মুক্তিযুদ্ধ- মুজিব বললেনঃ তোমাদের এখনই ঢাকা ত্যাগ করা উচিত by সোহরাব হাসান

কাত্তরের মার্চ। ঢাকাসহ সারা দেশে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন। পাকিস্তানি প্রশাসন পুরোপুরি অচল। সবকিছু চলছে আওয়ামী লীগের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে। পিপিপির নেতা ভুট্টো জানিয়ে দিয়েছেন, যাঁরা ঢাকায় যাবে তাঁদের পা ভেঙে দেওয়া হবে। শেষ ফেব্রুয়ারিতে কয়েকজন সাংসদ এসে ফিরেও গেছেন। এরই মধ্যে একজন পাকিস্তানি নেতা শেখ মুজিবকে টেলেক্স পাঠিয়ে জানতে চাইলেন, ‘তাঁর ঢাকায় আসার প্রয়োজন বোধ করেন কি না।’
তখন পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে প্রায় সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। টেলেক্সটি তিনি পাঠিয়েছিলেন বার্তা সংস্থা পিপিপিআইয়ের মালিক মোয়াজ্জেম আলীর মাধ্যমে। পরদিনই বাঙালি নেতা জবাব দিলেন, ‘তিনি যদি ঢাকায় এসে তাঁর আতিথ্য গ্রহণ করেন, তাহলে খুশি হবেন।’ এই পাকিস্তানি নেতা হলেন গাউস বক্স বেজেঞ্জো। বামপন্থী ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির প্রাদেশিক সাধারণ সম্পাদক ও বেলুচিস্তান থেকে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদ সদস্য।
তার আগেই, ৬ মার্চ ইয়াহিয়া খান স্থগিত হয়ে যাওয়া জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ২৫ মার্চ হবে বলে ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে তিনি হুমকি দেন, লাখ লাখ মানুষের কষ্টার্জিত মাতৃভূমিকে কতিপয় ব্যক্তির হাতে ধ্বংস হতে দেবেন না এবং পাকিস্তানের অখণ্ডতা, সংহতি ও নিরাপত্তা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনী সবকিছু করবে।
সাতই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে নির্ধারিত শেখ মুজিবের জনসভার আগে ওই ঘোষণার মাধ্যমে তিনি যে বার্তাটি দিতে চেয়েছেন তা হলো, শেখ মুজিব যেন একতরফা স্বাধীনতা ঘোষণা না দেন। যতই দিন যাচ্ছিল ততই পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়ছিল। এ অবস্থায় ইয়াহিয়া খান শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করতে চাইলেও তিনি ছিলেন অনেকটাই অনাগ্রহী।
এ সময় পাকিস্তানের কয়েকজন রাজনীতিক গাউস বক্স বেজেঞ্জোকে ঢাকায় যাওয়ার অনুরোধ জানান। উদ্দেশ্য, ইয়াহিয়ার সঙ্গে বৈঠকে শেখ মুজিবকে রাজি করানো। ১৯৬৪ সালে সম্মিলিত বিরোধী দলের প্রার্থী ফাতেমা জিন্নাহর নির্বাচনের সময় তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা হয়। বেজেঞ্জো ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানের সেই ব্যতিক্রমী রাজনীতিকদের একজন, যাঁরা শেখ মুজিবের স্বায়ত্তশাসনের দাবিকে সমর্থন করতেন।
গাউস বক্স বেজেঞ্জো এসব তথ্য জানিয়েছেন তাঁর In Search of Solution নামের জীবনী গ্রন্থে। এ বইয়ে তিনি বেলুচিস্তানের জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম, পাকিস্তান আন্দোলন, দেশ বিভাগ, সামরিক শাসন এবং পূর্ব-পশ্চিমের বৈষম্যের পাশাপাশি বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পটভূমি ব্যাখ্যা করেন।
