এ কেমন বর্বরতা?

কখনো ভাবিনি, মা-ছেলে বার্ন ইউনিটে পাশাপাশি বিছানায় শুয়ে এভাবে যন্ত্রণায় কাতরাব। আমি একবার নিজের দিকে তাকাই, একবার ছেলের দিকে। নিজের কথা যতটা না ভাবি, তার চেয়ে বেশি ভাবি ছেলের কথা। ও সুস্থ হবে তো? হলে কবে? কবে আবার ফিরবে বিশ্ববিদ্যালয়ে? মেয়েটা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। মাথাব্যথায় তিন দিন পড়তে পারেনি। সে কারণেই তাড়াহুড়ো করে ঢাকায় আসা। স্কুলে খুব চাপ। দুই বেলা শিক্ষার্থীদের কোচিং করাই আমরা। আমার সপ্তাহে চারটা ক্লাস। সহকর্মীদের বলে এসেছিলাম, আমার ক্লাসগুলো ওঁরা যেন নিয়ে নেন। আমি ফিরে গিয়ে পুষিয়ে দেব। আর এখন...।
যখনই চোখ বন্ধ করি, শুধু মনে হয় দাউ দাউ করে সব জ্বলছে। ওই দিন সন্ধ্যায় মিরপুরে যাওয়ার পথে আমাদের সিএনজিটা যানজটে আটকা পড়েছিল শেওড়াপাড়ায়। হঠাৎ দেখি একদল ছেলে—কতই বা বয়স হবে—১৭/১৮; সিএনজিতে ওরা যেন কী ঢালতে শুরু করল। আমি ছেলেকে শুধু জিজ্ঞেস করেছি, সিএনজিতে পানি ঢালছে কেন? আমার মুখের কথা শেষ হতে না-হতেই দাউ দাউ করে জ্বলে উঠল পুরো সিএনজি। এ কেমন বর্বরতা? মানুষ দেখেও ওদের সিএনজিতে আগুন ধরাতে বুক কাঁপেনি? দুই দল সমঝোতায় আসবে না, আমাদেরও ভোগান্তির শেষ হবে না। আমাদের মতো মানুষের জন্য লাখ লাখ টাকা খরচ করে চিকিৎসা করা কঠিন।
অনুলিখন: শেখ সাবিহা আলম

No comments

Powered by Blogger.