সচিবালয় পরিস্থিতি জাগ্রত ছাত্রসমাজ মোকাবিলা করেছে

জাগ্রত ছাত্রসমাজ যারা স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে তাদের অপরিসীম ত্যাগের ভূমিকা সচিবালয় এলাকার পুরো পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। সচিবালয়ে যারা আনসারদের ছত্রছায়ায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে তাদের ষড়যন্ত্র সফল হবে না। প্রচলিত আইনেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। হামলায় আহত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহসহ আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান আইন উপদেষ্টা। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন তারা। ড. আসিফ নজরুল বলেন, আনসার সদস্যের দাবি ছিল- এখনই রাত ১০টার সময় প্রজ্ঞাপন জারি করে তাদের জাতীয়করণ করতে হবে। তারা এমন এক অসম্ভব দাবি তুলেছিল গণ্ডগোল করার জন্য। সচিবালয়ে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে পারতো।

জাগ্রত ছাত্রসমাজ যারা স্বৈরাচরের পতন ঘটিয়েছে, তাদের অপরিসীম ত্যাগের ভূমিকায় পুরো পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। যেই ছাত্ররা স্বৈরাচরের পতন ঘটিয়েছে যারা আমাদের স্বপ্ন এবং যাদের ভবিষ্যতের কাণ্ডারি হিসেবে দেখি তাদেরকে রাস্তায় ফেলে কীভাবে নির্মমভাবে মেরেছে। আপনারা তাদের যুদ্ধংদেহী মনোভাব দেখেছেন। তিনি বলেন, আমাদের ছাত্রদের ওপর, সমন্বয়কদের ওপর, বিশেষ করে হাসনাতের ওপর যে বর্বর হামলা হয়েছে তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে খোঁজ নিতে এসেছি। সাধারণ মানুষকেও গুরুতরভাবে আহত করা হয়েছে। দু’জনকে অপারেশন করার প্রয়োজন হবে। হাসনাতের অবস্থা এখন মোটামুটি ভালো আছে। আইন উপদেষ্টা বলেন, আমরা মনে করি কাল আনসার বাহিনীর ছদ্মবেশে যারা এসেছিল কোনো দাবি আদায় তাদের এজেন্ডা ছিল না। দাবি আদায় হয় আলাপ-আলোচনার মধ্যদিয়ে। তারা বারবার আলাপ-আলোচনা করে সম্মত হয়ে ফিরে গেছে এবং বারবার আমাদের ঘিরে ফেলেছে। লাঠি তাদের স্টকে ছিল- আপনারা দেখছেন তারা মারমুখীভাবে ছাত্রদের ওপর নির্যাতন করেছেন। তিনি বলেন, এর আগেও আন্দোলনের সময় যারা আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে কেউ কেউ চোখে আঘাত পেয়েছেন। এমনকি একজনের একটি চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। তাদের সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা আমাদের নেই। এ সময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকা মেডিকেলে প্রায় দুই হাজার ব্যক্তি চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। তাদের মধ্য থেকে ৮০০ জনকে ভর্তি দেয়া হয়েছিল। বর্তমানে হাসপাতালে ১০০ জন গুলিবিদ্ধ আহতসহ চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ছাড়া নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ৯ জন রয়েছেন। আইসিইউতে যারা রয়েছেন তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হাসপাতালে যারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাদের চিকিৎসা সম্পূর্ণ ফ্রি করা হবে। অনেক ওষুধ সরকারিভাবে সাপ্লাই হয় না। সেগুলোও আমরা তাদের দিয়ে চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করেছি। ঢামেক হাসপাতালে আহতরা যেন সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা পায় সেজন্য তাদের ডেডিকেটেড আলাদা ওয়ার্ড করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.