সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার অবৈধ সম্পদের পাহাড়
বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো আবেদনগুলোতে বলা হয়, স্থানীয় রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক আবেদ আলী শিক্ষকতা শুরুর কিছুদিন পর পুলিশের সার্জেন্ট হিসেবে যোগদান করেন। তৎকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্য ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমান পটলের সুপারিশে তিনি ঢাকা মহানগরে বদলি হন। সেখান থেকেই তিনি অবৈধ টাকা উপার্জন শুরু করেন। এই আসনের সাবেক প্রায় প্রতিটি সংসদ সদ্যসের সঙ্গেই তিনি নিজের সুবিধার জন্য সখ্যতা গড়ে তোলেন। এই সখ্যতাকে পুঁজি করে চালিয়ে যান অবৈধ উপার্জন। এলাকার গোধড়া মৌজায় নিজের নামে এবং স্ত্রী-সন্তানদের নামে ৫ কোটি টাকা দিয়ে কিনেছেন আঠারো বিঘা জমি। স্থানীয় কদিমচিলান, ধলা, দাইড়পাড়া, মানিকপুর, ধানইদহ ও চাঁদপুর মৌজায় কিনেছেন প্রায় ৫০বিঘা জমি। বনপাড়া শহরের মিশন স্কুলের পাশে ৫ কাঠার প্লট, বনপাড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পূর্ব পাশে তিন বিঘা জমি, হিরামন সিনেমা হলের পাশে আফতাবের বাড়ি সংলগ্ন ১০ কাঠার প্লট, মহিষভাঙ্গা মৌজায় জনৈক অশিত পাশের দেড় বিঘা জমি কিনেছেন। সরকারকে কর ফাঁকি দিতে এসব প্রতিটি জমি খুবই কমদাম দেখিয়ে রেজিস্ট্রি করেছেন। পৈতৃক বাড়ি ছাড়াও বনপাড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পেছনে দুটি ও হিরামন সিনেমা হলের পাশে আফতাবের বাড়ি সংলগ্ন একটিসহ তার মোট ৫টি বাড়ি ও ঢাকার মোহাম্মদপুরে ফ্ল্যাট রয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। এলাকায় নিজের অবস্থান মজবুত করতে যেকোনো মসজিদ মাদ্রাসায় দানের পাশাপাশি তিনি যেকোনো নির্বাচন আসলে এলাকার প্রভাবশালী প্রার্থীদের পোস্টার ছাপিয়ে দেয়াসহ নানাভাবে অর্থ সহযোগিতা করে আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন। প্রধান উপদেষ্টা, পুলিশ প্রধান ও দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগকারীরা আবেদ আলী ও তার স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্য এবং স্বজনদের সকল ব্যাংক হিসাব অনুসন্ধানের পাশাপাশি তার সকল আয়ের বৈধতা যাচাই করে তাকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
এসব বিষয়ে এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বললে তারাও এই পুলিশ কর্মকর্তার বিপুল সম্পদ ও বাড়ি-গাড়ি থাকার অভিযোগ করেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ওই পুলিশ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। সারাজীবন বেতনের টাকায় তিনি নিজের ও স্ত্রীর নামে ৫-৭ বিঘা জমি কিনেছেন। শান্তি মিশন থেকে ফিরে সেই টাকায় বাড়ি করেছেন। পৈতৃক সূত্রে কয়েক বিঘা জমি পেয়েছেন। নিজের জমি বিক্রি করে ঢাকার মোহাম্মদপুরে বসবাসের জন্য একটি ঠিকানা গড়েছেন বলে জানান তিনি।
No comments