গল্প- 'গন্তব্য বদল' by রফিকুর রশীদ

ডাক্তারখানা বন্ধ করে দরজায় তালা অাঁটতে যাবে, এমন সময় বদরাগী মোটরসাইকেলের বিকট গর্জনে লতিফ ডাক্তার পিছন ফিরে তাকায়। অসময়ে সারা বাজার ফাঁকা হয়ে গেছে।

ছোট এই গ্রাম্যবাজারে দোকানপাটই ক'টা। এরই মাঝে দিনরাত সরগরম থাকে যে ইমদুর চায়ের দোকান, তারও চুলোয় ধোঁয়া উঠছে, ঝাঁপ ফেলার আয়োজন চলছে। খদ্দেরপাতি নেই, সামনের মাচা ফাঁকা। এমন কি দোকান সংলগ্ন টিনের চালার তলে দুটো ক্যারাম বোর্ডের সঙ্গে সব সময় ডেঁয়ো পিঁপড়ের মত সেঁটে থাকে যে ছেলেগুলো, তারাও সবাই হাওয়া হয়ে গেছে। টেলিভিশনে হিন্দি ছবির নৃত্যদৃশ্য বন্ধ করে ইমদু মোটরসাইকেল আরোহীদের সামনে এসে হাত নেড়ে নেড়ে কী যেন বুঝিয়ে বলে।
আবার দ্রুত হাতে সিগারেটের প্যাকেট এনে বাড়িয়ে ধরে। পিছনের আরোহী একটা সিগারেট ঠোঁটে ঝুলিয়ে পুরো প্যাকেটটা পকেটে ঢুকিয়ে চালকের পিঠে টোকা দিতেই সগর্জনে চলতে শুরু করে মোটরসাইকেল। চলতে শুরু করে মানে লড়াই লিপ্সু গোঁয়ার ষাঁড়ের মত শিংবাঁকিয়ে আস্ফালন করে এবং হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া বাজারের সব ক'টা দোকানের সামনে দিয়ে দ্রুত পাক মেরে একমাত্র ডাক্তার খানাটির সামনে এসে দাঁড়ায়। ততক্ষণে দরজার তালা আঁটা হয়ে গেছে লতিফ ডাক্তারের। স্ট্যান্ডের উপরে মোটরসাইকেল চাপিয়ে চালক তার চোখের কালো চশমা কপালে ঠেলে এগিয়ে, সোজাসুজি প্রশ্ন করে,
তুমি কেথায় যাচ্ছ?
কান খাড়া করে প্রশ্ন শোনে, কিন্তু সোজাসাপ্টা জবাব দিতে ইচ্ছে করে না লতিফ ডাক্তারের। যাবার জন্যে কেউ তাকে ডাকেনি এটা ঠিক, বরং দোকান বন্ধ করে যাবার সময় কেউ কেউ চোখ ঠেরে তার দিকে তাকিয়েছে কিন্তু মুখে কিছুই বলেনি। ওদের এই চোখ কুতকুতে দৃষ্টির কোনো তাৎপর্য বুঝতে না পেরে চুপচাপ বসে থেকেছে লতিফ ডাক্তার। কিন্তু সে আর কতক্ষণ তারপর একা একা বসে থাকতে থাকতে সে হাঁপিয়ে ওঠে। এমনিতেই হোমিওপ্যাথের উপর থেকে মানুষের আজকাল আস্থা উঠে গেছে, তা ছাড়া উত্তরপাড়ার নবীর খলিফার ছেলে নাসির কোত্থেকে কী এক প্যারামেডিক্যাল শিখে এসে পৈত্রিক ডাঙ্গা বাড়ির উঠোনে দাতব্য চিকিৎসা চালু করার পর লতিফ ডাক্তারের প্র্যাকটিস একেবারে শিকেয় উঠেছে। দশ গায়ের নাম করা ডাক্তার নগেন মিত্রের শিষ্য হিসেবে সে কেবল সুতোটা ধরে রেখেছে মাত্র। আলমারি ভর্তি হোমিওপ্যাথির মেটিরিয়া-মেডিকা রেক্সিনমোড়া বই, তাকে তাকে শিশিভর্তি ওষুধপত্রসহ এই ডাক্তারখানা তাকে দান করে নগেন ডাক্তার একাত্তরে চলে গেছে ভারতে, তবু প্র্যাকটিসে টান পড়লেই লতিফ ডাক্তারের বহু দিন মনে হয়েছে-গুরু তাকে সবই দিয়েছে, তারপরও কী যেন তার ঠিক পাওয়া হয়নি। দোষ কার? নগেন ডাক্তার তো চলতি প্র্যাকটিসসহ পুরো ডাক্তারখানাই তাকে দিয়ে গেছে। দেবার বেলায় কার্পণ্য করেনি মোটেই। তবু দিনে দিনে প্র্যাকটিসে ধস্ নেমেছে। সকালের দিকেই সাধারণত একঝাঁক রুগী আসে। কাগজে পুরিয়া জড়িয়ে তাদের বিদায় করার পর হাতে কাজ থাকে না। তখন নাকের ডগায় পুরু লেন্সের চশমা ঝুলিয়ে গত দিনের বাসি খবরের কাগজ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ে। বলা যায় ওই কাগজের মধ্যেই ডুবে থাকে। তাই গ্রামে ম্যাজিস্ট্রেট-দারোগা আসার সংবাদে সবার মধ্যে যেরকম চাঞ্চল্য দেখা যায়, লতিফ ডাক্তারের মধ্যে ঠিক সেই রকম প্রতিক্রিয়া হয় না। বাজারের সব দোকান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দেখেও সে তার কর্তব্য স্থির করতে পারে না। আবার চোখের সামনে মেলে ধরা বাসি কাগজেও মন বসাতে পারে না। এক সময় তার মনে হয়, এভাবে একা একা বাজার আগ্লে বসে থাকারও যদি কেউ ভিন্ন অর্থ খোঁজে। নাহ্! খবরের কাগজ ভাঁজ করে সে উঠে পড়ে। আগাম বাড়িফেরার সিদ্ধান্ত নিয়ে দোকানের দরজায় তালা লাগাতেই মোটরসাইকেল সওয়ার এই আপদ এসে হাজির, তিরিক্ষি মেজাজে তাড়া লাগায়।
যাচ্ছ কোথায় বলবে তো!
