এবার হোয়াইটওয়াশের শঙ্কা by ইশতিয়াক পারভেজ

দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ে ও পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। এমনকি ভারতকে সিরিজ হারিয়ে গোটা দেশকে বাংলাওয়াশের স্বপ্নও দেখিয়েছিল। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে উল্টো হোয়াইটওয়াশের মুখোমুখি এখন টইগাররা। টি-টোয়েন্টি সিরিজের  প্রথম ম্যাচে ৫২ রানে হেরেছে মাশরাফি বাহিনী। আজ সিরিজের শেষ ম্যাচটি হারলেই হোয়াইটওয়াশ। এতদিন প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশের পর এবার খোদ টাইগাররাই হোয়াইটওয়াশের শঙ্কার মুখোমুখি। এই শঙ্কা উড়িয়ে দিতে হলে লড়তে হবে ব্যাটে-বলে সমানে সমান। মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে দুপুর একটায় সিরিজ ও হোয়াইটওয়াশ বাঁচাতে মাঠে নামে মাশরাফি বাহিনী। তবে আজ জয় তুলে নিতে পারলে সিরিজ ড্র’র গৌরবও অর্জন করবে টাইগররা। ঘুরে দাঁড়াতে বদ্ধপরিকর জাতীয় দলের ওপেনার সৌম্য সরকার। তবে এই জন্য ব্যাটিংটাও সেরা করতে হবে বলে বিশ্বাস করেন তিনি। সৌম্য বলেন, ‘আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হলে মাঠে পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। যেটি আমরা শেষ ম্যাচে করতে পারিনি। আমাদের ব্যাটিংয়ে পরিকল্পনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সেটি আমরা মাঠে প্রয়োগ করতে পরিনি।’ অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা এখন আরও আগ্রাসী। প্রস্তুতি ম্যাচের পর প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জয়ের শেষ ছোবল দিতেই প্রস্তুত প্রোটিয়ারা। বোলিং কোচ লাঙ্গাভেল আরও আগ্রাসী বোলিংযের হুঙ্কার দিয়েছেন। তাই ম্যাচ জিতাতে ব্যাটসম্যানদেরই দায়িত্ব নিতে হবে, বিশেষ করে ওপেনারদের। এমনটাই মনে করেন এক সময়ের মারমুখো ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিতি আফতাব আহমেদ।
তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার ৫ ও ৭ রানের অবদান রেখে মাঠ ড্রেসিংরুমে ফিরেছিলেন। বলা চলে দলের ৮ ব্যাটসম্যানই বাজে শট ও তাড়াহুড়া করে বল উড়িয়ে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। পাকিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে যেমন উইকেট ছিল এবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তেমনটি হয়নি। উইকেট স্লো হওয়াতে পুরানো বলে বোলাররা বেশি সুবিধা পাবে। তাই নতুন বল থাকতে থাকতে দলের জন্য বেশ কিছু রান তুলে দিতে হবে ওপেনাদের। এই বিষয়ে আফতাব বলেন, ‘আমাদের উইকেটে এবার একটু পরিবর্তন হয়েছে দেখলাম। কিছুটা টার্ন হচ্ছে। যদি এমন উইকেট থাকে তাহলে ব্যাটসম্যানদের দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে। বিশেষ করে যারা ওপেন করতে আসবে তাদের। কারণ এমন উইকেটে নতুন বলেই রান বেশি তোলা সম্ভব নয়তো পুরাতন বলে রান তোলা কঠিন হবে। আমি মনে করি যদি উইকেট এমন থাকে তাহলে ওপেনারদেরই দায়িত্ব নিতে হবে।’ এছাড়া দলের ব্যাটসম্যানদের বাজে শটে আউটের বিষয়ে আফতাব বলেন, ‘আসলে শুরুতেই দুই ওপেনার বিদায় নেয়াতে আমাদের রানের বোঝা বড় হয়ে যাচ্ছিল। প্রতি ওভারে রান রেটও বেড়ে যাচ্ছে। সেখানে পরের সবাই চেষ্টা করেছে বড় শট খেলে রান তোলার। সেটিই ভুল হয়েছে। উইকেটে টিকে থেকে ডুপ্লেসির মতো দলকে এগিয়ে নেয়ার মতো কারও দায়িত্ব নেয়ার দরাকার ছিল।’
আজ জিততে হলে তামিম ও সৌম্যকে নয় দায়িত্ব নিতে হবে প্রথম চারজন ব্যাটসম্যানকেই। মুশফিক ও সাকিবের উপর নির্ভর করছে বিপর্যয়ে দলের হাল ধরার বিষয়টি। তাদের উপর ভরসা করে নাসির, সাব্বির ও লিটন আসবেন ফিনিশিং টাচ দিতে। বোলিংয়ে পেস বিভাগে মাশরাফি ও মুস্তাফিজ খুব খরাপ করেছে তা নয়। সাকিবের সঙ্গে স্পিন আক্রমণে আরাফাত সানিও দারুণ ভূমিকা রেখেছে। তবে সোহাগ গাজীকে দলে রেখে খুব বেশি ঝুঁকি নিতে নাও পারে দল। প্রথম টি-টোয়েন্টি ২ ওভারে ১৬ রান দিয়েও উইকেট পাননি তিনি। তাই আজ হোয়াইট বাঁচানোর লড়াইয়ে সোহাগের পরিবর্তে রুবেল হোসেন কিংবা জুবায়ের হোসেনেই দেখা যেতে পারে। তবে স্পিন সহায়ক উইকেট থাকলে রুবেল নয় অধিনায়কের পছন্দ হতে পারেন লেগ স্পিনার জুবায়েরই।
তবে দলের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিব, মুশফিক ও মাশরাফির উপরও নির্ভর করছে নিজেদের অভিজ্ঞতা দিয়ে দলকে এগিয়ে নেয়া। কারণ এই টি-টোয়েন্টি দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটারই নতুন ও অনভিজ্ঞ। তাই অভিজ্ঞদের দায়িত্বের বিষয়টিও তুলে ধরেছেন সৌম্য সরকার। তিনি বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি খেলা কিন্তু মেন্টালি অনেক টাফ। গায়ের শক্তির চেয়েও মেন্টালি ঠিক করতে হয়- কী করলে কী হবে। তো সে জন্য টি-টোয়েন্টি যত খেলা যায় ততোই ভাল। আমাদের খেলা কম হচ্ছে। টি-টোয়েন্টিটা আরেকটু বেশি খেলতে পারলে ভালো হয়। আর সাকিব ভাই আসলে টি-টোয়েন্টিতে আমাদের সবার চেয়ে বেশি অভিজ্ঞ। উনি আমাদের সাপোর্ট দেন সে অনুযায়ী কি করতে হবে । তবে ওনার উপরই যে আমরা পুরো ডিপেন্ডেবল তা কিন্তু না। হয়তো বা আগে ছিল। এখন কিন্তু সবাই পারফর্ম করে। তবে উনি ভাল করলে অনেক ভাল হয়। ওনার কাছ থেকে আমরা যারা জুনিয়র আছি, অনেক কিছু শিখছি। উনি আমাদের যেভাবে বলেন, যে প্লান দিচ্ছেন, সেটা আমরা নিতে পারলে ভবিষ্যতে ভাল হবে।’

No comments

Powered by Blogger.