চট্টগ্রামেও কি স্পিন-উৎসব!

জিম্বাবুয়ের জন্য চট্টগ্রামের স্মৃতি খুব একটা সুখকর নয়। ২০০৫ সালে তাদের হারিয়ে বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছিল এই শহরে। সবচেয়ে দগদগে দুঃসহ স্মৃতি যেটা এখনো হয়তো তাদের পুড়িয়ে মারে, সেটি গত সফরের। ২০০৯ সালের ৩ নভেম্বর সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের অবস্থাটা হয়েছিল সংস্কারকাজ চলায় বর্তমানে বিধ্বস্ত জহুর আহম্মদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের মতোই।
মাত্র ৪৪ রানে অলআউট। দর্শক মাঠে আসতে না আসতেই ম্যাচ শেষ। আর এই ধ্বংসযজ্ঞের মূল নেতৃত্বে ছিলেন স্পিনাররা। সেই ধারাবাহিকতায় এবারও চলছে রাজ্জাকদের উৎসব। সেই শঙ্কা থেকেই কিনা কাল মাঠে ঢুকেই উতসেয়া চলে গেলেন উইকেটের কাছে। কথা বললেন কিউরেটর জাহিদ রেজার সঙ্গে। অনেক খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলেন দুঃসহ দিনের কথা মনে করিয়ে দেওয়া সেই তিন নম্বর উইকেটটি।
এবারও এই উইকেটে হবে সিরিজের শেষ ম্যাচ। তার আগে শুক্রবার চতুর্থ ম্যাচটির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে পাঁচ নম্বর উইকেটটি। তবে জিম্বাবুইয়ানদের আশার বাণী শুনিয়েছেন কিউরেটর, ‘এবার অন্তত গতবারের মতো এত কম রান হওয়ার কোনো কারণ দেখি না। দুটো উইকেটই স্পোর্টিং। রান হবে। বোলাররাও সুবিধা পাবে, স্পিনাররা তো বটেই।’
উতসেয়া শুনে খুশি হতে পারেন। তবে আরও বেশি খুশি হবেন বাংলাদেশের স্পিনাররা। চতুর্থ ম্যাচ জিতলেই তো সিরিজ জয়। সেই আশা সঙ্গে নিয়েই কাল বিকেল পাঁচটার দিকে ‘রাজ্জাক আইলো’ চট্টগ্রামে। সঙ্গে পুরো বাংলাদেশ দল।
তিন ম্যাচে ১৩ উইকেট নেওয়া রাজ্জাকের ওপর ভর করে বাংলাদেশ সিরিজে ২-১-এ এগিয়ে আছে এখন। চট্টগ্রামেই হবে সিরিজের নিষ্পত্তি। সাকিব-রাজ্জাকদের এমন দাপটের কারণে জিম্বাবুয়ের কোচ অ্যালান বুচার সিরিজ জয়ের কথা বলতেও সাহস পাচ্ছেন না। তিনি শুধু আশায় আছেন, ‘আমরা আশা করছি, আগের ম্যাচের চেয়ে ভালো খেলব। এই লক্ষ্যে কাজ করছি। আর চট্টগ্রামের মাঠ ভিন্ন। উইকেট কিছুটা ধীরগতির হবে বলে মনে হচ্ছে।’
ইনজুরি কাটিয়ে নিয়মিত অধিনায়ক এল্টন চিগুম্বুরারও চতুর্থ ম্যাচে মাঠে নামার সম্ভাবনার কথা জানালেন কোচ, যদিও গতকাল বিকেলে জহুর আহম্মদ চৌধুরী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের যে ৮-৯ জন খেলোয়াড় অনুশীলন করতে এলেন, তাঁদের মধ্যে চিগুম্বুরা ছিলেন না।
জিম্বাবুয়ে-বাংলাদেশ শেষ দুটি ম্যাচের জন্যই বিশ্বকাপের প্রস্তুতিরত এই ভেন্যুতে তড়িঘড়ি করে ড্রেসিংরুম, প্রেসবক্স, ইলেকট্রনিক সাইট স্ক্রিন, বিদ্যুৎ লাইন ইত্যাদির কাজ শেষ করা হয়েছে। তবে আয়োজকদের মুখ সবচেয়ে উজ্জ্বল করেছে ফ্লাডলাইট ও জায়ান্ট স্ক্রিন। ফ্লাডলাইট কেলেঙ্কারির কারণে ঢাকার শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দিবারাত্রির ম্যাচটি হতে পারেনি। তাই চট্টগ্রামের দুই ম্যাচের একটি কৃত্রিম আলোতে করার চেষ্টা চলছে।
দিবারাত্রির ম্যাচ আয়োজন সম্ভব বলেই জানিয়ে দিলেন ভেন্যু চেয়ারম্যান সিরাজউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর, ‘ফ্লাডলাইটের মহড়া হয়ে গেছে গত সপ্তাহেই। প্রস্তুত জায়ান্ট স্ক্রিনও। বিদ্যুৎ লাইনও পাওয়া গেছে। তাই ডে-নাইট ম্যাচ না হওয়ার কোনো কারণ দেখি না।’ যখন এ কথা বলছেন, শেষ বিকেলে জায়ান্ট স্ক্রিনে ভেসে উঠল ‘কনগ্র্যাচুলেশন’। জিম্বাবুইয়ানরা তখন নেটে ঘাম ঝরাচ্ছেন।

No comments

Powered by Blogger.