যুক্তরাষ্ট্রে প্রবল বৃষ্টি, বিদ্যু ৎ বিপর্যয় দুই অঙ্গরাজ্যে জরুরি অবস্থা

হারিকেন আইরিনের পর এবার ঝোড়ো হাওয়াসহ প্রবল বৃষ্টিপাত এবং বিদ্যু ৎ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিপাতে শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যার আশঙ্কায় প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার লোককে তাদের বাড়িঘর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নিউইয়র্ক ও পেনসিলভানিয়ায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার থেকে ক্যালিফোর্নিয়া, অ্যারিজোনা ও নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যে বিদ্যু ৎ নেই। একটি পারমাণবিক বিদ্যু ৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিটে আকস্মিকভাবে উ ৎ পাদন বন্ধ হয়ে গেলে ওই তিন অঙ্গরাজ্যের ৫০ লাখ গ্রাহক বিদ্যু ৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে জনজীবনে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
হারিকেন আইরিনের ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা (এনডব্লিউএস) নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, পেনসিলভানিয়া, কানেকটিকাট, মেরিল্যান্ড ও ভার্জিনিয়ার মতো অঙ্গরাজ্যগুলোতে আকস্মিক বন্যার সতর্কতা জারি করেছে। এরই মধ্যে এসব অঙ্গরাজ্যের বিভিন্ন শহর প্লাবিত হয়েছে। মহাসড়কগুলো ডুবে গিয়ে যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
পেনসিলভানিয়ার সাসকুয়েহান্না নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর উইকস-বারে থেকেই ৬৫ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য শহর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে আরও ৩৫ হাজার দুর্গত মানুষকে। রাজধানী ওয়াশিংটন থেকেও বন্যার খবর পাওয়া গেছে।
পেনসিলভানিয়ার জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র রুথ মিলার জানিয়েছেন, এখানে প্রবল বর্ষণ ও ঝোড়ো হাওয়ায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে ভার্জিনিয়ায় একটি শিশুসহ দুজন নদীর স্রোতে ভেসে গেছে বলে জানা গেছে।
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নিউইয়র্ক ও পেনসিলভানিয়ায় গতকাল শুক্রবার সকালে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট জীবন, সম্পদ, জনগণের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে দুর্যোগে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে বিদ্যু ৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া, অ্যারিজোনা ও নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্য। সবচেয়ে নাজুক দশা সৃষ্টি হয় স্যান ডিয়াগো শহরে। এখানকার সব বিমান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তবে কী কারণে এ বিদ্যু ৎ বিপর্যয় ঘটল, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আর এক দিন পরেই টুইন টাওয়ার হামলার এক দশক পূর্ণ হবে। কাজেই ওই দিনটি সামনে রেখে এই বিদ্যু ৎ বিপর্যয়ের সঙ্গে কোনো জঙ্গি ত ৎ পরতা জড়িত কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্যান ডিয়াগো গ্যাস ও বিদ্যু ৎ (এসডিজিই) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অনিবার্য কারণবশত অ্যারিজোনা ও ক্যালিফোর্নিয়ার মধ্যকার বিদ্যু ৎ সরবরাহ ব্যবস্থা বিকল হয়ে পড়েছে। এতে করে পার্শ্ববর্তী নিউ মেক্সিকোতেও বিদ্যু ৎ -সংকট দেখা দিয়েছে।
গতকাল শুক্রবারও ক্যালিফোর্নিয়া, অ্যারিজোনা ও নিউ মেক্সিকোর ১৪ লাখ মানুষ বিদ্যু ৎ হীন ছিল। সরবরাহ স্বাভাবিক হতে আরও দু-এক দিন লাগবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.