অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্র দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র -সংবাদ সম্মেলনে নিশা দেশাই

বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তি-মূলক গণতন্ত্র দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। সংকট সমাধানে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপের আহ্বানও সমর্থন করে দেশটি। তবে পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে, তা এ দেশের মানুষ ঠিক করবে।
গতকাল শনিবার দুপুরে আমেরিকান ক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, রাজনীতিকদেরও দায়িত্বশীল হতে হবে। সবাই যেন দায়িত্বশীল ও শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে পারে, সেদিকে দলগুলোকে লক্ষ রাখতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের অগ্রাধিকারমূলক বাজার-সুবিধা (জিএসপি) ফিরে পাওয়া, নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদ ছাড়াও সার্ক সম্মেলন নিয়ে কথা বলেন নিশা দেশাই। তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময়ই শক্তিশালী এবং অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের পক্ষে এবং এই ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গেও কাজ করে যাব। কিন্তু নির্বাচন ইস্যুতে আমরা মনে করি, এ দেশের মানুষই সিদ্ধান্ত নেবে, নির্বাচন কবে হবে। আমরা বরং জোর দিচ্ছি, সম্পর্কের অন্যান্য ক্ষেত্রে আরও কীভাবে উন্নতি করা যায়।’ তবে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে সরাসরি উত্তর দেননি তিনি।
পর্যবেক্ষক হিসেবে সার্ক সম্মেলন শেষে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে তিন দিনের ঢাকা সফরে আসেন নিশা দেশাই। রাজনীতিক, কূটনীতিক, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, মানবাধিকারকর্মী এবং সুশীল সমাজের সঙ্গে বৈঠক শেষে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। বাংলাদেশ থেকে তাঁর উজবেকিস্তান সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। নিশার এটি দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ সফর।
বাংলাদেশের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আমরা সামনে এগোতে চাই।’ তিনি বলেন, রাজনীতিকদের দায়িত্বশীল হতে হবে। সকলে যেন দায়িত্বশীল ও শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে পারে, সেদিকে দলগুলোকে লক্ষ রাখতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি ফিরে পাওয়ার ব্যাপারে নিশা দেশাই বলেন, শ্রমিকের অধিকার ও তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে অনেক কিছু করেছে। এ ক্ষেত্রে দেশটির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের শ্রম মানের উন্নয়ন, কর্মসংস্থানে শ্রমিকের নিরাপত্তা, ট্রেড ইউনিয়ন করার স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন বিষয় দেখার জন্য একটি মূল্যায়ন কমিটি রয়েছে। এই কমিটি বিভিন্ন সময়ে বৈঠক করেছে। ভবিষ্যতে সেই কমিটির বৈঠক হবে। জিএসপি ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
নিশা দেশাই বলেন, দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাড়তি গুরুত্ব পায় বাংলাদেশ। তৈরি পোশাক খাতের নিরাপত্তায় বাংলাদেশের উন্নতি চোখে লাগার মতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, রানা প্লাজার শ্রমিকদের জীবন যেন বৃথা না যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা ইস্যুতে সহযোগিতার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে নিশা বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন সহযোগিতা আছে এবং থাকবে।
মানবাধিকার প্রশ্নে শঙ্কা প্রকাশ করে নিশা বলেন, নারায়ণগঞ্জের সাত খুনসহ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সেখানে তিনি নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। তিনি সাত খুনসহ সব বিচারবহির্ভূত হত্যার তদন্ত এবং এ ব্যাপারে ছাড় না দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ায় বিদ্যুৎ সহযোগিতা চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে নিশা বলেন, অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ বাড়লে এই অঞ্চলের মানুষই উপকৃত হবে। আঞ্চলিক বাণিজ্য বাড়ানোরও তাগিদ দেন নিশা। তা ছাড়া দেশগুলোর মধ্যে সমস্যার সমাধান, বাণিজ্য বৃদ্ধি ও সহযোগিতা বাড়াতে আলোচনার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা উপস্থিত ছিলেন।

1 comment:

  1. We should all realize that Republican
    won the mid term polls in the US.
    President Obama focus is in the
    Foreign policies. For this we should
    ourselves make arrangement for a
    inclclusive Election. Otherwise there is
    no hope for GSP restoration or even
    a risk for 'Visa Denial'.

    ReplyDelete

Powered by Blogger.