১০ বছরেও মেলেনি যে প্রশ্নের উত্তর

ইয়াসির আরাফাতের একটি প্রতিকৃতির পাশ দিয়ে হেঁটে
যাচ্ছেন একজন বয়োবৃদ্ধ ফিলিস্তিনি। গত ২৭ অক্টোবর
পশ্চিম তীরের রামাল্লা থেকে তোলা ছবি। এএফপি
ফিলিস্তিনের অবিসংবাদিত নেতা ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যুর পর ১০ বছর পেরিয়ে গেল। কিন্তু একটি প্রশ্নের সমাধান হলো না আজও। তাঁর কি স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল, নাকি বিষক্রিয়ায় মারা যান তিনি? খবর এএফপির। ৭৫ বছর বয়সে ২০০৪ সালের ১১ নভেম্বর ফ্রান্সের একটি হাসপাতালে মারা যান আরাফাত। তিন দিন পর গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে বিষক্রিয়ায় আরাফাতের মৃত্যু হয়েছে। তৎকালীন ফরাসি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওই গুজব নাকচ করে দেন। ২২ নভেম্বর ময়নাতদন্তের কাগজপত্র হাতে পান আরাফাতের ভাগনে নাসের আল কিদা। ওই কাগজপত্রে আরাফাতের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হলেও নাসের আল কিদা তা মেনে নেননি। ২০১২ সালের ৩ জুলাই কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল-জাজিরা আরাফাতের মৃত্যু নিয়ে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রচার করে। এতে বলা হয়, আরাফাতের ব্যবহার করা ব্যক্তিগত জিনিসপত্রে ‘অস্বাভাবিক মাত্রায় পলোনিয়াম’ পাওয়া গেছে, যা উচ্চমাত্রায় বিষাক্ত তেজস্ক্রিয়।
এরপর আরাফাতকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ এনে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই সুহা ফ্রান্সে মামলা করেন। আগস্টের শেষ দিকে তদন্ত শুরু হয়। ২৮ আগস্ট আরাফাতকে চিকিৎসা দেওয়া হাসপাতালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি আন্ত্রিক প্রদাহে ভুগছিলেন। তা থেকে ‘সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে’ এবং অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়। তবে প্রতিবেদনে মৃত্যুর মূল কারণ চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয় হাসপাতালটি। ওই বছরের ২৭ নভেম্বর ফ্রান্স, রাশিয়া ও সুইজারল্যান্ডের তিনটি তদন্ত দলকে ফিলিস্তিনের রামাল্লায় আরাফাতের সমাধি থেকে ৬০টির মতো নমুনা সংগ্রহের অনুমতি দেওয়া হয়। ২০১৩ সালের ৭ নভেম্বর সুইজারল্যান্ডের বিশেষজ্ঞরা জানান, সংগ্রহ করা কোনো কোনো নমুনায় বিষাক্ত রাসায়নিক পলোনিয়াম স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে ২০ গুণ বেশি পাওয়া গেছে। ওই বছরের ১৭ নভেম্বর ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেন। আরাফাতের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে ইসরায়েল। গত বছরের ২৬ নভেম্বর ইসরায়েলের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সিমন পেরেজ বলেন, ইসরায়েল চাইলে আরাফাতকে গুলি করে মারতে পারত।

No comments

Powered by Blogger.