লন্ডনে ‘বিমানে লুটিলার’ শীর্ষক প্রতিবাদ: সিলেটে পূর্ণ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করার দাবি প্রবাসীদের by আরিফ মাহফুজ

‘লুটিলার লুটিলার বিমানে লুটিলার গুটিলার গুটিলার বিমানে কুটিলার! লুটেপুটে বিমানে সিলেটিদের খাচ্ছে আমাদের ছেলেমেয়ে দেশে না যাক চাচ্ছে। বয়স্ক মা-বাবা সদা থাকেন চিন্তায়’ এমন শিরোনাম শীর্ষক কবিতা ও প্রবাসী হোক বৈষম্যবিহীন, প্রবাসীদের দাবি একটাই, পূর্ণ আন্তর্জাতিক সিলেট বিমানবন্দর চাই, অন্য এয়ারলাইন্সের সুযোগ দিন এই স্লোগানগুলো সামনে রেখে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সকল অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে লন্ডনে আন্দোলনে নেমেছেন বৃটিশ বাংলাদেশি ও সাধারণ প্রবাসীরা।

২২শে আগস্ট বৃহস্পতিবার  লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে বৃটিশ বাংলাদেশি এবং প্রবাসীদের সংগঠন বৃটিশ বাংলাদেশি কমিটি ভয়েস ইউ.কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। বিক্ষোভ সমাবেশে প্রবাসীরা বলেন- বাংলাদেশিদের প্রতি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টিকিটের মূল্য বৈষম্য এবং সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরকে একটি পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে রূপদানের মাধ্যমে অন্যান্য বিদেশি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট চালু করে প্রবাসী বৃটিশ বাংলাদেশিদের ছেলে সন্তান এবং বৃদ্ধ অসুস্থ মা-বাবাকে নিয়ে যাতে সিলেটে একটি ন্যায্যমূল্যে নিজের দেশে যাতায়াত করতে পারেন।  

সভায় বক্তারা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং ঢাকা হেড অফিসে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স নতুন চেয়ারম্যান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, এ ছাড়াও লন্ডনে বাংলাদেশের হাইকমিশনার এবং বিমানের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ব্যক্তিবর্গের কাছে দাবি জানান যে, লন্ডন থেকে সিলেট রুটে বিমানের টিকিটের মূল্য এবং লাভের স্বচ্ছতা প্রদান।

অন্যান্য আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সের সঙ্গে মিল রেখে লন্ডন থেকে সিলেট রুটে বিমানের টিকিটের দাম কমানো, বিমানের অনলাইন টিকিট কেনার সিস্টেম শুরু করা, যেখানে দাম এবং ফি আগেই দেখানো হয়, বিমানের টিকিট বিক্রির মূল্য নির্ধারণ এবং সিন্ডিকেট কেলেঙ্কারি বন্ধ করা, লন্ডন থেকে সিলেট রুটে অন্যান্য আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সগুলোকে সিলেট অবতরণের অনুমতি দেয়া এবং সিলেট ওসমানীকে প্রকৃত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিণত করা। তবে এই সভার মূল আলোচনার মধ্যে ছিল বিমান এয়ারলাইন্স লন্ডন থেকে সিলেট রুটের টিকিটের উচ্চমূল্য, মূল্য বৈষম্য, অবিচার এবং সিলেট যাত্রীদের প্রতি অন্যায় আচরণের আসল কারণ চিহ্নিত করা এবং সম্ভাব্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বৃটিশ বাংলাদেশি কমিউনিটি ভয়েসের চেয়ারম্যান সেলিম উদ্দিন চাকলাদার এবং যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক নাসের আল-আমিন এবং ভাইস চেয়ারম্যান অ্যান্ড মিডিয়া রিপ্রেজেন্টেটিভ এবং সাবেক কাউন্সিলর শাহ সোহেল আমিন। বক্তব্য রাখেন বিবিসিভি সংস্থার পক্ষ থেকে ভাইস চেয়ারম্যান জামালুর রহমান ও সহকারী সেক্রেটারি তমিজুর রহমান রঞ্জু এবং হাফসা ইসলাম (বিবিসিভি মহিলা কর্মকর্তা)।

প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্পিকার কাউন্সিলর ব্যারিস্টার সাইফ উদ্দিন খালেদ, আব্দুল মুমিন জাহেদী কেরল-সাংবাদিক, শামসুল হক- কমিউনিটি সমাজকর্মী, লুকমান উদ্দিন- কমিউনিটি সমাজকর্মী, দিলাওয়ার হুসাইন- কমিউনিটি সমাজকর্মী, আবু হুরায়রা সাব-মাস্টার-কমিউনিটি সমাজকর্মী, আজম আলী-কমিউনিটি কর্মী আব্দুর রব-কমিউনিটি সমাজকর্মী, কামাল উদ্দিন-কমিউনিটি সমাজকর্মী, সুয়েজ মিয়া-কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট, রুপিয়া বেগম-কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট বক্তব্য রাখেন। এ সময় আরও অনেকগুলো সংগঠনের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন সংগঠনের কমিটির সদস্যরা বক্তব্য রাখেন।

বৃটিশ বাংলাদেশি কমিউনিটি ভয়েস বিশ্বাস করে যে, এটি যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী ১ মিলিয়ন বৃটিশ বাংলাদেশির বাংলাদেশে যাওয়া ও সহজ যোগসূত্র স্থাপনের জন্য একটি কমিউনিটি ক্যাম্পেইন। যদি বৃটিশ বাংলাদেশিরা বাংলাদেশে সহজে যাতায়াত করতে পারে তবে বাংলাদেশের ইকোনমিতে তাদের কন্ট্রিবিউশন বাড়বে এবং বাংলাদেশে ইনভেস্ট করতে সাহস পাবে। বিমান বাংলাদেশিদের  জাতীয় বাহক এয়ারলাইন, বাংলাদেশিদের  গর্ব এবং সম্পদ এর থেকে সবাই  আরও ভালো সেবা পাওয়ার দাবিদার এবং দাবি করাটা আমাদের ন্যায্য অধিকার।

বক্তারা ইউকে কান্ট্রি ম্যানেজারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন দাবিগুলো নিয়ে অনেক চেষ্টা ও লেখালেখির পরও  বিমান ইউকে কান্ট্রি ম্যানেজারের সঙ্গে দেখা করতে পারিনি অথবা কোনো ভালো জবাব পাননি। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন উপরোক্ত দাবিগুলো স্পষ্ট এবং আলোচনাযোগ্য এবং যতক্ষণ না বিমান এয়ারলাইন্স বৃটিশ গ্রাহকদের লুটপাট বন্ধ না করবে এবং আমাদের দাবি পূরণ না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা এই বিবিসিভি ‘লুটিলার’ প্রচারাভিযান বিমানের এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে জোরালোভাবে লড়াই চালিয়ে যাবে।

No comments

Powered by Blogger.