শিক্ষায় ঘুষ-দুর্নীতি ‘ওপেন সিক্রেট’

শিক্ষা প্রশাসনে অনিয়ম-দুর্নীতি, হয়রানি, ভোগান্তি ও ঘুষবাণিজ্য অনেকটাই ‘ওপেন সিক্রেট’। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এর অধীন বিভিন্ন সংস্থার সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে গত কয়েক বছর ধরেই ঘুষ-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ‘উপুরি’ না দিলে যেমন উন্নয়ন কাজ বা এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন সঠিকভাবে মেলে না, তেমনি এমপিওভুক্তি, সরকারি স্কুল-কলেজে বদলি-পদায়ন, জাতীয়করণের কাজ, পদোন্নতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে বৈধ ও যৌক্তিক সেবাও পাওয়া যায় না। বরং ঘুষ না দিলে উল্টো সেবা প্রার্থীদের সীমাহীন হয়রানি-ভোগান্তির শিকার হতে হয়। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ৩৯ দফা সুপারিশে ইঙ্গিত মিলেছে এসব দুর্নীতির। শুধু তাই নয়, রোববার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের এক বক্তব্যেও পরোক্ষভাবে উঠে এসেছে শিক্ষা খাতের এসব অনিয়মের চিত্র। মন্ত্রীর এমন বক্তব্যে শিক্ষা খাতের প্রকৃত চিত্র উঠে এসেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে মন্ত্রীর এমন বক্তব্যকে দায়িত্বজ্ঞানহীন হিসেবে উল্লেখ করে তারা বলেন, এতে ভয়াবহ পরিস্থিতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। রোববার ডিআইএর (পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর) এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘দায়িত্ব নেয়ার পর সব সংস্থার সঙ্গে আমি বসেছি। তখন বলেছি, দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। সব জায়গায় এ কথা বললেও ইইডির (শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর) সভায় বলেছি, আপনারা ভালো কাজ করবেন। আপনারা ঘুষ খাবেন, কিন্তু সহনশীল হয়ে খাবেন। কেননা আমার সাহসই নাই বলার যে, আপনারা ঘুষ খায়েন না।’
ওই সভায় শিক্ষামন্ত্রী ঘুষ-দুর্নীতি প্রসঙ্গে আরও বলেছেন, ‘খালি অফিসাররাই যে চোর তা না, মন্ত্রীরাও চোর। আমিও চোর। জগতে এমনই চলে আসছে। তবে সবাইকে এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে।’ এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, ‘মন্ত্রী ঘুষের ব্যাপারে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে শিক্ষা প্রশাসনের বাস্তব চিত্রই ফুটে উঠেছে। ব্যবস্থা নেয়ার মালিক মন্ত্রী। তিনি দায়িত্বশীল ব্যক্তি। তিনি এমন বক্তব্য দেয়ার অর্থই হচ্ছে ঘুষ মেনে নিলেন তিনি। এটা পারেন না। দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য এটা। এতে বোঝা যাচ্ছে আমাদের ভবিষ্যতে কী অপেক্ষা করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মন্ত্রীর ঘুষ-দুর্নীতি মেনে নেয়ার মানে হচ্ছে, শিক্ষকরা ঘুষ ও অন্যায়ের মধ্যে আছেন। এতে ক্ষতিকর দিক হচ্ছে, শিক্ষক নৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে যাচ্ছেন। তার নৈতিকভাবে যে শক্ত মেরুদণ্ড আমরা আশা করি, সেটা হবে না। ফলে শিক্ষার্থী তার কাছে নৈতিকতা বা আপস না করার শিক্ষা পাবে না।’ শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ যুগান্তরকে বলেন, ‘সহনশীল হয়ে ঘুষ খাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ঘুষ ঘুষই। এক টাকা হলেও ঘুষ। ১০ টাকা হলেও ঘুষ।’ রোববারে দেয়া বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী সোমবার যুগান্তরকে বলেন, ‘আমি এসব নিয়ে কোনো কথা বলব না। আপনারা যা ইচ্ছা লেখেন। সেটা নিয়ে আমি মাথা ঘামাই না।’ তিনি যোগ করেন, ‘যারা (সাংবাদিক) হিউমার (ব্যঙ্গ-কৌতুক) বোঝে না, তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাই না।’ তবে মন্ত্রীর ওই বক্তব্যের বিষয়ে সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘শিক্ষামন্ত্রী ডিআইএর অতীতের/৮ বছর আগের উদাহরণ দিতে গিয়ে ডিআইএর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বর্তমানে পিয়ার ইন্সúেকশন ও ডিজিটাল মনিটরিং ব্যবস্থা চালুর ফলে এ অবস্থার অনেক পরিবর্তন ও উন্নতি হয়েছে। ডিআইএর কর্মকর্তাদের কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি সহ্য করা হবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী ওই সভায় আরও বলেন, সম্প্রতি ডিআইএর একজন কর্মকর্তাকে দুর্নীতির প্রমাণসহ দুদকের সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়েছে। মন্ত্রী ঘুষ-দুর্নীতি বিষয়ে ডিআইএসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্থার প্রতি জিরো টলারেন্স নীতি স্মরণ করিয়ে দেন।’ নুরুল ইসলাম নাহিদ ২০০৯ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেন। শিক্ষার উন্নয়নে এরপর তিনি নানা ইতিবাচক উদ্যোগ নেন। তবে বিতর্ক এবং সেবা প্রার্থীদের হয়রানি-ভোগান্তি ও ঘুষ কাণ্ডের অভিযোগও কম ছিল না। ২০০৯ সালে মন্ত্রীর একান্ত ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (এপিএস) হিসেবে নিয়োগ পান শিক্ষা ক্যাডারের একজন সহকারী অধ্যাপক। এর আগে (১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে) নুরুল ইসলাম নাহিদ যখন শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন, তখনও একই কর্মকর্তা ছিলেন তার এপিএস। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, ওই কর্মকর্তা শিক্ষা বিভাগে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেন। অসাধু কর্মকর্তারা ছিলেন সেই সিন্ডিকেটের সদস্য। সিন্ডিকেটটি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি), ডিআইএ, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর (ইইডি), পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), বিভিন্ন প্রকল্প, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডে রাজত্ব কায়েম করে।
ওই সিন্ডিকেটের অপকর্মে ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে সরকারি হাইস্কুলের এক শিক্ষক নেতা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের সূত্র ধরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর তৎকালীন একজন অতিরিক্ত সচিবকে দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু সেই কমিটির প্রতিবেদন অদ্যাবধি আলোর মুখ দেখেনি। বরং বিভিন্ন দফতরে উল্লিখিত সিন্ডিকেট সদস্যদের আসন আরও পাকাপোক্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, গত কয়েক বছর ধরে নানা কারণে বিতর্কিত হয়েছে শিক্ষা খাত। শিক্ষা বিভাগের কাজের মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত শিক্ষা ভবন। সেখানে মাউশি, ডিআইএ, ইইডি এবং বিভিন্ন প্রকল্পের অফিস আছে। এর মধ্যে ঘুষ ও শিক্ষকদের হয়রানির অভিযোগে মাউশিতে বিভিন্ন সময়ে ঝটিকা অভিযানেও চালিয়েছেন মন্ত্রী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অভিযানকালে তিনি কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইতেন যে, তারা ঘুষ খান কিনা। জবাবে সবাই ‘না’ বলতেন। মন্ত্রীর এমন প্রকাশ্য প্রশ্নে অনেকেই হাসতেন