রথ দেখতে। লতিফ ডাক্তারের ভেতরের গজগজানি ফস করে বেরিয়ে পড়ে-লজ্জাশরম তো গুলিয়ে খেয়েছিস, ভয়ডরও কি নেই? তুই কেন এসেছিস?
ওই যে রথ দেখতে! কেউ উল্টোপাল্টা মুখ খুললেই একেবারে রথে চড়িয়ে দেব, হঁ্যা!
এসব কথায় কান করে না লতিফ ডাক্তার। সে খুব জানে, এই বাখোয়াজ ছেলেটির গলার জোর বেশি। কাজ করে যত, বক্তৃতা করে তার দশগুণ বেশি। চশমাটা চোখ থেকে নামিয়ে লতিফ ডাক্তার সামনে পা বাড়ায়। কিন্তু মাথা পেঁচিয়ে এসে মোটরসাইকেল চালক বলে, বাড়ি যাও বাবা। তোমার ওই রথ দেখার কোনো প্রয়োজন নেই। তুমি যাও।
মোটরসাইকেলে পাছা ঠেকিয়ে উসকো খুসকো ছেলেটা এতক্ষণে মুখ খোলে, সতর্ক করে এবং পরামর্শ ছড়ায়,
ওদিকে গেলে হাতে হারিকেন ধরিয়ে দেবে চাচা। পুলিশের ব্যাপার, বলা তো যায় না। তখন আবার ঝইঝামেলার একশেষ হবে। ওদিকে যাবেন না।
কারো কথার জবাব না দিয়ে লতিফ ডাক্তার হাঁটিতে শুরু করে। কোথায় যাবে সেই গন্তব্য যে একেবারে পূর্বনির্দিস্ট হয়ে আছে এমন নয়। তবু সে এখান থেকে সরে পড়তে চায় এটাই বড় কথা। এদিকে পিছন থেকে সতর্ক বাণী উচ্চারিত হয়-কারো কথায় কান দিয়ে তুমি যেন মুখ খুলো না বাবা। মুখ খুললেই ফেঁসে যাবে কিন্তু।
এঁহ্, ফেঁসে যাবে! আমাকে সতর্ক করা হচ্ছে! তোর মত অকালকুষ্মাণ্ড জন্ম দিয়ে আমি তো ফেঁসেই আছিরে হতভাগা। এবার তোর ফাঁসি কে ঠেকায়, দেখব দাঁড়া! হু!' কপালে আঙুল চালিয়ে ঘাম মোছে আর গজগজ করে লতিফ ডাক্তার-কথার কী ছিরি, হাতে হারিকেন ধরিয়ে দেবে! এবার তোদের সব পোঁদের কাপড় সামলে রাখিস, বাঁশ ঠিকই ঢুকবে! সাংবাদিকের গায়ে হাত তুলিস, টের পাবি বাঁশ কাকে বলে! ময়না তদন্ত হলেই জারিজুরি খতম, হঁ্যা। বেশ কিছুদূর চলে আসার পর ছাতা ফোটানোর কথা মনে পড়ে লতিফ ডাক্তারের। ডান হাতে ঝোলানো ছাতাটা মাথার উপরে মেলে হাঁটতে হাঁটতে সে কদমতলার মোড় পর্যন্ত আসতেই পিছন থেকে বদরাগী মোটরসাইকেলটা রাজ্যের ধুলো উড়িয়ে ধাঁ করে বেরিয়ে যায়। তখনই দমকা হাওয়ায় হাতের ছাতা উল্টে যাবার উপক্রম হয়। চোখমুখ থেকে ধুলোর অন্ধকার সরে গেলে আবার গজরে ওঠে-বাপের জোটে না ভাঙা সাইকেল, আর হারামজাদা পঙ্ক্ষিরাজে উড়ে বেড়ায়। তোর চৌদ্দপুরুষের কেউ মোটরসাইকেল দেখেছে, এঁ্যা?
