বাশারকে বাদ দিয়ে আইএসের ওপর হামলা করছে যুক্তরাষ্ট্র : এসএনসি

উপসাগরীয় তেলসম্মৃদ্ধ কয়েকটি দেশ ব্রিটেনকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে, দেশটি তাদের ভূখণ্ডে ব্রাদারহুডের তৎপরতা নিষিদ্ধ না করলে লন্ডনের সাথে তাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত পশ্চিমা সমর্থিত প্রধান জোট সিরিয়ান ন্যাশনাল কোয়ালিশনের (এসএনসি) প্রেসিডেন্ট হাদি আল-বাহরা বলেছেন, মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাশারের বাহিনীর ব্যাপারে চোখ বন্ধ করে রেখেছে এবং ফ্রি সিরিয়ান আর্মির সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, আইএস বাহিনী হচ্ছে সিরিয়া সঙ্কটের একটি লক্ষণমাত্র, এর প্রধান কারণ হলো বাশার সরকার।
এসএসসির প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারের দুষ্কৃতির প্রতি ‘চোখ বন্ধ করে রাখার’ বিভ্রান্তকর নীতির ফসল হচ্ছে ইসলামিক স্টেট। মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাশারকে বাদ দিয়ে আইএসকে এখন হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। গত সোমবার এক সাক্ষাৎকারে হাদি হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন যে, আইএসের ওপর বারাক ওবামার নেতৃত্বে গঠিত আন্তর্জাতিক জোটের বিমান হামলার কারণে ইতোমধ্যে সিরিয়ার অভ্যন্তরে বাশারবিরোধী অউগ্রপন্থী বাহিনীর প্রতি সমর্থন কমে গেছে।
হাদি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সঙ্কটের একটি উপসর্গ আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে কিন্তু এর মূল কারণ বাশার সরকারকে দমনে তারা কোনোই গুরুত্ব দিচ্ছে না। জোট আইএসের ওপর বিমান হামলা চালাচ্ছে কিন্তু বাশার সরকারের বাহিনীর দুষ্কৃতির ব্যাপারে চোখ বন্ধ করে রেখেছে। বাশারের বিমানবাহিনী অব্যাহতভাবে আলেপ্পো ও অন্যান্য স্থানে নিষিদ্ধ প্রাণঘাতী ব্যারেল বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
লন্ডনে ফ্রেন্ডস অব সিরিয়ার বৈঠকের আগে দ্য গার্ডিয়ানের সাথে সাক্ষাৎকারে হাদি এ মন্তব্য করেন।
 প্রেসিডেন্ট বাশারের দফতর জানিয়েছে, আলেপ্পোয় যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব জাতিসঙ্ঘ দিয়েছে তা পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে। এ নগরী সরকার ও বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিভক্ত হয়ে রয়েছে। হাদি বলেছেন, ব্যাপকভিত্তিক রাজনৈতিক সমাধান ছাড়া নিছক স্থানীয়ভাবে যুদ্ধবিরতি হলে তাতে কেবল সরকারই লাভবান হবে। ২০১১ সাল থেকে সিরিয়ায় লড়াই চলছে। এতে দুই লাখ সিরিয়ান নিহত হয়েছে।
আশার আলো দেখছে জাতিসঙ্ঘ
সিরিয়া গৃহযুদ্ধ থামানো, অস্ত্রবিরতি ও স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আশার আলো দেখছে জাতিসঙ্ঘ। সংস্থাটির সিরিয়াবিষয়ক মধ্যস্থতাকারী স্ট্যাফান ডি ম্যাস্টোরা বলেন, ‘সিরিয়ার সঙ্কট মোকাবেলায় আমরা নতুন সুযোগ দেখতে পাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘মধ্যস্থতার জন্য এ অঞ্চলে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হুমকি এ েেত্র একটি প্রধান ইস্যু। এ ছাড়া আরো অন্যান্য বিষয় রয়েছে।’
গত চার বছর ধরে সিরিয়াতে চলা গৃহযুদ্ধে দুই লাখেরও বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছে। দেশটিতে ইসলামিক স্টেট, বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও নুসরাত ফ্রন্ট সরকারবিরোধী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
স্ট্যাফান ডি ম্যাস্টোরা বলেন, ‘সিরিয়ায় আইএস একটি নতুন ফ্যাক্টর হিসেবে দাঁড়িয়েছে। আর এটি সিরিয়া পরিস্থিতিকে অন্য দিকে নিয়ে যেতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে আমরা চুক্তির জন্য তো আশার আলো দেখতেই পারি।’
সঙ্কট নিষ্পত্তিতে বাশারের লোক রাখতে চান ওবামা
ওবামা প্রশাসন চায় সিরিয়ার নতুন রাজনৈতিক নিষ্পত্তিতে ইরান সমর্থন করুক। এই প্রক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বর্তমান সরকারের কিছু সদস্য রাখা যেতে পারে। ওবামার উপদেষ্টারা এ কথা জানিয়েছেন।
ওয়াশিংটন পোস্টের ডেপুটি এডিটর জ্যাকসন ডিয়েল এক নিবন্ধে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ওবামার উপদেষ্টারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, সিরিয়ায় নতুন রাজনৈতিক নিষ্পত্তির চেষ্টায় সমর্থন করতে পারে ইরান। এই প্রক্রিয়ায় বর্তমান ইরান সমর্থিত সরকারের একটি অংশকে রাখা যেতে পারে।
 সোমবার অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছিল, ইরানের সাথে পরমাণু চুক্তিতে সমর্থনকে সিরিয়ার নতুন নিষ্পত্তির সাথে সম্পর্কিত করেছেন ওবামা। এসব খবর অনুযায়ী মধ্য অক্টোবরে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির কাছে লেখা গোপন চিঠিতে ইরাক ও সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অভিন্ন স্বার্থের ওপর জোর দিয়েছিলেন ওবামা।
>>দামেস্কোর বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় গতকাল সরকারি বাহিনীর হামলায় আহত এক ব্যক্তি : এএফপি

No comments

Powered by Blogger.