ইইউর নাগরিকদের সুবিধা হ্রাসের ঘোষণা দিলেন ক্যামেরন

দেশের নাজুক অভিবাসন পরিস্থিতি মোকাবিলায় গতকাল শুক্রবার নতুন কড়াকড়ির ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। এর আওতায় ইইউভুক্ত দেশের নাগরিকদের রাষ্ট্রীয় কল্যাণ সুবিধা কমানো হবে। ধরণা করা হচ্ছে, ক্যামেরনের এ ঘোষণা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতসহ ইইউভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকেরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন গতকাল ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসের এক শিল্পকারখানায় তাঁর বহুপ্রতীক্ষিত ভাষণে নতুন পরিকল্পনার ঘোষণা দেন। ক্যামেরন বলেন, আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হলে তিনি ইইউভুক্ত দেশের নাগরিকদের রাষ্ট্রীয় কল্যাণ সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করবেন। তাঁর প্রস্তাব অনুযায়ী যুক্তরাজ্যে আসা ইইউর নাগরিকেরা চার বছর পর্যন্ত কোনো রাষ্ট্রীয় ভাতা পাবেন না। ছয় মাসের মধ্যে কাজ পেতে ব্যর্থ হলে তাঁদের যুক্তরাজ্য থেকে বিতাড়ন করা হবে। অভিবাসীদের পরিবারের অন্য সদস্যদের আনার ক্ষেত্রে আরও কড়াকড়ির ঘোষণা দেন তিনি। ডেভিড ক্যামেরন বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদি এসব প্রস্তাব মানতে ব্যর্থ হয়, তাহলে যুক্তরাজ্য ইইউ ত্যাগের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।
ইউরোপীয় কমিশনের একজন মুখপাত্র গতকাল প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত। তবে এ নিয়ে আলোচনা হতে হবে ‘শান্তভাবে ও সতর্কতার সঙ্গে’। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা বাস্তবায়িত হলে দেশটিতে বসবাসকারী ইইউর পাসপোর্টধারী অনেক বাংলাদেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তুলনামূলকভাবে বেশি উদার রাষ্ট্রীয় কল্যাণ সুবিধা, সংস্কৃতিচর্চা এবং সন্তানদের ইংরেজি ভাষা শেখানোর আকর্ষণে অনেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্যক্তি ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন কিংবা অন্য ইইউ দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার পর যুক্তরাজ্যে এসে বসবাস করছেন। ২০১০ সালের নির্বাচনে ক্যামেরন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কোনো যদি, কিন্তু নয়—তাঁর দল ক্ষমতায় গেলে এক মেয়াদেই নেট অভিবাসন বছরে এক লাখের নিচে নামিয়ে আনা হবে। কিন্তু পরবর্তী নির্বাচনের মাত্র ছয় মাস বাকি থাকতে গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জুন পর্যন্ত এক বছরে যুক্তরাজ্যে নেট অভিবাসনের সংখ্যা ছিল দুই লাখ ৬০ হাজার; যা আগের বছরের তুলনায় বরং ৭৮ হাজার বেড়েছে।

No comments

Powered by Blogger.