পাঞ্জাবির কোনা ধরে টেনে- টুনে ধুলোবালি ছাফ ছুতরো করে লতিফ ডাক্তার ডান দিকে বাঁক নেয়। মাত্র ক'গজ এগিয়ে খোনকারাপাড়ায় তার বাড়ি। কিন্তু গ্রামসুদ্ধু লোকজন তো ছুটেছে কদমতলার মোড় থেকে বাম দিকে, মাঠপাড়া পেরিয়ে পশ্চিমে গোরস্থানে। ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশের গাড়ির চাকার দাগও গেছে সেই দিকে। সাত দিন আগে মাটি হয়ে যাওয়া ফরিদুলের লাশ তোলা হবে কবর থেকে। আশ্বিনের কুয়াশা ঢাকা ভোরে গ্রামের সবাই কাঁঠাল গাছের ডালে ফরিদুলকে ঝুলে থাকতে দেখেছে, মুখে কাপড় চেপে কেউ কেউ চোখ কুতকুত করে তাকিয়েছে, ফিসফাঁস কথার মাকড়শা ছেড়েছে, কিন্তু সেদিন প্রকাশ্যে কেউ ময়না তদন্তের কথা তোলেনি। মখলেস মেম্বারের ছেলে মোহন এসে হুকুম দিয়েছে, থানা পুলিশ নিয়ে ভাবতে হবে না, লাশ নামিয়ে মাটি দেয়ার ব্যবস্থা কর। ফরিদুলের বৃদ্ধ বাপ মা, স্ত্রী-পুত্র বুক চাপড়াতে চাপড়াতে লাশ নামিয়ে গ্রামের বারোয়াড়ি গোরস্তানে দাফন করে আসে, কয়েকদিন ধরে একটানা কান্নাকাটি করে। তা স্বজনহারানোর বেদনায় কে না কাঁদে! ফরিদুলের অস্বাভাবিক মৃতু্যতে অনাত্মীয় প্রতিবেশিও অনেকেই কেঁদেছে। মৃতু্যজনিত শোকে কান্নাকাটি নতুন কিছু ঘটনা নয়। ময়নাতদন্তের জন্যে মৃতু্যর সাত দিন পর কবর থেকে সেই মৃতু্য ব্যক্তির লাশ ওঠানোর ঘটনা এ তলস্নাটে একেবারে অভিনব এবং ভীষণ কৌতূহল উদ্দীপক ব্যাপার। পরিবার-পরিজনের চোখের শুষ্কপ্রায় অশ্রুধারায় আবার নতুন করে বন্যা আসে, রুদ্ধ আবেগে কেউ কেউ ছুটে যায় গোরস্তান পর্যন্ত, কিন্তু প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে হারিয়ে যাওয়া ফরিদুলের মুখখানি আর দেখা হয় না।
মাত্র দু'মাসের ব্যবধানে একই পরিবারের দু'দুটো অস্বাভাবিক মৃতু্য অতিশয় নির্বিবাদী নিরীহ গ্রামবাসীকেও সামান্য সংশয়াচ্ছন্ন করেছিল। বিশেষ করে জোয়ান তাগড়া সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ ফরিদুলকে কাঁঠাল গাছের ডালে ঝুলতে দেখে অন্তরে অন্তরে অনেকেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, কিন্তু লাশ দাফনের জন্যে মখলেস মেম্বারের ছেলে মোহনের আদেশ ঘোষিত হবার পরপরই লফিত ডাক্তারের ছেলে লিয়াকত উপজেলা শহর থেকে মোটরসাইকেল হাঁকিয়ে এসে সারা গ্রাম দাবড়ে যাবার পর সবার মনের সব প্রশ্ন ভাদ্রের আওলা মেঘের মত হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। হতবিহবল গ্রামবাসী ফাঁস থেকে নামিয়ে ফরিদুলে মৃতদেহ গ্রামের পশ্চিমে গোরস্তানে কবর দিয়ে আপন আপন বাড়ি ফিরে যায়। কেউ হয়তোবা অন্ধকারে নিজের সঙ্গে একান্তে কথা বলে, কিন্তু দিনের আলোয় অন্যের সামনে সবাই মুখে কপাট এঁটে বসে। তবু জেলা-উপজেলা থেকে সাংবাদিকরা এসে প্যাঁচ কষে কষে কথার ফুঁপড়ি বের করে ফেলে। ফরিদুলের পিতামাতা, স্ত্রী-পুত্রের আর্তনাদকে ক্যামেরার ফ্রেমে বাঁধতে তৎপর হয়। অতপর পরদিন স্থানীয় একটি কাগজসহ রাজধানীর বেশ ক'টা দৈনিকে খবর বেরোয় ঃ 'নূরী হত্যা মামলার বাদী ফরিদুলের রহস্যজনক মৃতু্য'।
ফরিদুলের বোন নূরজাহানকে বাড়ির সবাই নূরী বলে ডাকতো, সাংবাদিকরাও সেই নামেই সংবাদ ছেপেছে। পরদিন সন্ধ্যার আগে আগে রমজান মাস্টার হাঁপাতে হাঁপাতে বাজারে এসে কাগজ মেলে ধরে জিগ্যেস করে, এ সব কী লিখেছে ডাক্তার ভাই?
