যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন মহড়ার পরিকল্পনা করছে দ. কোরিয়া

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও যৌথ সামরিক মহড়ার পরিকল্পনা করছে দক্ষিণ কোরিয়া। পীতসাগরে গতকাল বুধবার এই দুই দেশের মধ্যে চার দিনব্যাপী যৌথ মহড়া শেষ হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা জানান, নতুন মহড়া ডিসেম্বর মাসেই হতে পারে। দেশটির গোয়েন্দা-প্রধান উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, উত্তর কোরিয়া আরও হামলা চালাতে পারে এবং শিগগিরই দেশটি হামলা চালাবে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার মিত্র বলে পরিচিত চীন বলেছে, কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা কমানোই এখন প্রধান কাজ হওয়া উচিত। বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে দুই কোরিয়ার পাল্টাপাল্টি গোলার ঘটনায় উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘে নিন্দা প্রস্তাব তোলার চেষ্টায় বাধা দিয়েছে চীন।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা জানান, সিউল ও ওয়াশিংটন আরও সামরিক মহড়ার পরিকল্পনা করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা জানান, ডিসেম্বরে বা আগামী বছরের শুরুতে ওই মহড়া চালানো হতে পারে। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ মহড়া দুই দেশের মিত্রতার পক্ষে দৃঢ় অঙ্গীকার। উত্তর কোরিয়ার যেকোনো উসকানির বিরুদ্ধে কঠোর জবাব দেওয়া হবে।’ তিনি আরও জানান, যৌথ মহড়ার ব্যাপারে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সিউলের আলোচনাও হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়া পৃথকভাবে দেশের ২৯টি স্থানে সামরিক মহড়া চালাবে বলে জানা গেছে। আগামী সপ্তাহে এই মহড়া শুরু হয়ে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে। এই মহড়ার অংশ হিসেবে ইয়নপিয়ং দ্বীপেও মহড়া চালানো হবে। গত ২৩ নভেম্বর দুই কোরিয়ার পাল্টাপাল্টি গোলার ঘটনায় দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নপিয়ং দ্বীপে দুই মেরিন সেনাসহ অন্তত চারজন নিহত হন। এ ঘটনায় দুই কোরিয়ার উত্তেজনার মধ্যেই পীতসাগরে চার দিনব্যাপী যৌথ মহড়া শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার প্রতিবেদনে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াং জিয়েচি বলেন, কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা কমাতে সংশ্লিষ্ট সবার কাজ করা উচিত। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, ‘কোনো পক্ষকে রক্ষা’ করা চীনের উদ্দেশ্য নয়।
এর আগে কোরীয় সমস্যা সমাধানে ছয় জাতি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিল চীন। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান তা নাকচ করে দেয়।
এএফপির প্রতিবেদনে কয়েকজন কূটনীতিকের বরাত দিয়ে বলা হয়, দুই কোরিয়ার মধ্যে পাল্টাপাল্টি গোলার ঘটনা ও পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু চীন এতে বাধা দেয়। একজন কূটনীতিক জানান, ‘নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনায় অচলবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সম্ভবত নিরাপত্তা পরিষদ উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারবে না।’

No comments

Powered by Blogger.