বেজেঞ্জো লিখেছেন, ‘খোলাখুলি বলতে কি আমি আশাবাদী ছিলাম না। পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি ‘পয়েন্ট অব নো রিটার্নে’ চলে যাচ্ছিল। শেখ মুজিব আলোচনার বিরোধী ছিলেন না। তবে পরিস্থিতি নানা কারণেই জটিল রূপ নিচ্ছিল। পাঞ্জাবের প্রথাগত ক্ষমতাধরেরা সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের চেয়ে তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়াকেই শ্রেয় মনে করতেন। তবে চূড়ান্ত বিচ্ছেদের আগে তাঁরা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস দিয়ে বাঙালিদের পদানত করতে চেয়েছিলেন। এ ছাড়া সেখানে অবস্থিত পশ্চিমা শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীরা শোষণ চালিয়ে যেতে আগ্রহী ছিলেন। তাঁরা মনে করতেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদীদের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া হবে তাঁদের জন্য বিপজ্জনক। এমনকি পাকিস্তানের সজ্জন ও যুক্তিবাদী রাজনীতিকেরাও বলাবলি করছিলেন, বাঙালিদের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিকল্প নেই।
বেজেঞ্জো আরও লিখেছেন, ‘পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের এই ধ্যানধারণা সম্পর্কে অবহিত ছিলাম এবং বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছি। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের আগে আমি ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে দেখা করে বেলুচিস্তানের নির্বাচন নিয়ে কথা বলি। আলোচনা প্রসঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানের বিষয়টিও আসে। জেনারেল আমাকে বললেন, ‘আগে হোক বা পরে হোক, পূর্ব পাকিস্তান আলাদা হয়ে যাবে। যদি তা-ই হয়, তাহলে আমরা কেন আরও দুই বা তিন বছর আমাদের রক্ত তাদের শোষণ করতে দেব?’
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের মুখ থেকে এ কথা শুনে আমি দুঃখ পেলাম। কে কার রক্ত শোষণ করছে, সারা বিশ্ব তা জানে।’
আগের বছর ইয়াহিয়া খানের এই বিপজ্জনক মন্তব্য শুনে ন্যাপ নেতা মনস্থির করে ফেলেন এবং ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তান সফরের ব্যাপারে অনাগ্রহী ছিলেন। বন্ধু ও রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের অনুরোধের জবাবে তিনি বললেন, ‘তোমরা জানো, পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের স্বাভাবিক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এই সমস্যাসংকুল দিনগুলোতে শেখ মুজিবের মন ও হূদয়ের অবস্থা কী, তা-ও আমি জানি না। এ মুহূর্তে শেখ মুজিব কেবল একজন রাজনৈতিক নেতা নন, বাংলার জনপ্রিয়তম জাতীয় বীর। যদি তোমরা বিষয়টি এভাবে চিন্তা করো, তাহলে আমি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করব এবং ঢাকায় যাওয়ার সুযোগ নেব।’
এরপর বেজেঞ্জো ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিলেন। যেদিন তিনি করাচি থেকে ঢাকায় আসবেন, সেদিনই লন্ডন থেকে ন্যাপ-প্রধান ওয়ালি খান করাচিতে এসে পৌঁছান। বন্ধু ও সহযোগীরা তাঁকেও ঢাকায় যাওয়ার অনুরোধ করলে তিনি রাজি হন। শেখ মুজিবের সঙ্গে আলোচনা করতে ১৩ মার্চ ঢাকায় পৌঁছান ন্যাপের দুই নেতা। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি সংবাদ সম্পাদক আহমদুল কবির ও লায়লা কবিরের বাসায় যান। সেখান থেকে বেজেঞ্জো শেখ মুজিবকে টেলিফোন করে জানান, ‘ওয়ালি খানও সঙ্গে এসেছেন।’ এ কথা শুনে তিনি সোল্লাসে বলেন, ‘তোমরা দুজনই আমার সঙ্গে থাকবে। তোমরা আমার অতিথি।’
পরদিন নির্ধারিত সময়ে ওয়ালি খান ও বেজেঞ্জো শেখ মুজিবের বাসায় গিয়ে পৌঁছালে তিনি উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। আলোচনার শুরুতেই বেজেঞ্জো বলেন, ‘আশা করি, তুমি খোলাখুলি তোমার পরিকল্পনার কথা জানাবে। পাকিস্তানে যারা তোমার রাজনৈতিক অবস্থানকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে, আমরা তাদেরই প্রতিনিধি। তুমি নির্বাচনে জয়ী হয়েছ এবং তোমার হাতেই ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া উচিত। কিন্তু তুমি যদি একতরফা স্বাধীনতার ঘোষণা দাও, তাহলে ভাবতে পারো আমাদের কী সমস্যায় পড়তে হবে?’