উপজেলা শহরের এক বেসরকারি স্কুলে রমজান মাস্টারের চাকরি। বাড়ি ফেরার পথে সে-ই প্রতিদিন খবরের কাগজ নিয়ে আসে। সন্ধ্যা বেলায় লতিফ ডাক্তারের 'দি হ্যানিম্যান ফার্মেসিতে সান্ধ্যকালীন কাগুজে আড্ডা তাদের নিত্যদিনের বিষয়। লতিফ ডাক্তার তো বটেই হারু মুহুরী, সুলতান গার্ড (একদা রেলের চাকরি ছিল) সবাই ওই কাগজের জন্যে মুখিয়ে থাকে। রমজান মাস্টার সাইকেল থেকে নামামাত্র হাতে হাতে ভাগ হয়ে যায় কাগজের পাতা। মাসিক বিলের অর্ধেকটা লতিফ ডাক্তার একা বহন করে বলে হাতে রুগী না থাকলে প্রথম পাতার উপরে তার অগ্রাধিকার একরকম অলিখিতভাবেই প্রতিষ্ঠা হয়ে গেছে। অন্যদিনের তুলনায় বেশ আগে ভাগেই হন্তদন্ত হয়ে রমজান মাস্টার এসে কাগজের শেষ পৃষ্ঠা মেলে ধরে ফরিদুলের মৃতু্য সংবাদটা দেখায়। লতিফ ডাক্তার নাকের ডগায় চশমা এঁটে দ্রুত চোখ বুলিয়ে যায়। ধীরে ধীরে কপালের বলিরেখায় ভাঁজ পড়ে। ভ্রুরু কোঁচকায়। চশমা খুলে রমজান মাস্টারের দিকে তাকায়। আবার চশমা পরে। রমজান মাস্টার মন্তব্য করে, সেই রাতে কিন্তু আমি লিয়াকতকেও গ্রামে আসতে দেখেছি ভাই। লতিফ ডাক্তারের কপালে ঘাম ফোটে, চোখ গোল হয়ে যায়, অন্যমনস্ক হয়ে বলে, অ দেখেছ? কাকে দেখেছ?
হঁ্যা, গ্রামের ছেলে তো গ্রামে আসবেই। তার আবার দিন রাত কী?
রমজান মাস্টার অতিদ্রুত ঢোক গিলে নেয়। তারপর আবার ঘাড়মাথা চুলকায়, নিতিবিতি করে এবং ফস্ করে বলেই ফেলে, এভাবে সাংবাদিকদের হুম্কি দেবারই বা কী দরকার ছিল। এখন কোন ঘাটের জল কোথায় গিয়ে গড়াবে কে জানে!
লতিফ ডাক্তার জবাব দেয়ার জোর পায় না। মনে মনে হিসেব মেলায়- না না, লিয়াকত এ গ্রামের ছেলে হলে কী হবে, গ্রামে আসার সময় কোথায় তার! কত কাজ! কত ব্যস্ততা! এমপি সাহেব ঢাকায় থাকলে তখন স্থানীয় বহু সমস্যা তাকে সামলাতে হয়, উপজেলা শহরের বাসায় থাকলেও কথায় কথায় লিয়াকতেরই ডাক পড়ে। দলের সিনিয়র নেতারা এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ ঝাড়ে এখানে সেখানে, এমপি সাহেবের তবু ইয়াং এনার্জেটিক লিডার লিয়াকতকেই পছন্দ। সহজেই ইশারা ইঙ্গিতে বোঝে। খুব শার্প। কেউ কেউ এখনো ছাত্রনেতা যুব নেতা বলতে চায়, সভা সমাবেশে বলেও কখনো কখনো। কিন্তু এসব সম্বোধন আবার লিয়াকতের মোটেই পছন্দ নয়। ওইসব পরিচয়ে দলের ভেতরে তার অবস্থানটা যেন স্পষ্ট খোলাসা হতে চায় না। তাছাড়া স্থানীয় কলেজের খাতাপত্র থেকে ক'বছর আগে যে তার ছাত্রত্ব চুকে গেছে, সেটাও এখন জোর গবেষণার বিষয়। ক্ষমতার বাইরে থাকার সময় সে বেশ ক'মাস জেল খেটেছে। হোক সেটা রাস্তার পাশের সরকারি গাছ লোপাটের দায়ে কারাবাস, তবু সেই সুবাদে কেউ তাকে কারাবরণকারী ত্যাগী নেতা বললে তখন তার খুব ভালো লাগে। ভেতরে ভেতরে আরাম পায়।
