ভারত মহাসাগরকে নয়াদিল্লি ‘আঙিনা’ মনে করলে সংঘাত -চীনা সামরিক কর্মকর্তাদের হুঁশিয়ারি

ভারত মহাসাগর অঞ্চলকে স্থিতিশীল রাখতে ভারতের বিশেষ ভূমিকাকে স্বীকার করে চীন। তবে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এ অঞ্চলকে নয়াদিল্লি নিজের ‘আঙিনা’ মনে করলে তার পরিণতি হতে পারে সংঘাত। চীনের সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। খবর এনডিটিভির।
রাজধানী বেইজিংয়ে স্থানীয় ভারতীয় সাংবাদিক ও সেখানে সফরে যাওয়া একদল গণমাধ্যম প্রতিনিধির সঙ্গে ওই চীনা কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞদের এক বিরল মতবিনিময় অনুষ্ঠানে ওই মন্তব্য আসে। এমন একসময়ে কথাটা উচ্চারিত হলো, যখন দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান তৎপরতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে বেইজিংয়ের উত্তেজনা চলছে। ওই সাগরের প্রায় পুরোটাকেই নিজেদের বলে দাবি করে বেইজিং। কিন্তু এর বিভিন্ন অংশের মালিকানার দাবিদার ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম ও ব্রুনাইসহ আঞ্চলিক কয়েকটি দেশ। পাশাপাশি সাগরটিতে পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রেরও উপস্থিতি রয়েছে।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে চীনের জাতীয় প্রতিরক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজির সহযোগী অধ্যাপক ঝাও ওয়াই বলেন, ‘একটি উন্মুক্ত সাগর ও সাগরগুলোর আন্তর্জাতিক এলাকার ক্ষেত্রে “আঙিনা’ শব্দটা যথোপযুক্ত নয়।’ ভারত মহাসাগরে চীনা নৌবাহিনীর ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি নিয়ে ভারতে উদ্বেগ-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ঝাও ওয়াই বলেন, তিনি মানেন, ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলকে স্থিতিশীল করতে ভৌগোলিকভাবে ভারতের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু নয়াদিল্লি যদি মনে করে, ভারত মহাসাগর তার নিজের আঙিনা, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনীগুলো কীভাবে সেখানে মুক্তভাবে চলাচল করবে?
একবিংশ শতাব্দীর মূল আলোকপাতই হবে ভারত মহাসাগরের ওপর এবং এতে করে এই এলাকায় প্রচণ্ড সংঘাত বাধতে পারে—একজন মার্কিন গবেষকের সাম্প্রতিক এ পর্যবেক্ষণ প্রসঙ্গে ঝাও ওয়াই বলেন, তিনি মার্কিন ওই গবেষকের সঙ্গে একমত না হলেও এ ধরনের আশঙ্কাকে ‘মুছে ফেলা যাবে না’।
ভারত মহাসাগরে চীনা নৌবাহিনীর ক্রমবর্ধমান উপস্থিতির চেষ্টার বিষয়টি দেশটির সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক এক শ্বেতপত্রেও উল্লেখ করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চীনা ডুবোজাহাজগুলো শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দরের পাশাপাশি পাকিস্তানের করাচিতেও অবস্থান নিয়েছে। এতে করে ভারতে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
ভারতের গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে ওই মতবিনিময় অনুষ্ঠানে চীনা সামরিক বিশেষজ্ঞদের দলটির নেতৃত্বে ছিলেন চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জ্যেষ্ঠ কর্নেল ইয়াং ইউজুন। আর এর আয়োজক ছিল অল চায়না জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন।

No comments

Powered by Blogger.