এ কথা শুনে শেখ মুজিব অত্যন্ত আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তাঁর চোখে পানি আসে এবং দুই সম্মানিত অতিথিকে জিজ্ঞেস করেন, ‘কে কাকে পাকিস্তান না ভাঙার কথা বলছে? তোমরা তো কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলে। তোমরা আমাকে বলো, কে খাঁটি মুসলিম লীগার এবং কারা পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় ত্যাগ স্বীকার করেছে?’
ওয়ালি খান তাঁর স্বভাবসুলভ কৌতুক মেশানো ভঙ্গিতে মুজিবকে বললেন, ‘আমরা তখন তোমাকে বলেছিলাম, ভারত ভেঙো না। তুমি বলেছিলে, পাকিস্তান কায়েম না করে বিশ্রাম নেব না। তোমরা পাকিস্তান কায়েম করেছ। এখন আমরা করজোড়ে তোমার কাছে প্রার্থনা করছি, পাকিস্তান ভেঙো না। কিন্তু তুমি বলছ, পাকিস্তান ভেঙে ফেলবে। তোমরা মুসলিম লীগাররা বিশেষ ধরনের প্রাণী।’
বেজেঞ্জো লিখেছেন, ‘শেষমেশ আমরা আসল বিষয়ে এলাম। শেখ সাহেবকে বললাম, ‘পরিস্থিতি খুবই জটিল। যদি তিনি অনড় থাকেন, তাহলে দেশ ভেঙে যাবে। আমরা বললাম, তাঁর অবশ্যই ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে দেখা করা উচিত এবং তাঁর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের একটি পথ বের করতে হবে। নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর এটি তাঁর এবং তাঁর দলের অধিকার।’
ইয়াহিয়ার আশপাশে থাকা ব্যক্তিদের সম্পর্কে বেজেঞ্জো বললেন, কীভাবে সংকট মোকাবিলা করতে হয়, তারা তা জানেন না।
শেখ সাহেবের উত্তর ছিল, ‘আমি তোমাদের বলছি, তারা (ইয়াহিয়া ও তার সহযোগীরা) আমার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন না; এমনকি তাতে যদি পাকিস্তান ভেঙেও যায়। পাঞ্জাব (সেখানকার শাসকচক্র) আমাকে ক্ষমতায় আসার সুযোগ দেবে না।’
বেজেঞ্জো আরও লিখেছেন, ‘আমরা দেখছি, শেখ মুজিব ভয়ানক মনোবেদনায় ভুগছেন। ভারাক্রান্ত স্বরে তিনি বললেন, ‘আমি চেষ্টা করব, কিন্তু এক শর্তে, আলোচনা চলাকালে তোমরা দুজনই ঢাকায় থাকবে। আরেকটি বিষয়, তোমরা যখন আমার ঘর থেকে বের হবে, আমিও তোমাদের সঙ্গে আসব। কিন্তু প্রকাশ্যে বৈঠকের কথা বলব না।’
তিনি যখন ঘরের বাইরে এলেন, তখন স্থানীয় ও বিদেশি সাংবাদিকেরা তাঁকে ঘিরে ধরলেন। তাঁর হাজার হাজার সমর্থক আকাশ বিদীর্ণ করে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে লাগলেন।
শেখ সাহেব অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের বললেন, ‘তিনি ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন। সাংবাদিকেরা জানতে চাইলেন, কোথায় বৈঠক হবে? শেখ মুজিব বললেন, তিনি দেশের প্রেসিডেন্ট। তিনি যেখানে চাইবেন, সেখানেই বৈঠক হবে।
এরপর বেজেঞ্জো লিখেছেন, ‘আমরা কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।’
১৫ মার্চ ইয়াহিয়া খান ঢাকায় এলেন। তিনি ওয়ালি খান ও বেজেঞ্জোকে গভর্নর হাউসে ডাকলেন। আমরা তাঁকে স্পষ্ট জানিয়ে দিলাম, ‘শেখ মুজিব বিচ্ছিন্ন হওয়ার কথা ভাবছেন না। তাঁর দাবি হচ্ছে, তিনি জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনের জয়ী হয়েছেন, গণতান্ত্রিক রীতি অনুযায়ী তাঁর কাছেই ক্ষমতা হস্তান্তর করা উচিত।’ আমরা ইয়াহিয়াকে বললাম, ‘আমাদের ধারণা, শেখ মুজিবের অবস্থান অত্যন্ত ন্যায়সংগত। তাঁর সঙ্গে কথা বলে দেখুন, আপনিও সন্তুষ্ট হবেন।’