সেই লিয়াকত যদিবা বহুদিন পর সেদিন রাতে বাড়ি আসে, সঙ্গে আসে তিনজন সাঙাত। এদিকে মখলেস মেম্বারের ছেলে মোহনও জুটে যায়। কী নাকি দলের গোপন মিটিং আছে। লিয়াকতের মা মোরগ জবাই করে খাওয়ায়। লতিফ ডাক্তার বাজার থেকে বাড়ি ফিরে সবই টের পায়, কিন্তু, অদৃশ্য এবং অনতিক্রম্য দূরত্বের কারণে পুত্রের মুখোমুখি হবার রুচি হয় না। নূরীর সম্ভ্রমহানি এবং বিষপানে মৃতু্যর ঘটনার সঙ্গে লিয়াকতকে জড়িয়ে যতরকম কেচ্ছা ডালপালা মেলেছে, তা শুনতে শুনতে লতিফ ডাক্তারেরই আত্মহত্যার ইচ্ছে জেগেছিল। অথচ লিয়াকতের মা কতনা সহজ যুক্তি এঁটে নিজেকে বুঝাতে পেরেছে-লিয়াকত এসব করতে যাবে কেন! এসব হচ্ছে বিরোধী পক্ষের শত্রুতা, মিথ্যে প্রচারণা। সেই ছোটবেলা থেকেই নূরীকে পছন্দ করে লিয়াকত, সসম্মানে বিয়ে করতে চায়; নূরীর বাপভাই এখন বিয়ে দেবে না, তাকে জজ ব্যারিস্টার বানাতে চায়। এবার তাকে কলেজে ভর্তি করিয়েছে। হোক, সে লাটবেলাট যা হয় হোক। দেশে কি মেয়ের আকাল নাকি! অবুঝ জননী সেই রাতে গুণধর পুত্র এবং তার সাঙ্গোপাঙ্গকে মহাসমারোহে আপ্যায়ন করে। এর মধ্যে কখন তাদের জরুরি মিটিং সারা হয়, কখন চলে যায় বাড়ি ছেড়ে, এসবের কিছুই জানে না লতিফ ডাক্তার। সে রাতে কিছু না খেয়েই নিজের বিছানায় শুয়ে পড়ে। এপাশ ওপাশ করে তড়পায়। লিয়াকতের শৈশবের নিষ্পাপ ছবি দু'হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসে, দু'চোখ ভিজে আসে তার। কবে কবে যে এত বড় হয়ে গেল, কিছুই হাতড়ে পায় না। ক্লান্তি, অবসাদ আর স্মৃতিকাতরতা মিলেমিশে লতিফ ডাক্তারকে বিপর্যস্ত করে তোলে, তন্দ্রা আর জাগরণের মাঝা-মাঝি পেরিয়ে যায় আঁধার রাত। আলো ফোটে। প্রভাত হয়। তবু বিছানা ছেড়ে উঠতে পারে না সে। শরীর প্রচণ্ড ভারি বোধ হয়, ফজরের নামাজ কাজা হয়ে যায়। বেশ দেরিতে উঠে নিমের দাঁতন মুখে দিতেই তিতকুটে বিস্বাদ ছড়িয়ে পড়ে সারামুখে। অথচ নিমডালে দাঁত মাজবার অভ্যেস তার পঞ্চাশ বছরের-পুরানো। আপাত তিক্ত স্বাদের আড়ালেও লুকিয়ে থাকে সূক্ষ্ম এক মিষ্টি রস। অনেক চিবিয়েও সেই রসের নাগাল না পেয়ে বিরক্ত হয়ে দাঁতনটা ছুঁড়ে ফেলতেই লিয়াকতের মা সামনে এসে দাঁড়ায়, বিরস বদনে জানায়-ওগো শুনছো, ফরিদ গলায় ফাঁসি দিয়েছে!
