‘মন্ত্রীদের আশ্বাসের পরও রাবি শিক্ষক হত্যার বিচার শুরু হয়নি’

‘প্রফেসর ড. রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যার পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপশি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই হত্যাকা-ের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠে। প্রতিবাদ ও আন্দোলন শুরু হয়ে অপরাধীদের বিচারের। আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তখন সরকারের একাধিক মন্ত্রী ক্যাম্পসে এসে এই হত্যা প্রতিবাদে সংহতি প্রকাশ করে এবং দ্রুত বিচারের আশ্বাস প্রদান করে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এক বছর অতিবাহিত হলেও এর বিচার কার্য এখনো শুরু হয়নি।’ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজী বিভাগের র্শিক্ষক প্রফেসর রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যার এক বছরেও বিচারকার্য শুরু না হওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধনে এসব কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. শহীদুল্লাহ। রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় সিনেট ভবনের সামনে শিক্ষক সমিতি এই মানববন্ধনের আয়োজন করে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. শহীদুল্লাহ-এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. শাহ্ আজম শান্তনুর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি নবনির্বাচিত প্রফেসর মো. নজরুল ইসলাম, পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর মো. সুলতান-উল-ইসলাম, আইন বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর হাসিবুল আলম প্রধান, ইংরেজী বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. এ এফ এম মাসউদ আখতার প্রমুখ। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ্ আজম শান্তনু বলেন, ‘২৩ এপ্রিল ২০১৬ সালে প্রফেসর রেজাউল স্যার হত্যার পরে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দিয়েছিল বিচার কাজ দ্রুত করা হবে। যার প্রেক্ষিতে ছয়-সাত মাস পরে পুলিশ ৮জনকে দোষী সাব্যস্ত করে একটি চার্জশিট দেয়। এরমধ্যে ৪ জন বিভিন্ন সময় জঙ্গীবাদের সাথে যুক্ত থাকায় তারা এনকাউন্টারে মারা গেছে এবং একজনকে পুলিশ ধরতে পারিনি। তবে বর্তমানে বিচার কার্য কি অবস্থায় আছে, সে ব্যাপারে কোন তথ্য শিক্ষক সমিতির জানা নেই।
তাই আমাদের মধ্যে একধরেনের শঙ্কা তৈরী হয়েছে দ্রুত বিচার হবে কিনা?’ এসময় তিনি বলেন, ‘এই জাতীয় হত্যাকা-ের সরকার যদি সুষ্ঠু বিচার করতে পারে, তাহলে অপরাধীরা ভয় পাবে। তখন শিক্ষক হত্যার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে। মানববন্ধনে উপস্থিত নিহত প্রফেসর রেজাউল সিদ্দিকীর মেয়ে রেজওয়ানা হাসিব শতভী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিচারের আগ্রগতি বলতে চার্শশিটের মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে, বাস্তবিকভাবে তেমন কোন আগ্রগতি হয়নি। বিশেষ করে এই মামলার প্রধান আসামী ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী তার বর্তমান অবস্থা জানতে পারছি না। আমি তাকেসহ সকল অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি। এদিকে একই দাবীতে নিহত শিক্ষক রেজাউল করিম সিদ্দিকী বিচারকার্য দ্রুত শুরু করার দাবীতে প্রতিবাদী র‌্যালী ও সমাবেশ করেছে। তারা সকাল সাড়ে ৯ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে মুকুল প্রতিবাদ ও সংহতি মঞ্চে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এর আগে হত্যার এক বছর পূর্তিতে সকালে বিভাগের সামনে থেকে প্রতিবাদী র‌্যালী বের করে ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। সমাবেশে ইংরেজি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. এএফএম মাসউদ আখতার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. শহীদুল্লাহ, ছাত্র উপদেষ্টা মিজানুর রহমান, প্রফেসর মো. জহুরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২৩ এপ্রিল সকালে নগরীর শালবাগান এলাকায় বাড়ি থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে কুপিয়ে ও গলাকেটে ইংরেজির শিক্ষক রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে হত্যা করে দূর্বৃত্তরা।

No comments

Powered by Blogger.