বাংলাদেশের কাছে ধবলধোলাইয়ে হতভম্ব ওয়াসিম আকরাম
চলমান বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে পাকিস্তান এখন পর্যন্ত টানা পাঁচ টেস্ট হেরেছে। এরমধ্যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিনটি এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে দু’টি ম্যাচে হারে দলটি। দুই সিরিজেই হোয়াইটওয়াশ হয় শান মাসুদের দল।
শুধু টেস্টেই নয়, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতেও পাকিস্তানের অবস্থান নড়বড়ে। সর্বশেষ ওডিআই এবং টি-টোয়েন্টি উভয় বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে পাকিস্তান বড় ধাক্কা খায়। ওয়ানডেতে তারা হারে আফগানিস্তানের কাছে এবং টি-টোয়েন্টিতে হারে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে।
গত তিন বছরে ঘরের মাঠে টেস্টে পাকিস্তান ছয়টি পরাজয় এবং চারটি ড্র করেছে। পাকিস্তানের সাবেক খেলোয়াড় ও আঞ্চলিক কোচ বাসিত আলী এএফপিকে বলেন, ‘পাকিস্তানের মানুষ ক্রিকেটকে ঘৃণা করতে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমরা কী করছি তা আয়নায় দেখিয়েছে বাংলাদেশ। জয় পরাজয় খেলার অংশ, কিন্তু এই হার একটি ভূমিকম্পের মতো।’
পাকিস্তানের হয়ে ১৯ টেস্ট এবং ৫০ ওয়ানডে খেলা বাসিত আলী বলেন, ‘পাকিস্তান একটি ইউনিট হিসাবে খেলেনি। খেলোয়াড়দের মনে হচ্ছিল ছড়ানো ছিটানো। এটা পাকিস্তান দল বলতে আমার লজ্জা হয়।’
কী বলছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি বর্তমানে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) প্রধান। দেশটির জাতীয় গণমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, ‘১৯৯৮ সাল থেকে দেশের শাসক দল তাদের বাছাই করা লোকদের পিসিবি চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগ দিয়েছে। এ সমস্ত চেয়ারম্যানরা তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে ক্রিকেট বোর্ড চালাতে গিয়ে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।’ পত্রিকাটি আরো বলছে, ‘পিসিবির শীর্ষ নেতৃত্বে ঘন ঘন পরিবর্তন, গত তিন বছরে পাঁচজন চেয়ারম্যান থাকা ইত্যাদি দলটির অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করেছে।’
পাকিস্তানের আরেকটি জাতীয় দৈনিক ডন বলছে, ‘রাজনৈতিক স্তরে প্রতিবার সরকার বদলের পরপর পরিবর্তনের শিকার হয় পিসিবি। এই পরিবর্তনের সামঞ্জস্যপূর্ণ কোনো কাঠামো নেই। যেভাবে ইচ্ছা পরিবর্তন করা হয়েছে বোর্ড। ফলে এমন অবস্থা।’
পিসিবি চেয়ারম্যান নাকভি গত মাসে ‘সিস্টেম সার্জারি’র কথা বলেছেন। কিন্তু বড় কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি তাকে। ওয়াসিম আকরাম এই কথা টেনে এনে বলেন, ‘আমাদের ক্রিকেটের মান অনেক নিচে নেমে গেছে। কোনো সার্জারিতে কাজ হবে না। তৃণমূল থেকে খেলোয়াড় তুলে আনার কোনো পরিকল্পনা নাই। কোনো ব্যাক-আপ নেই।’
পাকিস্তানের হয়ে ১০৪ টেস্ট এবং ৩৫৬ ওডিআই খেলা ওয়াসিম আকরাম বলেন, ‘আমাদের অনেক কাজ করার আছে। ক্রিকেট নেশন হিসেবে আমাদের হয়তো আরো ধৈর্য ধরতে হবে। দুর্ভাগ্যবশত, আমাদের হাতে কোনো দ্রুত সমাধান নেই।’
ঘরের মাঠে টানা ১০ টেস্ট জয়হীন পাকিস্তান। নিজেদের মাঠে বাজে পারফর্ম দলটির নীতিনির্ধারকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। কারণ তাদের পরবর্তী টেস্টও ঘরের মাঠেই। সামনের মাসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে পাকিস্তান। প্রথম টেস্ট ৭ই থেকে ১১ই অক্টোবর মুলতানে, দ্বিতীয় টেস্ট ১৫ই অক্টোবর থেকে ১৯শে অক্টোবর করাচিতে এবং তৃতীয় টেস্ট হবে ২৪শে অক্টোবর থেকে ২৮শে অক্টোবর রাওয়ালপিন্ডিতে।
No comments