ভাট্টি হত্যার ঘটনায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে পাকিস্তান সরকার

পাকিস্তানে বন্দুকধারীদের গুলিতে সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রী শাহবাজ ভাট্টির মৃত্যুর ঘটনায় কার্যত বিভক্ত হয়ে পড়েছে পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন সরকার। ভাট্টিকে সরকার যথাযথ নিরাপত্তা দিতে পারেনি অভিযোগ তুলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিকের পদত্যাগ দাবি করছেন ক্ষমতাসীন দলেরই মন্ত্রী ও এমপিরা। তবে মালিক বলেছেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি পদত্যাগ করবেন।
খোদ ক্ষমতাসীন দলেরই কয়েকজন মন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, নিরাপত্তাহীনতা বাড়লেও সরকার ব্যবস্থা নিতে পারছে না। এই অবস্থায় সরকার কত দিন ক্ষমতায় থাকতে পারবে, তা নিয়ে কথা উঠেছে।
পার্লামেন্টে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের অনেক নেতার পক্ষ থেকে পদত্যাগ দাবির বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মালিক বলেন, ‘আজ আমি হুমকির মুখে। পরবর্তী সময়ে হয়তো আপনারা আমাকে এই জায়গায় নাও পেতে পারেন।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, পিপিপির নেতা শেরি রহমান ও ফাওজিয়া ওয়াহাবসহ তিনি নিজেও জঙ্গিদের হামলার তালিকায় আছেন।
ভাট্টিকে নিরাপত্তা দিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যর্থ হয়েছেন দাবি করে তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছেন বিরোধীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারাও। ক্ষমতাসীন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা জামশেদ দোস্তি জানিয়েছেন, এ ধরনের ঘটনার পরও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যদি তাঁর পদে বহাল থাকেন, তাহলে তিনি পদত্যাগ করবেন।
ভাট্টির হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে পিপিপির আরেক এমপি আকরাম মসি গিল জানিয়েছেন, নিরাপত্তা হুমকির বিষয়টি ভাট্টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে আরও নিরাপত্তা চেয়েছিলেন।
তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মালিকের দাবি, সরকার ভাট্টিকে যথেষ্ট নিরাপত্তা দিয়েছিল, তবে তা কাজে আসেনি। মন্ত্রণালয় থেকে ভাট্টিকে দুটি গাড়ি এবং ১৬ জন নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হয়েছিল। তবে ঘটনার দিন তিনি এই নিরাপত্তা নেননি।
গত সপ্তাহে নিজের পারিবারিক বাড়ির সামনে কয়েকজন বন্দুকধারী ভাট্টির গাড়ি ঘিরে ধরে গুলি করে তাঁকে হত্যা করে। এ সময় তাঁর সঙ্গে কোনো নিরাপত্তারক্ষী ছিল না।
সরকার সম্প্রতি জানিয়েছে, ভাট্টিকে মন্ত্রিপাড়ায় একটি বাসা দেওয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি সে বাড়িতে ওঠেননি। এ ছাড়া একটি বুলেটপ্রুফ গাড়িও তাঁকে দেওয়া হয়েছিল কিন্তু গাড়িটি পুরোনো বলে তিনি তা নিতে অস্বীকার করেন।
গত জানুয়ারিতে নিরাপত্তারক্ষীর গুলিতে নিহত হন পাঞ্জাব রাজ্যের গভর্নর সালমান তাসির। এ ঘটনায় সরাসরি কোনো নিন্দা জানাতে অস্বীকার করেছিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আশফাক পারভেজ কায়ানি। তবে তিনি সম্প্রতি পশ্চিমা কূটনীতিকদের বলেছেন, ওই ঘটনায় সেনা কর্মকর্তাদের একটি বড় অংশের সহানুভূতি ছিল। লাহোরের লেখক-সাংবাদিক আহমেদ রশিদ এ দাবি করেছেন। ভাট্টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়ও সেনাবাহিনী কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

No comments

Powered by Blogger.