কোন ফরিদ! লতিফ ডাক্তারের বিস্ফোরিত চোখ দিয়ে প্রশ্ন ফুটে বেরোয়।
রিফু্যজিপাড়ায় ফরিদুল গো, নূরীর ভাই। এই পর্যন্ত বলার পর কী এক দুর্বোধ্য কারণে ফ্যাচ করে কেঁদে ওঠে লিয়াকতের মা।
সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ ফরিদুল কেন গলায় ফাঁস লটকে আত্মহত্যা করতে গেল তা নিয়ে গ্রামবাসীর মধ্যে বিস্তর গোপন গবেষণা হয়, কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরোয়। ফরিদুলের পারিবারিক অশান্তির নানান অজানা তথ্য আলগা হয়। তার স্ত্রী দেখতে সতীসাধ্বী হলেও ডুবে ডুবে জল খায়, মামাতো ভাই মিজানের সঙ্গে ফষ্টিনস্টির একশেষ। কারো কারো আলোচনায় নূরীর সম্ভ্রমহানি এবং অস্বাভাবিক মৃতু্যর প্রসঙ্গটিও উঠে আসে। সম্ভ্রমহারা বোনের বিষপানে মৃতু্যকে সে হত্যাকান্ড বলে গ্রহণ করেছিল এবং লিয়াকতসহ আরো তিনজনকে আসামী করে হত্যামামলা দায়ের করেছিল। স্থানীয় থানা মামলা গ্রহণে অসম্মতি জানালে সে কোর্টের আশ্রয় নেয়। মামলা হয়। আসামী ধরা পড়ে না। উল্টো তাকেই হুমকি দেয়া হয় মামলা তুলে নেয়ার জন্যে। প্রচণ্ড গস্নানিবোধ এবং অন্তর্চাপে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে ফরিদুল শেষ পর্যন্ত আত্মহননের পথ বেছে নেয়। গ্রামের ঊর্বর মস্তিষ্কসম্পন্ন দু'চারজন মানুষ এ পর্যন্ত একরকম অংক মেলাতে পারে, এর বেশি ভাবতে সাহস পায় না। সাংবাদিকদের মধ্যে দু'একজন ব্যক্তিগত ঝুঁকি নিয়েও সেই অগ্রসর ভাবনা ঠিকই ভাবে এবং সম্ভাব্য ক্লু ধরে খুঁজে পেতে ভয়ঙ্কর সব তথ্য মেলে ধরে কাগজের পাতায়। রমজান মাস্টারের দেখিয়ে দেয়া সেই সংবাদভাষ্য পড়তে পড়তে লতিফ ডাক্তারের সারা শরীর কেঁপে ওঠে, ঠোঁটজোড়া অস্পষ্ট উচ্চারণে বিড়বিড় করে-তার মানে আমি জানি আর না জানি, আমার বাড়িতে বসেই হত্যা পরিকল্পনা হয়েছে!
এরপর দু'দিন আর ডাক্তারখানা খোলা হয় না। বুকের মধ্যে উদ্যম পায় না লতিফ ডাক্তার। বাড়িতেই বসে থাকে। দু'চার জন নাছোড় রুগী বাজার ঘুরে বাড়ি পর্যন্ত চলে আসে, বাড়িতে আছেও বটে নানান পাওয়ারের এক বাক্স ওষুধ। কিন্তু এখন রুগীর দিকে তাকাতেও তার ভয়ানক সংশয় হয়-লোকটা চিকিৎসা নিতেই এসেছে, নাকি অসুখের ছল ধরে লতিফ ডাক্তারকেই জরিপ করতে চায় আপদমস্তক! এর মাঝে দু'জন সাংবাদিকও এসেছিল কথা বলতে, নিজের অসুস্থতার অজুহাতে তাদের এড়ানো গেছে। দু'দিন পর রমজান মাস্টার এসে তাকে হিড়হিড় করে টেনে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যায়। সে অধিকারও তার আছে। লতায়পাতায় জড়িয়ে হলেও লিয়াকতের মা তার দূরসম্পর্কের খালাতো বোন। রমজান মাস্টারকে দেখে তার দু'হাত জড়িয়ে ধরে ডুকরে ওঠে লতিফ ডাক্তার। এসব সেন্টিমেন্টকে পাত্তা না দিয়ে রমজান মাস্টার তাকে সঙ্গে নিয়ে বাজারে চলে যায়। আবার সান্ধ্য আড্ডা বসে। কাগজ পড়া হয়। লতিফ ডাক্তার তবু আর আগের মত উৎসাহ পায় না। খুব সাবধানে খবরের কাগজের পাতা ওল্টায়-নূরী হত্যামামলা নিয়ে আবার যদি ফলোআপ কভারেজ বেরোয়। দু'দিন পর রমজান মাস্টার স্কুল থেকে শুনে এসে জানায়, কে বা কারা নাকি সাংবাদিক কামাল আহমেদের ডান হাত মুচড়ে ভেঙে দিয়েছে। লাশ ফেলে দেবে বলে শাসিয়ে গেছে। ওই লোকটাই খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে সংবাদের পেটের ভেতর থেকে সংবাদকণা টেনে বের করে আনে, মুনাজাতউদ্দীনের সাগরেদ বলে তার বড্ড ডাঁট। স্থানীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি, সে সুবাদে সব মহলে যোগাযোগ এবং অল্পবিস্তর প্রভাবও আছে। তার কলমের খোঁচাতেই সাতদিন পর ফরিদুলের লাশ তোলা হয় মাটির তলা থেকে। পোস্টমর্টেম হয়। আরো কত কী! কিন্তু এতসব আয়োজন করে শেষ পর্যন্ত কী লাভ হয়! লাঞ্ছিতা নূরীরা