এনাফ ইজ এনাফ

বৃটেনের লন্ডনে শনিবারের সন্ত্রাসী হামলার পর প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে কড়া ভাষণ দিয়েছেন। রোববার নিজ কার্যালয় ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে তিনি বলেন, যথেষ্ট হয়েছে (এনাফ ইজ এনাফ)। সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা মোকাবিলার প্রশ্নে, অনেক কিছুই পরিবর্তন করা দরকার।
তার বক্তব্য, লন্ডন ব্রিজ হামলা প্রমাণ করে বৃটেনে চরমপন্থা নিয়ে ‘একটু বেশিই সহিষ্ণুতা’ বিরাজ করছে। সন্ত্রাসবাদের শেকড় উপড়ে ফেলতে হলে ‘কিছু রূঢ় ও বেশ বিব্রতকর কথাবার্তা’র প্রয়োজন আছে। তিনি সন্ত্রাসবাদীদের সাজা বৃদ্ধি ও ইন্টারনেটে নজরদারি আরোপেরও ইঙ্গিত দেন। এ খবর দিয়েছে গার্ডিয়ান ও ইন্ডিপেনডেন্ট।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষ্য, বৃটেনে সামপ্রতিক তিন সন্ত্রাসী হামলা হয়তো কোনো ‘অভিন্ন নেটওয়ার্কে’র কাজ নয়। তবে সবকিছুই ‘ইসলামী চরমপন্থার এক অশুভ আদর্শ’ থেকে উৎসরিত। অবশ্য, তিনি এ-ও বলেছেন, এই আদর্শ ইসলাম ধর্মের বিকৃত রূপ।
ইন্টারনেটে নিয়ন্ত্রণ আরোপে নতুন বৈশ্বিক চুক্তি করা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন। তার মতে, সাইবার জগতের জন্য নতুন নিয়ম আনা হলে, সন্ত্রাসীরা অনলাইনে নিরাপদ অবলম্বন পাবে না। প্রধানমন্ত্রী আরো অভিযোগ করেন, বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো যথেষ্ট করছে না।
উল্লেখ্য, লন্ডন ব্রিজে শনিবার ট্রাক দিয়ে পিষে ও ছুরিকাঘাত করে সাত জনকে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। পরে পুলিশের গুলিতে তিন সন্ত্রাসী নিহত হয়। দুই সপ্তাহেরও কম সময় আগে ম্যানচেস্টারে এক কনসার্টে আত্মঘাতী সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয় ২২ জন। প্রায় দেড় মাস আগে ওয়েস্টমিনস্টারে প্রায় একই কায়দায় ৬ জনকে হত্যা করা হয়।
কোবরা মিটিং শেষে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এই আদর্শকে এমন কোনো নিরাপদ স্থান আমরা দিতে পারি না, যেখানে এটি বিস্তার করবে। কিন্তু ইন্টারনেট হলো এমনই এক নিরাপদ স্থান।’ তিনি বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে গণতান্ত্রিক মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের একযোগে কাজ করা উচিত এমন একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়ার জন্য যার মাধ্যমে সাইবার সেপসের ওপর নজরদারি করা যাবে। এভাবেই চরমপন্থার বিস্তার ও সন্ত্রাসবাদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করা যাবে।’
উল্লেখ্য, বৃটেনে নতুন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার বাকি এক সপ্তাহেরও কম। বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, তেরেসা মে’র দল কনজারভেটিভ পার্টি নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অক্ষুণ্ন না-ও রাখতে পারে। হামলার পর তেরেসা মে ইন্টারনেট রেগুলেশনের কথা বললেও, তার দলের নির্বাচনী ইশতেহারে আগেই ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।
এই হামলার ফলে আসন্ন নির্বাচন সময়মতো হবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। তবে মে তার ভাষণে নির্বাচন পেছানোর সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। এই হামলার পর ইউকিপ বাদে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল নিজেদের প্রচার স্থগিত করেছে। তবে শিগগিরই আবার প্রচারণা শুরু হবে।

No comments

Powered by Blogger.