রাষ্ট্রপতি ভারত সফরে যাচ্ছেন ১৮ ডিসেম্বর

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ১৮ ডিসেম্বর চারদিনের সফরে ভারত যাচ্ছেন। অপরদিকে খুব শিগগিরই বাংলাদেশ সফরে আসছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দিয়েছেন। সদ্য সমাপ্ত সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের ফলাফল জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। এতে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুদেশের নিরাপত্তা সহযোগিতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। দুই প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস নির্মূলে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর এবং স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুসমর্থন- এ দুটি অনিষ্পন্ন বিষয়ের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী এ বিষয় দুটি তাদের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে বলে মন্তব্য করেন এবং তা নিষ্পন্ন করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানান। বৈঠকে দুই নেতা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর যার যার সামর্থ্য একত্রিত করে সামষ্টিক উন্নয়নের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করেন।
সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সহযোগিতা চলমান আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ভারত থেকে নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসেছিল। বাংলাদেশের নিরাপত্তা প্রতিনিধি দলও ভারত সফরে গেছে। বাংলাদেশের মাটিতে ভারতবিরোধী কোনো জঙ্গি সন্ত্রাসীকে আশ্রয় দেয়া হয় না এটা বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে। আমাদের আশা থাকবে, ভারতেও বাংলাদেশবিরোধী জঙ্গি সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয়া হবে না। রাষ্ট্রপতির ভারত সফরের কর্মসূচি ঘোষণা করে মাহমুদ আলী বলেন, আগামী ১৮ থেকে ২১ ডিসেম্বর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ভারত সফর করবেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বাংলাদেশ সফরে আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশের সংসদীয় প্রতিনিধি দল ভারত সফরে গিয়ে মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে বৈঠকের সময়েও তিনি এই আগ্রহ ব্যক্ত করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এবারের সার্ক সম্মেলন অত্যন্ত সফল হয়েছে বলে আমরা মনে করি। শীর্ষ সম্মেলনের ঘোষণায় প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বেশ কটি বিষয় স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে আছে অভিবাসন, নীল অর্থনীতি, ২০১৫ পরবর্তী উন্নয়ন এজেন্ডা ইত্যাদি। সার্ক সম্মেলন কতটা সফল হয়েছে এই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সফলতার পার্সেন্টেস করতে পারব না। তবে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত যে চুক্তি সই হয়েছে তা না হলে আয়োজক দেশ নেপালের জন্য তা দুঃখজনক হতো। একটা সম্মেলনে কিছুই না হলে নেপালের মুখ রক্ষার জন্য আয়োজক দেশটি এই চুক্তি করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ চুক্তির ফলে সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যুৎ কেনাবেচার পথ সুগম হল। এছাড়া সার্ক মোটরযান ও সার্ক রেলওয়ে চুক্তি দুটি আগামী তিন মাসের মধ্যে পরিবহন মন্ত্রীদের বৈঠক আয়োজনের মাধ্যমে চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য অর্জনের মধ্যে রয়েছে সার্ক ফুড ব্যাংকের ট্রেশহোল্ড বিলোপ, সার্ক সিড ব্যাংকের বোর্ড গঠন ইত্যাদি।

No comments

Powered by Blogger.