শেখ মুজিবের মতো ইয়াহিয়া খানও আমাদের বললেন, ‘আলোচনার সময় তোমরা ঢাকায় থেকো।’
বেজেঞ্জোর বিবরণীতে আমরা পাই, ‘১৬ মার্চ ইয়াহিয়া-মুজিব বৈঠক শুরু হলো। শেখ মুজিব প্রতিদিনই বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে আমাদের অবহিত করতেন। প্রথম কয়েক দিনের বৈঠকে অগ্রগতি হচ্ছিল।’
এরপর ইয়াহিয়া খান পশ্চিম পাকিস্তানি নেতাদের ঢাকায় আসতে বললেন, যাঁদের মধ্যে ছিলেন মিয়া মমতাজ দৌলতানা, সরদার শওকত হায়াত, মাওলানা নুরানী, মুফতি মাহমুদ ও কাইউম খান। এ ছাড়া পিপিপির নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টোও তাঁর দলের কয়েকজন নেতাকে নিয়ে ঢাকায় এলেন। ইয়াহিয়া খান অর্থসচিব এম এম আহমদসহ কয়েকজনকে তলব করলেন।
শেখ মুজিব যখন জানতে পারলেন, ভুট্টো ও এম এম আহমদ আলোচনায় অন্তর্ঘাত করছেন, তখন তিনি এর ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করলেন।
ভুট্টো ঢাকায় এসে পশ্চিম পাকিস্তানি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে অভিন্ন অবস্থান নেওয়ার কথা বললে বেজেঞ্জো ও ওয়ালি খান তার বিরোধিতা করেন। তিনি দেখাতে চেয়েছিলেন, পশ্চিম পাকিস্তানের সব নেতা তাঁর সঙ্গে আছেন। এতে ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে তাঁর দর-কষাকষিতে সুবিধা হবে। তিনি ইয়াহিয়া খানকে শেখ মুজিব ও তাঁর দলের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগেও প্ররোচিত করেছেন—মন্তব্য ন্যাপ নেতার।
তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, ‘আলোচনার শুরুতে ইয়াহিয়া বলেছিলেন, লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডিনেন্স বা এলএফওর শর্ত পূরণ হলে ক্ষমতা হস্তান্তরে রাজি আছেন। সেই প্রেক্ষাপটে শেখ মুজিব প্রস্তাব দেন, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ সদস্যরা আলাদা বসে খসড়া সংবিধান প্রণয়ন করবেন। পরে দুই পরিষদের সদস্যরা এক হয়ে সংবিধান প্রস্তুত করবেন।
বেজেঞ্জো পাঁচ প্রদেশের জন্য পাঁচটি সাংবিধানিক কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন। ইয়াহিয়া খান কিছুটা নমনীয় ছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে বেজেঞ্জো আবারও শেখ মুজিবের সঙ্গে কথা বললেন। শেখ মুজিব তাঁর সন্দেহের কথা বললেন, ‘জেনারেল অস্থিরমতি, কখন কী করবেন বলা কঠিন।
এরপর তিনি সরাসরি জানিয়ে দিলেন, ‘আমি আর এক বা দুই পরিষদের অধিবেশন ডাকতে বলব না। দ্রুত ক্ষমতা হস্তান্তর ও সামরিক আইন প্রত্যাহারের দাবি জানাব। এ দুটিই মূল দাবি।’
দুই ন্যাপ নেতা আবার আবার গেলেন ইয়াহিয়া খানের কাছে। শেখ মুজিবের মনোভাবের কথা তাঁকে জানিয়ে বললেন, কারিগরি বিষয়ে জেদ ধরে পাকিস্তানকে গভীর অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া ঠিক হবে না। ইয়াহিয়ার জবাব ছিল, ‘যদি তোমাদের বন্ধু শেখ মুজিব কথা না শোনেন, তাহলে আমার সেনাবাহিনী জানে, কী করে কথা শোনাতে হয়।’
বেজেঞ্জো লিখেছেন, ‘তাঁর মনে কী আছে বুঝতে অসুবিধা হলো না।’
আমি জিজ্ঞেস করি, ‘মি. প্রেসিডেন্ট, আপনি কি শক্তি দিয়ে এই জটিল সমস্যা সমাধানের কথা ভাবছেন? সামরিক শক্তি প্রয়োগে কি এর সমাধান হবে?’
