জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করেই সামনে এগোতে হবে

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপি বলেছেন, জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করেই দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পার্টির মহাসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়ালের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন প্রসঙ্গে রাশেদ খান মেনন বলেন, সংবিধানের নির্ধারিত পথেই আগামী নির্বাচন হবে। আমেরিকা ও ব্রিটেনে কখন নির্বাচন হবে সে প্রশ্ন তো আমরা তুলি না। তিনি আরও বলেন, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করা হয়েছে। কিন্তু তারা (বিএনপি) নির্বাচন মেনে না নিয়ে এখন বিদেশে ধরনা দিচ্ছেন। তিনি বামপন্থী ও গণতন্ত্রকামী সব রাজনৈতিক দল এবং শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরাই বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে পারি। তিনি বলেন, সরকার শিক্ষাঙ্গনকে সন্ত্রাসমুক্ত, টেন্ডারবাজি, দুর্নীতি বন্ধ করতে পারলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে। জনগণের কথা চিন্তা করে সরকারকে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কৃষক-শ্রমিকদের ভাগ্যের পরিবর্তন এবং মৌলবাদী, সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই-সংগ্রাম করতে হবে। ওয়ার্কার্স পার্টি জনগণের সঙ্গে আছে, থাকবে।
মহাসমাবেশ থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করা, অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের ধারা অব্যাহত রাখতে বাহাত্তরের মূল সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা, আইনশৃংখলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা, খাদ্য নিরাপত্তা, দুর্নীতি প্রতিরোধ, প্রকৃত কৃষকদের হাতে জমি এবং ভূমি সংস্কারসহ সরকারের কাছে ৭ দফা দাবি জানানো হয়। দুর্নীতিবাজ ও দলবাজদের পরিহার করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান রাশেদ খান মেনন। দেশে যারা বামপন্থী রাজনীতি করছে, লড়াই করছে তাদের সম্মান করুন। শিক্ষাঙ্গন থেকে সন্ত্রাস দূর করুন। তিনি আরও বলেন, সমাজের পরিবর্তনের জন্য দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করছি। এই পরিবর্তনের যাত্রা মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে শুরু হল। দেশের বামপন্থীদের ঐক্যের মাধ্যমে দেশ ও সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
প্রবীণ এই বাম নেতা বলেন, তথাকথিত গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র এখনও করছে। জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদকে রুখতে সারা দেশের গ্রামে গ্রামে মানুষকে সুসংগঠিত করার আহ্বান জানান তিনি। রাশেদ খান মেনন বলেন, ওয়ার্কার্স পার্টিকে বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।
মহাসমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, পলিটব্যুরো সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, বিমল বিশ্বাস, নুরুল হাসান, শফিউদ্দিন আহমেদ, হাফিজুর রহমান ভূইয়া, সুশান্ত দাস, মাহমুদুল হাসান মানিক, ইকবাল কবির জাহিদ, কামরুল আহসান, হাজেরা সুলতানা এমপি। সভা শুরুর আগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গণসঙ্গীত, জাতীয় সঙ্গীত ও আন্তর্জাতিক সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পাশাপাশি জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। সভা-সমাবেশ থেকে বেরিয়ে এসে ১৪ দলীয় জোটকে আরও শক্তিশালী করারও আহ্বান জানান তিনি। বিমল বিশ্বাস বলেন, শ্রমিক শ্রেণীর মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদীদের মোকাবেলা করতে ওয়ার্কার্স পার্টির নেতাকর্মীরা প্রয়োজনে বুকের রক্ত দেবে, তবুও পিছপা হবে না।

No comments

Powered by Blogger.