পিয়াস করিমের ভার বইবে না শহীদ মিনার! by ইয়াছিন মাহমুদ

ড. পিয়াস করিমের মৃত্যুতে  অনেকে উল্লসিত হয়েছেন। কারণ স্যার যে হক কথাগুলো জাতির সামনে তুলে ধরতেন। এমনকি বহুবার তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে।  নানাভাবে হয়রানির সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। তার মৃত্যুর পরও তা থেমে ছিল না। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেছেন, যে দেশে গুণীর কদর নেই; সে দেশে গুণী জন্মায় না। ড. পিয়াস করিম বরাবরই এ দেশের মাটি ও মানুষের কল্যাণে কথা বলেছেন। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের কথা বলেছেন। ড. পিয়াস করিমের মতো বুদ্ধিজীবীকে শহীদ মিনারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। আজ জানতে বড় ইচ্ছা করে স্বাধীনতা ও শহীদ মিনার শুধু কি একটা গোষ্ঠীর? নাকি গোটা জাতির? এটা কি কারো  পৈতৃক সম্পত্তি? কারো আজ বুঝতে বাকি নেই ড. পিয়াস করিম স্যার যদি আওয়ামী লীগের মিথ্যা সাফাই গাইতেন তাহলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালনকারী হতে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা হতো। কিন্তু সেটি তিনি করেননি। তাই আজ তাকে রাজাকার হতে হলো। এ দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপরে ঘোষণা শুনে অবাক হয়েছি। ড. পিয়াস করিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র ছিলেন। সাবেক একজন ছাত্র হিসেবে তার লাশ শহীদ মিনারে  নেয়াটা ছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপরে গৌরবের বিষয়। কিন্তু আমরা দেখলাম তার উল্টোটা। সেই ছেলেবেলার কথা ২৬ মার্চ, কিংবা ২১শে ফেব্র“য়ারিতে সব বন্ধুরা মিলে শহীদ মিনারে ফুল দিতে যেতাম। কেউ তো আমাদের ঠেলে দিত না।  কিংবা নিষেধ ছিল না। ভাবতাম শহীদ মিনার সবার জন্য। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর অধিকার সবার রয়েছে। কিন্তু আজ কী দেখতে হচ্ছেÑ শহীদ মিনার মানে আওয়ামী লীগ। আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তারা ছাড়া আর কেউ জানে না। এ দিকে শহীদ মিনার এলাকায় সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহার, মানবজমিন সম্পাদক ও জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপক মতিউর রহমান চৌধুরী, নিউএজ সম্পাদক ও টকশো আলোচক নূরুল কবির। সাপ্তাহিক-এর সম্পাদক গোলাম মোর্তজা, আইনজীবী ড. তুহিন মালিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আমেনা মহসিন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। সরকার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপরে নির্লজ্জ দৃষ্টান্ত স্থাপন ইতিহাস কখনো মা করবে না। এভাবে আর কত দিন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ফেরিওয়ালাদের দাম্ভিকতা দেখতে হবে।
লেখক : সাংবাদিক

No comments

Powered by Blogger.