যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়ার আশঙ্কা করছেন অ্যাসাঞ্জ

আলোচিত ওয়েবসাইট উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোপন নথি প্রকাশ করায় তাঁকে ওয়াশিংটনের হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে।
জামিনে মুক্তি পেয়ে অ্যাসাঞ্জ বর্তমানে পূর্ব লন্ডনে এক বন্ধুর বাড়িতে আছেন। জামিনে থাকা অবস্থায় ওই বাড়িতেই তাঁর থাকার নির্দেশ রয়েছে। গত শুক্রবার ওই বাড়িতে বসে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে তাঁকে হস্তান্তর করার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এ আশঙ্কা প্রবল বলেই মনে হচ্ছে।
অ্যাসাঞ্জ বলেন, ‘সবচেয়ে বড় ঝুঁকি, যে ঝুঁকিটা নিয়ে আমরা সব সময় উদ্বিগ্ন, তা হলো আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে। এই ঝুঁকি খুবই বেশি এবং দিনে দিনে তা প্রবল হচ্ছে।’
সুইডেনে দুই নারীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে অ্যাসাঞ্জকে সম্প্রতি লন্ডনে গ্রেপ্তার করা হয়। সুইডিশ কর্তৃপক্ষ তাঁকে এ অভিযোগের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে তাঁকে সুইডেনে নেওয়া যাচ্ছে না।
অ্যাসাঞ্জ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গোপন কূটনৈতিক নথি প্রকাশের ঘটনায় তাঁর সংশ্লিষ্টতা নিয়ে দেশটির একদল কৌঁসুলি গোপনে তদন্ত শুরু করেছে। মার্কিন এ তদন্তকে তিনি ‘অন্যায়’ বলে অভিহিত করেছেন।
এদিন অ্যাসাঞ্জ অনেকটা প্রসন্ন চিত্তে বলেন, লন্ডন কারাগারের যে ভবনে তাঁকে রাখা হয়েছিল, সেটি ‘অনেক উন্নত’। গত বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তি পাওয়ার আগে নয় দিন তাঁকে ওই কারাগারে রাখা হয়।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মার্কিন কৌঁসুলিরা অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। মার্কিন সেনা কর্মকর্তা ব্র্যাডলি ম্যানিংকে দিয়ে সরকারি কম্পিউটার থেকে বার্তা চুরি করে তা উইকিলিকসের কাছে হস্তান্তর করতে প্ররোচিত করার অভিযোগে এ মামলা করা হতে পারে।
অ্যাসাঞ্জ আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের গোপন কূটনৈতিক বার্তা প্রকাশ করার ঘটনায় দেশটির সরকার খুবই আক্রমণাত্মক মনোভাবের সঙ্গে তদন্ত করছে। আমাকে সে দেশে হস্তান্তর করার ভয়টা বেশি তাড়া করছে।’ তিনি বলেন, উইকিলিকস কর্তৃপক্ষ মার্কিন সেনা কর্মকর্তা ম্যানিংয়ের বৈধ তহবিলে ৫০ হাজার ডলার দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিল।
তবে এর আগে এবিসি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অ্যাসাঞ্জ বলেছিলেন, ‘গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার আগে আমি কখনো ব্র্যাডলি ম্যানিংয়ের নাম শুনিনি।’ তিনি বলেন, ‘উইকিলিকসের শুরু থেকেই এর প্রযুক্তি এমনভাবে উন্নীত করা হয়েছে, যাতে যুক্তরাষ্ট্রসংক্রান্ত তথ্য সরবরাহকারী কারও নাম বা পরিচয় আমরা যেন কখনো জানতে না পারি।’
এদিকে কংগ্রেসের গবেষকদের বরাত দিয়ে ওয়াশিংটনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুপ্তচরবৃত্তি অথবা এ সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো আইনে অ্যাসাঞ্জের বিচার করা হতে পারে।
অ্যাসাঞ্জ শুক্রবার আবারও বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে যত অভিযোগই আনা হোক না কেন, গোপন নথি প্রকাশ থেকে উইকিলিকসকে বিরত রাখা যাবে না।

No comments

Powered by Blogger.