শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার কমছেঃ জেএসসি কেন্দ্র পরিদর্শনে শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, ‘‘জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় অনেক বেশি উদ্যোমী ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে গড়ে উঠছে। একটি জাতীয় সনদ পেয়ে তারা অনেক বেশি আনন্দিত হয়।’’

শিক্ষামন্ত্রী  রোববার ঢাকার ধানমন্ডি গভ: বয়েজ হাইস্কুল কেন্দ্রে জেএসসি কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া অনেকটা কমে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জেএসসি-জেডিসি এবং প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা শুরুর পূর্বে এসব বিষয়ে কোন সুনির্দিষ্ট হিসাব ছিল না। এখন নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে ঝরে পড়ার হার কমছে।
মন্ত্রী জানান, ২০১০ সালে পরীক্ষার্থী সংখ্যা ছিল ১৪ লাখ ৯২ হাজার ৮০২ জন। এই তিন বছরে পরীক্ষার্থী সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৪ লাখ ১৫ হাজার ৫৬৩ জন। সরকারের এনরোলমেন্ট বৃদ্ধির উদ্দেশ্য অনেকখানি সফল হয়েছে।

তিনি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা শুরু হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।

এ সময় শিক্ষাসচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নোমার উর রশীদ, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ফাহিমা খাতুন, মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুল নূর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সারাদেশে রোববার সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়েছে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা। এবার জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় ১৯ লাখ ৮ হাজার ৩৬৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। দেশের দুই হাজার ২৫০টি কেন্দ্রে ২৭ হাজার ৬৪২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। পরীক্ষা শেষ হবে ১৫ নভেম্বর।

গত বছরের চেয়ে এবার এ পরীক্ষায় ৪৭ হাজার ২৫২ জন শিক্ষার্থী বেড়েছে। গত বছর জেএসসি ও জেডিসিতে ১৮ লাখ ৬১ হাজার ১১৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। এবার মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১০ লাখ ১১ হাজার ৫০৩ জন ছাত্রী এবং ৮ লাখ ৯৬ হাজার ৮৬২ জন ছাত্র। ছাত্রদের চেয়ে এবার এক লাখ ১৪ হাজার ৬৪১ জন বেশি ছাত্রী পরীক্ষা দিচ্ছে।

এবার জেএসসিতে ১৫ লাখ ৫৩ হাজার ৫৭৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এরমধ্যে ৮ লাখ ২৬ হাজার ৮২ জন ছাত্রী এবং ৭ লাখ ২৭ হাজার ৪৯৩ জন ছাত্র। আর জেডিসিতে ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৭৯০ শিক্ষার্থীর মধ্যে এক লাখ ৮৫ হাজার ৪২১ জান ছাত্রী এবং এক লাখ ৬৯ হাজার ৩৬৯ জন ছাত্র।
এবার জেএসজিতে এক লাখ ৪৯ হাজার ৩৯২ জন এবং জেডিসিতে ২৩ হাজার ২৯২ জন অনিয়মিত পরীক্ষার্থী রয়েছে। এছাড়া জেএসসিতে এক লাখ ৩৬ হাজার ৭১১ জন এবং জেডিসিতে ২০ হাজার ৩০১ জন বিশেষ পরীক্ষার্থী (এক থেকে তিন বিষয়ে অকৃতকার্য) অংশ নিচ্ছে।

বিদেশের সাতটি কেন্দ্রের মধ্যে জেদ্দায় ১০৬ জন, রিয়াদে ১০৯, ত্রিপলীতে আট, দোহায় ৭২, আবুধাবীতে ৩৯, দুবাইয়ে ১৮ এবং বাহরাইনে ৩৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে।

বাংলা ২য় পত্র, ইংরেজি ১ম ও ২য় পত্র এবং গণিত ছাড়া সব বিষয়ের পরীক্ষা সৃজনশীল প্রশ্নে হবে। শ্রবণ প্রতিবন্ধীসহ অন্যান্য প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় পাবে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাড়াও অন্যান্য প্রতিবন্ধীর (যাদের হাত নেই বা হাত দিয়ে লিখতে পারে না) জন্য শ্রুতি লেখকের সুযোগ রাখা হয়েছে।

আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই ফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।
উলে¬খ্য, ২০১০ সাল থেকে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে সারাদেশে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা শুরুহয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.