কি ফিরে পায় হারানো সম্ভ্রম? কিংবা ফরিদুলের বিদেহী আত্মা কি খুঁজে পায় সান্ত্বনা? এসব আবেগঘন প্রশ্ন নিয়ে মাথা ঘামানো মেডিক্যাল টিমের কাজ নয়। তাদের দায়িত্ব ফরিদুলের মৃতু্যর কারণ নির্ণয় করা। সেটা তারা করবে। পোস্টমর্টেম রিপোর্টে হয়তো লেখাও হবে-শ্বাসরোধজনিত কারণে ফরিদুলের মৃতু্য ঘটেছে। তা গলায় ফাঁস দিলে তো শ্বাসরোধ হবেই। গলা টিপে হত্যা করে ফাঁসে ঝোলালে তার বেলা! আঙুলের দাগ? আঙুলের না টিপে, রশি না পেঁচিয়েওতো শ্বাসরোধ সম্ভব। আর তাছাড়া বিঘ্ন সংকুল এতটা পথ যে পেরিয়ে এসেছে নিরাপদে, সামান্য আঙুলের দাগ কিংবা শিরদাঁড়ার হাড়হাড্ডির একটু এদিক সেদিক ভাঁজ সে হজম করতে পারবে না? রাজ্যের যত নৈরাশ্যের ভাবনা ঘিরে রাখে লতিফ ডাক্তারের চিন্তার জগৎ। সন্ধ্যার আগে আগে আবার রমজান মাস্টার এসে বিপর্যস্ত মানুষটিকে নিয়ে টানাটানি করে। কিন্তু লতিফ ডাক্তার আর কিছুতেই বাড়ি ছেড়ে বাজারমুখো হয় না। অধিক পীড়াপীড়িতে এক সময় তার হড়হড়িয়ে বমি হয়ে যায়। রমজান মাস্টার চমকে উঠে তাকে জড়িয়ে ধরে-শরীর খারাপ নাকি ডাক্তার ভাই?
লতিফ ডাক্তার কেবল মাথা ঝাঁকিয়ে অসম্মতি জানায়। কিন্তু রমজান মাস্টার ব্যাকুল হয়ে ওঠে, লিয়াকতের মাকে আহ্বান জানায়, বুবু একটু এদিকে আসেন দেখি! ডাক্তার ভাইয়ের গায়ে যে জ্বর থমথম করছে!
সহসা লতিফ ডাক্তার আর্তনাদ করে ওঠে, না না, ঐ মহিলাকে আসতে নিষেধ কর মাস্টার! আমাকে যেন স্পর্শ না করে।
লিয়াকতের মা নাকেমুখে কাপড় চেপে কাঁদতে শুরু করে। রমজান মাস্টার বিমূঢ় হয়ে পড়ে। নিজ হাতে ডাক্তারকে ধরাধরি করে শুইয়ে দেয়। সন্ধ্যা উৎরে যাবার পরও বাজারে যাওয়া বন্ধ রেখে এ বাড়িতেই অনেক রাত অবধি কাটায়। খবরের কাগজ পড়ে থাকে নিপাট ভাঁজ করা। কেউ সেদিকে ফিরেও তাকায় না। পরদিন সকালে ঢাকা থেকে নারী অধিকার বিষয়ক এক সংগঠনের বেশ ক'জন কমর্ী আসে লতিফ ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করতে। এরই মাঝে তারা ফরিদুলের বাড়ি গিয়ে তার বাপ-মা-স্ত্রী-পুত্রের সঙ্গে দেখা করেছে, কথা বলেছে। নূরী হত্যা মামলার বিষয়ে তারা আইনগত সহায়তা দিতে চায়। অসুস্থতার কারণে লতিফ ডাক্তার প্রথমে তাদের সঙ্গে কথা বলতেই চায়নি। মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে থেকেছে। ঢাকা থেকে আগতদের মধ্যে চোখে চশমাআঁটা এক মহিলা লতিফ ডাত্তারের মাথায়- কপালে হাত বুলিয়ে নানান কৌশলে প্রশ্ন করে, এমনকি নূর কিংবা ফরিদুল যদি আপনার ছেলে/মেয়ে হতোঃ এরকম আবেগময় প্রসঙ্গ তুলে তাকে কথা বলানোর চেষ্টা করে। সে কেবল চোখ বন্ধ করে ডানে বামে সামান্য মাথা দুলিয়ে ঘোষণা করে-লিয়াকত আমার ছেলে।
উপস্থিত সকলে হতাশ হয়। লিয়াকতের পিতৃপরিচয় কারো অজানা নয় এবং সেটা আবার নতুন করে শোনারও কোনো প্রয়োজন নেই। চশমাপরা মহিলা তবু এগিয়ে আসে, কপালে মমতামাখা হাত রেখে সে বলে,
হঁ্যা, লিয়াকত আপনার ছেলে, আমাদেরও ভাই। কিন্তু সেই ভাই বিপথগামী হলে তখন তো ঃ
লতিফ ডাক্তারের নিমীলিত চোখ খুলে যায়। প্রবল বেগে হাত নেড়ে জানায়, লিয়াকতের কোনো বোন নেই। মা নেই। মাতৃগর্ভ লাগেনি।
লিয়াকতের মা ডুকরে ওঠে। পাঁচ কন্যার পর এই এক পুত্র সে পেটে ধরেছে। অথচ সবই আজ ওই লোকটির কাছে মিথ্যে হয়ে গেছে এ কথা ভাবতেই তার বুক ফেটে যায়। দু'একজন প্রতিবেশী তাকে সান্ত্বনা দিতে তৎপর হয়। সহসা মখলেস মেম্বারের ছেলে মোহন ঘরে ঢুকে সবাইকে তটস্থ করে তোলে-আপনারা কারা, কেন এসেছেন, কার পারমিশনে এসেছেন, কী চান আপনারা? এরকম অজস প্রশ্ন তার। কিন্তু কোনো প্রশ্নের জবাব শোনার আবার ধৈর্য নেই তার। বোধ হয় প্রয়োজনও নেই। প্রশ্ন শেষ হতে না হতেই সে নির্দেশ জারি করে-যান, আপনারা এখান থেকে বেরিয়ে যান!
