সাতক্ষীরা-খুলনা সড়ক: দেড় কিলোমিটারে কাদা, দুর্ভোগ

টানা এক সপ্তাহের বৃষ্টিতে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার
ভৈরবনগর এলাকার সাতক্ষীরা-খুলনা সড়কে কাদা
জমেছে। এতে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ছবিটি গত মঙ্গলবার দুপুরে তোলা l প্রথম আলো
টানা এক সপ্তাহের বৃষ্টিতে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ভৈরবনগরের দেড় কিলোমিটার সড়কে জমছে গোড়ালিসমান কাদা। বড় বড় গর্তে যানবাহন আটকে যাচ্ছে। পথচারীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে কাদা মাড়িয়ে।
সরেজমিনে গত মঙ্গলবার দেখা যায়, সড়কের ভৈরবনগর এলাকায় সাতক্ষীরা-খুলনা সড়কের ওপর গোড়ালিসমান কাদা জমে আছে। সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। মাইক্রোবাস, পিকআপ, সাইকেল, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, অ্যাম্বুলেন্স, ব্যক্তিগত গাড়িসহ বিভিন্ন যানবাহন কাদায় আটকে যাচ্ছে।
সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা যায়, সরকারের অর্থায়নে (জিওবি) সাতক্ষীরা-খুলনা সড়কের তালা উপজেলার আঠারো মাইল থেকে শহরের খুলনা রোড মোড় পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কের সংস্কারকাজের জন্য ১৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রিয়োডিক মেইনটেন্যান্স প্রোগ্রামের আওতায় সওজ খুলনা অঞ্চল, দরপত্র আহ্বান করলে ঢাকার সেগুনবাগিচার ডাইনকো লিমিটেড কাজটি পায়। চলতি বছরের গত ৪ জুনের মধ্যে সড়কের সংস্কারকাজ শেষ করার শর্তে ১৯ জানুয়ারি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি জানুয়ারি মাসে শুরু না করে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে সংস্কারকাজ শুরু করে। উপজেলার ভৈরবনগর এলাকার প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয় মার্চের শেষ দিকে। সড়কটির পুরোনো পিচ তুলে, মাটি খুঁড়ে সেখানে ইটের গুঁড়া ফেলে রাখা হয়। সেই সঙ্গে সড়কের দুই পাশের মাটিও তুলে রাখা হয়। ফলে টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে গর্ত ও কাদায় ভর্তি সড়ক দিয়ে যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডাইনকো লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক রাজন রাম মানী বলেন, টানা বৃষ্টি শুরু হওয়ায় দুই পাশে তুলে রাখা মাটি ধুয়ে সড়কের ওপর জমেছে। ফলে কাদার সৃষ্টি হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় মেয়াদ আগস্ট পর্যন্ত বাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬০-৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারবেন।
বাসচালক আবদুর রহমান বলেন, কাদার কারণে তিনি দেড় ঘণ্টার মতো সড়কে আটকে আছেন। তাঁর সামনে একটি ট্রলি ও যাত্রীবাহী বাস কাদায় আটকে থাকায় এই অবস্থা হয়েছে। বাসযাত্রী কলেজ শিক্ষার্থী আমেনা খাতুন ও নাজনীন সুলতানা জানান, তাঁরা বাস থেকে নামতেও পারছেন না। বাস থেকে নামলেই কাদার মধ্যে পড়তে হবে।
সাতক্ষীরা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রশিদ বলেন, ইতিমধ্যে সড়কের ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। একটি সড়কে কমপক্ষে ছয়টি স্তরে কাজ করতে হয়। ভৈরবনগর এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক তিন স্তরের কাজ শেষ করার পর বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বাকি আধা কিলোমিটার সড়কের চার স্তর পর্যন্ত কাজ শেষ করায় অতটা সমস্যা নেই। কয়েক দিন রোদ হলে ওই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যাবে।
মাহেন্দ্র গাড়িচালক আবদুল লতিফ ও সোলায়মান হোসেন জানান, যাত্রী নিয়ে প্রতিদিন তাঁরা সমস্যায় পড়ছেন। অনেক সময় যাত্রীরা কাদার মধ্যেই হেঁটে পার হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.