ইবিতে অচলাবস্থা-শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করুন

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় দুই মাসেও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এমন পরিস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা থেকে স্বাভাবিক কার্যক্রম পর্যন্ত বন্ধ হয়ে আছে। অচলাবস্থা না কাটলে আগামী ১৭ নভেম্বর অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তিচ্ছুদের পরীক্ষাসহ গোটা ভর্তি কার্যক্রম হুমকির মধ্যে পড়বে।


এমনতিইে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাঝেমধ্যেই নানা অবাঞ্ছিত ঘটনার কারণে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার নজির রয়েছে। তার ওপর এবার কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগকে কেন্দ্র করে কর্তৃপক্ষের কথিত দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ফাঁস হয়ে পড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে অসন্তোষ দেখা দেয়। শিক্ষার্থী, এমনকি শিক্ষক সমাজও এ ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব গ্রহণ করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে কর্তৃপক্ষ ঈদুল আজহার ছুটি ৮ দিন এগিয়ে এনে ১৪ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে। তবে আগে থেকেই ওই ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় অশান্ত হয়ে উঠলে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এভাবে কর্তৃপক্ষের অযোগ্যতা এবং কথিত দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম থেকে প্রশাসনিক কার্যক্রম পর্যন্ত বন্ধ হওয়ার ঘটনা নিশ্চয়ই শিক্ষাঙ্গনে সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখায় সহায়ক নয়। এভাবে একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয় অশান্ত হতে থাকলে দেশে উচ্চশিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে আরও অধিক হারে শিক্ষার্থীরা প্রতিবেশী দেশসহ বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাতে বাধ্য হবে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য। আমরা অবিলম্বে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভূত অচলাবস্থার অবসান চাই। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী উদ্যোগ নিতে পারেন। কারণ তার ওপর দেশের বিদ্যানুরাগীদের আস্থা রয়েছে। আর সরকারের প্রতি আহ্বান, দয়া করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিজেদের পছন্দের লোক নিয়োগ দেওয়ার সময় যোগ্যতা ও দক্ষতা নামক মাপকাঠিটি বিস্মৃত হবেন না। একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় দুই মাস ধরে অচল হয়ে থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হলো, তার কোনো প্রতিকার কি আছে? বড় কথা, এভাবে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হওয়ার কারণে শিক্ষার্থী-শিক্ষক সম্পর্ক, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষকদের সম্পর্ক এবং ছাত্র সংগঠনগুলোর পারস্পরিক সম্পর্কে নতুন বিন্যাস দেখা দেয়, যেটা অধিকাংশ সময় শিক্ষার পরিবেশের ওপর স্থায়ী ক্ষতিকর প্রভাব রেখে যায়। এ অশুভ চক্র থেকে আমাদের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বের করে আনতেই হবে।
 

No comments

Powered by Blogger.