ঘটনার আকস্মিকতায় সকলে হকচকিয়ে গেলেও লতিফ ডাক্তার গা ঝাড়া দিয়ে উঠে বসে। মোহন তৎক্ষণাৎ এগিয়ে আসে, আহা আহা করে ওঠে, আপনি অসুস্থ মানুষ। আপনি উঠছেন কেন চাচা? শুয়ে রেস্ট নেন।
সবাইকে চমকে দিয়ে লতিফ ডাক্তার ঘোষণা করে, আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি।
মোহন অতিশয় ব্যস্ত হয়ে পড়ে-আপনি শুয়ে থাকেন তো চাচা! খবর পাঠানো হয়েছে, লিয়াকত এসে আপনাকে হাসপাতালে নিয়ে যাবে। এখন চোখ বুঁজে রেস্ট নেন। পিছন ফিরে আবারও ধমকে ওঠে মোহন-আপনারা যান। চলে যান। অসুস্থ মানুষকে নিয়ে টানাটানির একশেষ! লতিফ ডাক্তার উঠে দাঁড়ায়, চশমা আঁটা মহিলার দিকে হাত বাড়িয়ে বলে, ওদের সঙ্গে আমিও যাব।
আপনি যাবেন? মোহন যেন খুবই বিস্মিত-আপনি কোথায় যাবেন?
যেখানে গেলে নূরী হত্যার, ফরিদুল হত্যার বিচার হবে সেইখানে যাব।
খুব প্রশান্তি ভঙ্গিমায় একটুখানি হেসেও ওঠে লতিফ ডাক্তার। তারপর জানায়-আমি বলছি লিয়াকতের মা নেই, বোন নেই, ভাই নেই। আছে শুধু বাপ। বাপ হয়েই আমি ছেলের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেব-লিয়াকত ধর্ষণকারী, লিয়াকত হত্যাকারী, লিয়াকতঃ।
==========================
গল্প- 'ঝড়ের রাতে' by প্রচেত গুপ্ত  গল্প- 'শুধু একটি রাত' by সাইপ্রিয়েন এক্ওয়েন্সি। অনুবাদ বিপ্রদাশ বড়ুয়া  গল্প- 'পিতা ও কুকুর ছানা' by হরিপদ দত্ত  স্মরণ- 'শওকত ভাই : কিছু স্মৃতি' by কবীর চৌধুরী  সাহিত্যালোচনা- 'রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে পালাকারের নাটক  স্মরণ- 'আবদুল মান্নান সৈয়দ : কবি ও প্রাবন্ধিক' by রাজু আলাউদ্দিন  স্মরণ- 'সিদ্ধার্থ শংকর রায়: মহৎ মানুষের মহাপ্রস্থানে by ফারুক চৌধুরী  গল্প- 'ফাইভ স্টার' by সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম  গল্প- 'নূরে হাফসা কোথায় যাচ্ছে?' by আন্দালিব রাশদী  গল্প- 'হার্মাদ ও চাঁদ' by কিন্নর রায়  গল্প- 'মাটির গন্ধ' by স্বপ্নময় চক্রবর্তী  সাহিত্যালোচনা- 'কবি ওলগা ফিওদোরোভনা বার্গলজ'  গল্পিতিহাস- 'বালিয়াটি জমিদারবাড়ির রূপগল্প' by আসাদুজ্জামান  ফিচার- ‘কাপ্তাই লেক:ক্রমেই পতিত হচ্ছে মৃত্যুমুখে' by আজিজুর রহমান  রাজনৈতিক আলোচনা- 'ছাত্ররাজনীতি:লেজুড়বৃত্তির অবসান আজ জরুরি by বদিউল আলম মজুমদার  কৃষি আলোচনা- 'কৃষিজমি রক্ষার দায় সবার' by আফতাব চৌধুরী  শিল্পি- 'আমি যে গান গেয়েছিলেম...কলিম শরাফী' by জাহীদ রেজা নূর  আলোচনা- 'হাওয়ার হয়রানি নামে ঢেকে যায় যৌন




দৈনিক ইত্তেফাক এর সৌজন্য
লেখকঃ রফিকুর রশীদ


এই গল্প'টি পড়া হয়েছে...
free counters

No comments

Powered by Blogger.