গুলশান লেকে রাজউকের অভিযান, শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

মাণ্ডা খালের বেহাল অবস্থা৷ একদিকে মাটি ফেলে ভরাট
করা হচ্ছে, অন্যদিকে ফেলা হচ্ছে আবর্জনা৷ ছবিটি
দক্ষিণ মাণ্ডার শেষ মাথা থেকে তোলা l আবদুস সালাম
গুলশান লেকের শাহজাদপুরসহ আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা, বস্তি ও টংঘর উচ্ছেদ করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা প্রায় দুইটা পর্যন্ত চলে এ অভিযান।
গুলশান ৬ নম্বর সড়কের পাশে, শাহজাদপুর মরিয়ম টাওয়ারের কাছে, গুদারাঘাট এলাকায় এসব স্থাপনা গড়ে উঠেছিল। স্থাপনা ভাঙার সময় কিছু লোক বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
রাজউকের নির্বাহী প্রকৌশলী ও গুলশান লেক রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, জলাধার সংরক্ষণ আইন ও ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘনের দায়ে এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এ ছাড়া প্রথম আলোয় গত ১৫ জুন প্রকাশিত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত গুলশান লেকের কিছু স্থাপনা ভাঙার নির্দেশ দিয়েছেন। শাহজাদপুরের কিছু স্থাপনা মামলার কারণে ভাঙা যাচ্ছে না। এ ছাড়া জায়গার মালিক দাবিদার কয়েকজন লিখিতভাবে জানিয়েছেন, লেকের পাড়ের ৫০ ফুট পর্যন্ত জায়গা তাঁরা ছেড়ে দেবেন।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল ইসলাম। মহিলা পুলিশসহ অংশ নেয় চার প্লাটুন পুলিশ। অভিযানে পে-লোডার ব্যবহার করা হয়। রাজউকের নিজস্ব শ্রমিকেরা ভাঙার কাজে সহায়তা করেন।
অভিযানকালে গুলশানের শাহজাদপুর মরিয়ম টাওয়ার-২-এর কাছে লেকের ধারে টিনের প্রায় ২০টি দোকানঘর উচ্ছেদ করা হয়। ভাঙার আগে মালামাল সরানোর সুযোগ দেওয়া হলে কিছু দোকানি স্থাপনার অংশও খুলে নেন। এ ছাড়া শাহজাদপুরে বেশ কিছু বস্তিঘর ভাঙা হয়।
গুলশান-১-এর লেকের ধারে পায়ে চলার পথের টিনের স্থাপনা ও ডাইভওয়ে দখল করে থাকা টংঘরগুলোও ভাঙা হয়। গুদারাঘাটে ভাঙা হয় পাঁচটি দোকান এবং ২০টির মতো বস্তিঘর। তিনতলা একটি ভবনের কিছু অংশ ফুটপাত পর্যন্ত চলে আসায় তা ভেঙে দেয় অভিযানকারী দল। সেই অংশ ভাঙার সময় কিছু লোক বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। রাজউকের কর্মকর্তারা আইনানুগ ব্যবস্থার বিষয় উল্লেখ করলে তাঁরা সরে যান। ভবনের মালিক মো. ইসহাক বলেন, তিনি নকশা অনুমোদন করে ভবন নির্মাণ করেছেন।
উচ্ছেদ প্রসঙ্গে রাজউকের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া বলেন, ‘রাজউক এলাকায় যেকোনো স্থাপনা তৈরি করতে হলে অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু গুলশান লেকপাড়ে নতুন কোনো স্থাপনার জন্য নকশা পাস করা হয়নি। গুলশান লেক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বার্থে রাজউক আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।’

No comments

Powered by Blogger.