এ বলে যে, ঘুষ খেলে কেউ তা স্বীকার করে কিনা। জানা গেছে, ঝটিকা এক সফরে গিয়ে শিক্ষক হয়রানির অভিযোগে ‘ক’ আদ্যাক্ষরের এক কর্মকর্তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে ফরিদপুরে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু সেই কর্মকর্তাকেই কয়েক মাসের মধ্যে ঢাকা কলেজে পদায়ন করা হয়। সংশ্লিষ্টদের আরও অভিযোগ, নুরুল ইসলাম নাহিদের সময়কালে এখন পর্যন্ত মোটা দাগে যে ক’টি সফলতা উল্লেখ করা হয় তার মধ্যে অন্যতম বছরের প্রথমদিকে বিনামূল্যে বই বিতরণ। আগে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত বিনামূল্যের বই দেয়া হলেও এখন দশম শ্রেণী পর্যন্ত পাচ্ছে। কিন্তু এসব বইয়ের কাগজ, মুদ্রণ, বাঁধাই নিন্মমানের। এনসিটিবিতে এ বইকেন্দ্রিক একটি চক্র গড়ে উঠেছে। তারা বইকেন্দ্রিক যত দুর্নীতি করা যায় তার সবই করছে। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) গবেষণাও করেছে। ১৩ নভেম্বর প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে সংস্থাটি উল্লেখ করেছে, দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হয়েছে এনসিটিবিতে। পাঠ্যবই ও কারিকুলাম রচনা, কাগজ কেনা ও মুদ্রণের টেন্ডারসহ ১৬ ধাপে ১৭ ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি হয়ে থাকে। চেয়ারম্যান থেকে পিয়ন পর্যন্ত সবাই অবৈধভাবে সম্মানী নিচ্ছেন। এর আগে একই সংস্থা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আরেকটি গবেষণা করে। তাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন, ভিসি নিয়োগসহ শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন কাজে লেনদেন ও দুর্নীতির খতিয়ানসহ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খাতে ধাপে ধাপে দুর্নীতি অনিয়মের তথ্য তুলে ধরা হয়। গত কয়েক বছরে টিআইবি এভাবে শিক্ষার চারটি খাত নিয়ে কাজ করে। অপর দুটি হচ্ছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ ও প্রশ্ন ফাঁস। টিআইবির মতে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক নিয়োগে ৩ থেকে ২০ লাখ টাকা লেনদেন হয়। এ লেনদেনের সঙ্গে ভিসি, শিক্ষক নেতা, ছাত্রনেতাসহ ক্ষমতাসীন দলের নেতারা জড়িত। প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার বিভিন্ন ধাপ দেখিয়ে দিয়েছিল টিআইবি।
শুধু টিআইবিই নয়, দুদকও শিক্ষা বিভাগ নিয়ে বর্তমানে কাজ করছে। ইতিমধ্যে ১৩ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তারা একটি প্রতিবেদন পাঠায়। তাতে প্রশ্নপত্র ফাঁস, নোট বা গাইড, কোচিং বাণিজ্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাজে স্বচ্ছতা, এমপিওভুক্তি, নিয়োগ ও বদলিসহ শিক্ষা খাতে নানা ধরনের দুর্নীতির উৎস বন্ধের জন্য সুনির্দিষ্ট ৩৯টি সুপারিশ করা হয়। দুদক সূত্র জানিয়েছে, ওই ৩৯টি ক্ষেত্রেই দুর্নীতির ঝুঁকি আছে। ২০০৯ সালের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় নানা সময়ে নানাভাবে বিতর্কের মুখে পড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত প্রশ্নফাঁস ইস্যু। এ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী একেক সময় একেক কথা বলেছেন। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর প্রথমে ২০১১ সালে সরাসরি অস্বীকার করেন। অথচ তখন গণমাধ্যমগুলো তথ্য-প্রমাণসহ লিখেছিল। একটি পর্যায়ে ২০১৪ সালে এইচএসসির প্রশ্ন ফাঁস হলে তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব (বর্তমান সচিব) সোহরাব হোসাইনের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে প্রশ্ন ফাঁস প্রমাণিত হয়। এভাবে প্রশ্ন ফাঁস অব্যাহত থাকে। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষামন্ত্রীসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলতে শুরু করেন, ফাঁস বলতে দু-তিন দিন আগে প্রশ্ন বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনা বুঝায়। কিন্তু সেটি ঘটছে না। পরীক্ষার আধা ঘণ্টা আগে অসৎ শিক্ষকরা ফাঁস করছেন। সর্বশেষ গত সপ্তাহে দুদকের সঙ্গে বৈঠকে প্রশ্ন ফাঁসের ইস্যুতে শিক্ষামন্ত্রী একরকম অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন। ২০১২ সালে কোচিং নীতিমালা করার নামে মন্ত্রণালয় প্রকারান্তরে (কোচিংকে) অফিসিয়াল স্বীকৃতি দেয়। এর পরই ভয়াবহ আকার ধারণ করে কোচিং বাণিজ্য। গণসাক্ষরতা অভিযানের (ক্যাম্পে) ২০১৪ সালের এক গবেষণায় কোচিংয়ের ভয়াবহ চিত্র বেরিয়ে এসেছে। সৃজনশীল শিক্ষপদ্ধতি নিয়েও সমালোচনা আছে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং কোনো ধরনের প্রস্তুতি না নিয়েই একের পর এক বিভিন্ন বিষয়ে প্রবর্তন করা হয় এ পদ্ধতি। এতে কোচিং বাণিজ্যকে সম্প্রসারণ করা হয়েছে বলে ঘোরতর অভিযোগ আছে। এ ছাড়া গত কয়েক বছর ধরে শিক্ষার মান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সচেতন অভিভাবক ও দেশের সিনিয়র নাগরিকরা। প্রশ্ন ফাঁস এবং পরীক্ষার হলের ভেতরে অসাধু শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে চলে নকল। পাসের হার বাড়াতে অকাতরে নম্বর দেয়ার অভিযোগও উঠেছে। শুরুর দিকে শিক্ষামন্ত্রী তা অস্বীকার করতেন। পরে অবশ্য শিক্ষার মান উন্নয়নে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন, তাদের পরামর্শমতো বই আধুনিকায়ন, পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন পদ্ধতি সংশোধন, পরীক্ষার হলে কঠোর হওয়ার মতো পদক্ষেপ নেন তিনি। দেশের প্রত্যেকটি উপজেলায় একটি করে সরকারি স্কুল ও কলেজ করার প্রকল্প খোদ প্রধানমন্ত্রীর। সে অনুযায়ী সরকারি কলেজবিহীন উপজেলায় একটি করে স্কুল ও কলেজ জাতীয়করণ হচ্ছে।
কিন্তু সারা দেশে জাতীয়করণ হওয়া স্কুল ও কলেজের কাজেও নানা দুর্নীতি, শিক্ষকদের ভোগান্তি ও ঘুষ বাণিজ্যের শিকার হতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের। এদিকে জাতীয়করণ ইস্যুতেও তৈরি হয়েছে বিশৃঙ্খলা। পিএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষকরা আন্দোলনে নেমেছেন। কলেজ বন্ধ করে তারা কর্মবিরতি করেন। জানুয়ারিতে একটানা তিন দিন এ ধরনের কর্মসূচি পালনের ঘোষণা আছে তাদের। সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের এক সমন্বয় সভা সামনে রেখে শিক্ষামন্ত্রী কর্মকর্তাদের কাছে অনানুষ্ঠানিক ‘নোট’ পাঠান। তাতে জাতীয়করণ শিক্ষকদের ‘ননক্যাডার’ করার বিষয় উল্লেখ করেন। এটাই পিএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষকদের সমর্থনস্বরূপ বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়া নিয়ে নানা নাটক হয়েছে। ২০১০ সাল থেকে ছয়বার আলটিমেটাম দেয়া হয় এসব বিশ্ববিদ্যালয়কে। এর মধ্যে পঞ্চমবারের আলটিমেটাম শেষ হয় গত ডিসেম্বরে। তখন কমিটি গঠন করে অবস্থা মূল্যায়নের আড়ালে ফের ছয় মাস দেয়া হয়। এর পরও বেশির ভাগ স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি। এরপর ষষ্ঠবারের জন্য দেয়া আলটিমেটাম চলতি মাসে শেষ হওয়ার কথা আছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হয়নি।

No comments

Powered by Blogger.