সুষমা, বসুন্ধরা, স্মৃতি ইরানিকে নিয়ে মোদি এখন কি করবেন!

ভারতের রাজনীতিতে এখন আলোচিত তিন নারী। তারা হলেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে ও কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ বিষয়ে মুখ খোলেন নি। নানা অনিয়মে জড়িয়ে আছে এই তিন প্রভাবশালী নারীর নাম। বিশেষ করে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের (আইপিএল)-এর সাবেক প্রধান ললিত মোদির অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে গেছেন সুষমা স্বরাজ ও বসুন্ধরা রাজে। অন্য দিকে শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট জালিয়াতি করেছেন বলে অভিযোগ আছে স্মৃতি ইরানির বিরুদ্ধে। বিরোধী দল কংগ্রেস দাবি করছে ললিত মোদি যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়ে যে আবেদন করেছিলেন তাতে স্বাক্ষর করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে। একে অনৈতিক তদবির বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, ললিত মোদির আবেদনে স্বাক্ষর বা তদবির করে তার কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছিলেন সুষমা স্বরাজের স্বামী। এতদিন বসুন্ধরা রাজে এমন অভিযোগ অস্বীকার করলেও কংগ্রেস প্রমাণ হাজির করেছে। করেই তারা অবিলম্বে তার পদত্যাগ দাবি করেছে। এজন্য বসুন্ধরা শনিবার নয়া দিল্লি গিয়েছিলেন একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। এদিনই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বিজেপি প্রধান অমিত শাহ ও অর্থমন্ত্রী অরুণ জেইটলির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাদের অনুকম্পা না পেয়ে তিনি সাক্ষাৎ করতে পারেন নি। অগত্যা ওই দিনই তিনি ফিরে যান জয়পুরে। আত্মপক্ষ সমর্থনে সুষমা প্রথম থেকেই বলছেন, মানবিক কারণেই তিনি সুপারিশ করেছিলেন। তার এ যুক্তি মেনে নিয়েছে বিজেপিও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও সভাপতি অমিত শাহ এখনও সহানুভূতিশীল রয়েছেন তার ব্যাপারে। তবে তাতে মন গলে নি বিরোধীদের। ওদিকে এ তথ্য ফাঁস হওয়ার পর থেকেই বিরোধী পক্ষ কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের পদত্যাগ দাবি করে আসছে। তার বাড়ির সামনে র‌্যালি করেছে আম আদমি পার্টির যুব সংঘ। সঙ্গে যোগ হয়েছে কংগ্রেসের প্রতিবাদ। কিছুদিন আগে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ জালিয়াতির অভিযোগে জেলে ঢুকেছেন দিল্লির আইনমন্ত্রী জিতেন্দর সিং তোমার। সেই একই অভিযোগ উঠেছে  স্মৃতি ইরানির বিরুদ্ধে। বিষয়টি এখন হাইকোর্টে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে, নির্বাচনের আগে তিনি নির্বাচন কমিশনে শিক্ষাগত যোগ্যতার যে সনদ দিয়েছেন তাতে গরমিল আছে। ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি কমিশনকে জানান, ১৯৯৬ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দূরশিক্ষার মাধ্যমে বিএ পাস করেছেন তিনি। অথচ ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কমিশনকে বলেন, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ওপেন লার্নিং থেকে বি.কম পাস করেছেন। ২০১১ সালেও স্মৃতি ইরানি কমিশনকে তার বি.কম পাসের কথা জানিয়েছিলেন। অভিযোগে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ২০০৪ সালের পর ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠানসহ স্নাতক ডিগ্রির বিষয় পাল্টে গেল কিভাবে? আগামী ২৮শে আগস্ট এ মামলার প্রথম শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত। কিন্তু তার আগেই স্মৃতির পদত্যাগ দাবি করে রাজপথে নেমে পড়েছে বিরোধী পক্ষ। বিশেষ করে, এক্ষেত্রে আম আদমি পার্টি বেশ সক্রিয়। কারণ, জিতেন্দর সিং তোমারের ক্ষেত্রে দিল্লি বিজেপির ভূমিকা ছিল কট্টর। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী এই তিন নারী নেত্রীকে নিয়ে কি করবেন তা এখনও প্রকাশ করেন নি। তিনি প্রকাশ্যে বলেনও নি কোন কথা।

No comments

Powered by Blogger.