হানিয়া হত্যাকাণ্ডে ইরানের জনমানসে নানা প্রশ্ন!

হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে কে বা কারা হত্যা করেছে এ বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়। তবে তিনি যে হত্যার স্বীকার হয়েছেন এ বিষয়টি নিশ্চিত। কিন্তু ইরানের মাটিতে একজন মিত্রের এমন মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে দেশটির বিপ্লবী গার্ডের শক্তিমত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ইরানের সাধারণ জনগণের মনে বিপ্লবী গার্ডের ব্যর্থ হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কীভাবে একজন অতিথিকে ইরানের ভিতরেই হত্যার সুযোগ পেল দুর্বৃত্তরা, সে বিষয়ে প্রশ্ন করছেন দেশটির রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। বলা হচ্ছে এতে দেশটির পররাষ্ট্র বিভাগ বেশ চাপে পড়তে যাচ্ছে।

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক গণমাধ্যম মিডেলইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হানিয়াকে হত্যার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এরপর এভাবে চোরাগোপ্তা হামলায় কিভাবে এমন একজন উচ্চপদস্থ নেতাকে হত্যা করতে পারে দুর্বৃত্তরা, এখন জনমনে শুধু এসব প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। যেখানে ইরানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা জোরদার করতে বিপ্লবী গার্ডের মতো চৌকস একটি দল রয়েছে।

এভাবে ইরানের অভ্যন্তরে ঘনিষ্ঠ মিত্রের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার বিষয়টিতে হতবাক হয়েছে ইরানের জনগণ। হামাস এবং ইরানের দাবি ইসরাইল এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ইরানে কী এখনও ইসরাইলি গোয়েন্দা বাহিনীর নেটওয়ার্ক শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে? মাত্র কয়েকদিন আগেই ইরানের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী এসমেইল খতিব গর্ব করে বলেছিলেন যে, তারা ইরানে মোসাদের নেটওয়ার্ক ধ্বংস করেছে।
কিন্তু হানিয়া হত্যার মধ্য দিয়ে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তায় দুর্বলতাই যেন প্রকাশ পেল আরেকবার। ইরানের পার্লামেন্টের সদস্য হোসেইন-আলি হাজি ডেলিগানি বলেছেন, ইসমাইল হানিয়া হত্যাকাণ্ডে অনুপ্রবেশকারীদের উপস্থিতি অস্বীকার করা যায় না। ইসরাইলকে প্রতিশ্রুতির চেয়ে কঠোর জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওই নেতা।

ইরানের সাবেক সংসদ সদস্য আলী মোতাহারী বলেছেন, ইরানিরা প্রশ্ন তুলেছে জায়নবাদীরা কীভাবে তেহরানে তাদের অতিথি হানিয়ার অবস্থান নিশ্চিত করতে পেরেছে? মানুষের মনে সন্দেহ জেগেছে মে মাসে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম রাইসির মৃত্যু কি স্বাভাবিক ছিল নাকি তিনিও মোসাদের লক্ষ্যবস্তু হয়েছিলেন?

হানিয়ার হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ যেন আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। এদিকে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা ইতোমধ্যেই ইসরাইলে হামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে খবর প্রকাশিত হয়েছে। তবে তেহরানের সর্বশেষ বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশটির নিরাপত্তার ব্যর্থতা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে বার বার। 

No comments

Powered by Blogger.