২৪ মার্চ বেজেঞ্জো ও ওয়ালি খান শেখ মুজিবের সঙ্গে দেখা করলে তিনি বিপদের চূড়ান্ত বার্তাটিই জানিয়ে দেন, ‘আমি মনে করি, তোমাদের দুজনের ঢাকা ত্যাগ করাই ভালো। সেনাবাহিনী আগামী দুই দিনের মধ্যে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তোমাদের উপস্থিতি কোনো সুফল দেবে না।’
এরপর বিমূঢ় ও নির্বাক দুই পকিস্তানি নেতা শেখ মুজিবের বাড়ি ত্যাগ করলেন।
======================
আলোচনা- ডিজিটাল-প্র্রযুক্তিই মানুষকে আরও বেশি মানবিক করে!  খবর- সংরক্ষিত বনে শুঁটকিপল্লি  ট্রেনের ওপর ট্রেন  সংকেত অমান্য, দুই ট্রেনের সংঘর্ষ  আলোচনা- রবীন্দ্রনাথের কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন ভাবনা  আলোচনা- 'ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় ঠাঁয় নেই দরিদ্রর উচ্চ শিক্ষা  বিশেষ আলোচনা- ফিরে দেখা গঙ্গা চুক্তি  আলোচনা- 'সংসদ বর্জনের অপসংস্কৃতি বন্ধ হোক'  আলোচনা- 'উইকিলিকসে বাংলাদেশ, তারপর?  আলোচনা- 'ওয়াংগালাঃ গারোদের জাতীয় উৎসব'  স্মরণ- 'বাঘা যতীনঃ অগ্নিযুগের মহানায়ক'  খবর, কালের কণ্ঠের- আগেই ধ্বংস মহাস্থানগঃ হাইকোর্টের নির্দেশে কাজ বন্ধ  কেয়ার্নের সঙ্গে স্বার্থবিরোধী চুক্তির পেছনেও জ্বালানি উপদেষ্টা  উইকিলিকস জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের আত্মসমর্পণ  সবুজ মাঠ পেরিয়ে  আলোচনা- 'আরো অনুদানের টাকা সরিয়েছিলেন ইউনূস'  আলোচনা- 'একটি 'উজ্জ্বল ভাবমূর্তির' এভারেস্ট থেকে পতন  গল্পালোচনা- 'আসি আসি করে আশিতে আসবে!'  রাষ্ট্র ও রাজনীতিঃ সবুজ মাঠ পেরিয়ে  স্মরণ- 'রবীন্দ্রনাথ—সার্ধশত জন্মবার্ষিকীতে'  স্মরণ- 'জননেতা দেওয়ান ফরিদ গাজী'  আলোচনা- 'প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফর ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন পর্যায়'  আলোচনা- 'কর্মপরিবেশঃ স্বর্গে তৈরি'  গল্পালোচনা- ‘দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া...’  আন্তর্জাতিক- উইকিলিকসঃ হাটে হাঁড়ি ভাঙা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ  গল্পসল্প- ওরা ধান কুড়ানির দল  শিক্ষা- আদিবাসী পাহাড়ে বিশ্ববিদ্যালয় চাই  জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের অর্থের মূল উৎস সৌদি আরব  রাজনৈতিক আলোচনা- এমন বন্ধু থাকলে...  শিল্প-অর্থনীতি শেয়ারবাজারের সুন্দরী প্রতিযোগিতা-তত্ত্ব  সাক্ষাৎকার- খাদ্যনিরাপত্তার জন্য বিকল্প উপায় খুঁজতা হবে  খবর, প্রথম আলোর-  দলীয় স্বার্থ বড় করে দেখবেন না  মার্কিন কূটনীতিকদের গোপন তারবার্তাঃ পাকিস্তানে জঙ্গি নির্মূলে ১০-১৫ বছর লাগবে  অধ্যাপক ইউনূসের অর্থ স্থানান্তর : গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যাখ্যা 


দৈনিক প্রথম আলো এর সৌজন্যে
লেখকঃ সোহরাব হাসান
কবি, সাংবাদিক।


এই আলোচনা'টি পড়া হয়েছে...
free counters

No comments

Powered by Blogger.