায় কায়দা করে কিনেছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা শহিদুল ইসলাম বাদল।

বিষয়টি নিয়ে খোঁজ করতে প্রথমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসাহাক আলীর সঙ্গে কথা হয়, তিনি টেন্ডার কমিটির সভাপতি হওয়া সত্ত্বেও সাফ জানিয়ে দিলেন এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। সব বন বিভাগ জানে। পরে বন বিভাগের কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, আমি শুধু দাম নির্ধারণ করেছি। অন্য কিছু জানি না। ধারাবাহিক খোঁজ নেয়ার জন্য সর্বোচ্চ দরপত্রদাতা হিসেবে বাদলের কাছে টেন্ডার প্রক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওপেন টেন্ডারে ২৮ হাজার ১০০ টাকায় আমি গাছগুলো পেয়েছি। এরপর কোনো কথা ছাড়াই উত্তেজিত হয়ে তিনি বলেন, রিপন এমপি’র দুর্নীতি নিয়ে তো কোনো দিন কথা বলেননি, আমরা ছোট ছোট জায়গায় সবে মাত্র হাত দিয়েছি সেখানেই আপনাদের চোখ পড়েছে। আওয়ামী লীগ সবকিছু লুটেপুটে খেয়েছে। এখন আমাদের সময় এসেছে খাওয়ার। এখন থেকে যেসব টেন্ডার হবে সব বিএনপি’র লোকজন নেবে। ৫ টাকার জিনিস ১ টাকায় নেবে। আমাদের দিকে নজর দিলে পরিণাম ভয়াবহ হবে। তিনি এ সময় বোনারপাড়ায় গেলে দেখে নেয়ার হুমকিও দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, বাদল আওয়ামী লীগের পতনের সঙ্গে সঙ্গেই উচ্ছৃঙ্খল হয়ে পড়ে। সবকিছু নিয়ন্ত্রণের জন্য সে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে সাঘাটা উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহম্মেদ তুলিপ মানবজমিনকে বলেন, উচ্ছৃঙ্খলা এড়াতে আমরা সাংগঠনিকভাবে ওয়ার্ড পর্যায়ে বৈঠক করে কর্মীদের সতর্ক করেছি। তারপরও আমাদের কাছে অনেক অভিযোগ আসছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা কমিটি না থাকায় উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব শহিদুল ইসলাম বাদল অনেকটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। সে আমাদের কারও কথা শোনে না। তবে বকে যাওয়া কিছু নেতার কথায় সে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তার ব্যাপারে আমরা ঊর্ধ্বতন নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সাংগঠনিকভাবে সিদ্ধান্ত নেবো।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.