যুদ্ধবিরতিতে ফের শর্ত জুড়ে দিলেন নেতানিয়াহু, সমালোচনা মার্কিন কর্মকর্তার

মানবজমিনঃ গাজায় যুদ্ধবিরতিতে আবারও শর্ত দিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তার এই শর্তের সমালোচনা করেছেন উচ্চপদস্থ মার্কিন এক কর্মকর্তা। তিনি নেতানিয়াহুর শর্তকে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের জন্য গঠনমূলক নয় বলে উল্লেখ করেছেন। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর সাথে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এক বৈঠক করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন। বৈঠকে নেতানিয়াহু গাজায় তার সেনা বহালের শর্ত দিয়েছেন। সোমবার ব্লিঙ্কেনের সাথে যুদ্ধবিরতির বৈঠকের পর জিম্মিদের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎকালে এমন শর্তের কথা উল্লেখ করেন নেতানিয়াহু। স্থানীয় গণমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়, নেতানিয়াহুর এমন শর্তের ফলে এর আগে বেশ কয়েকবার যুদ্ধবিরতির আলোচনা পিছিয়ে যায়। কেননা যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনের প্রস্তাব হচ্ছে গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার করতে হবে।

গত দশ মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় যে নৃশংসতা চালাচ্ছে ইসরাইল তা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমে ক্রমাগত চাপ অব্যাহত রেখেছে মধ্যস্থতাকারী দেশ মিশর এবং কাতার। এর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত সোমবার নেতানিয়াহুর সাথে জেরুজালেমে তিন ঘণ্টা ব্যাপী একটি বৈঠক করেছেন। ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন নেতানিয়াহু ওয়াশিংটনের প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে হামাস এবং ইসরাইল যুদ্ধবিরতির কাছাকাছি অবস্থান করছে। কিন্তু ইসরাইলের মিডিয়ার খবর অনুযায়ী, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী পরে জিম্মি পরিবারের একটি বৈঠকে বলেছিলেন যে তিনি ব্লিঙ্কেনকে অবগত করেছেন যে এই চুক্তিতে অবশ্যই ইসরায়েলি সৈন্যদের গাজায় থাকতে দিতে হবে। নেতানিয়াহু ‘সামরিক ও রাজনৈতিক কৌশল’ হিসাবে তার এ সিদ্ধান্তের কথা বর্ণনা করেছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় মিডিয়া।

বিবিসি বলছে নেতানিয়াহুর এই মন্তব্য মার্কিন প্রশাসনকে বিরক্ত করেছে বলে মনে হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন এক কর্মকর্তা বলেছেন, আমরা ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য দেখেছি। বিশেষ করে তিনি যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে যে শর্ত দিয়েছেন, সে বিষয়ে আমরা অবগত আছি। এ বিষয়ে জনসমক্ষে মন্তব্য করতে রাজি হননি ওই কর্মকর্তা। তবে তিনি বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন এবং যুক্তরাষ্ট্র যে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তা হল গাজায় তাদের চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে একমত হতে হবে। ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, এক্ষেত্রে হামাস যদি নতুন এই প্রস্তাবে রাজি হয়, তাহলে আমরা আশা করি আলোচনা সামনের দিকে এগিয়ে নেয়া যাবে। আমি মনে করি নেতানিয়াহু যে মন্তব্য করেছেন তাতে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবনা জোরালো হবে না। কেবলমাত্র তখনই এই আলোচনা অগ্রসর হবে যখন উভয় পক্ষই আমাদের প্রস্তাবে সম্মত হবে।

No comments

Powered by Blogger.