অবাধ নির্বাচনের তাগিদ বৃটিশ মন্ত্রীর

অবাধ ও দায়বদ্ধ নির্বাচনের তাগিদ দিয়েছেন বৃটিশ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী লিন ফেদারস্টোন। গতকাল বিকালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সফররত বৃটিশ সরকারের ওই প্রতিনিধি বলেন, এমন নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রতিনিধিত্বশীল রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে বসতে হবে। সংলাপের আপাতত কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বিশেষ করে সরকারের তরফে কোন উদ্যোগ না থাকার বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বৃটিশ মন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আমিও এ নিয়ে উদ্বিগ্ন, তবে আমি মনে করি দেশের মানুষের প্রতি প্র্রত্যেক রাজনৈতিক দলের দায়বদ্ধতা আছে। আশা করি এটি মনে করে তারা এগিয়ে আসবেন, সমাধানের একটি পন্থা বের করবেন। এ সময় ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে বৃটিশ সরকারের ওই প্রতিনিধি ক্যামেরন সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সাঈদা ওয়ার্সিকে উদ্ধৃত করে বলেন, ওই নির্বাচন নিয়ে আগেও বলা হয়েছে। এটি হয়তো সাংবিধানিকভাবে সঠিক ছিল, কিন্তু বেশির ভাগ আসনে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। অর্ধেকের বেশি ভোটার তাদের অধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। অনেক সংসদ সদস্যকে ভোট ছাড়াই নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। এমন চিত্র হতাশাজনক।
নারীদের বিয়ের বয়স সর্বনিম্ন ১৬ করার যে প্রস্তাব নিয়ে সরকারের নীতিনির্ধারণী মহলে আলোচনা হচ্ছে, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, এটি হলে তা হবে বর্তমান সরকার গৃহীত নীতি এবং বৈশ্বিক গার্ল সামিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া অঙ্গীকারের স্ববিরোধিতা। সমপ্রতি লন্ডনে অনুষ্ঠিত গার্ল সামিটে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশী নারীদের ১৫ বছর বয়সের নিচে বিয়ে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ১৮ বছর বয়সের নিচে বিয়ে বন্ধে উদ্যোগ নেয়ার অঙ্গীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখন যদি বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স ১৬ করা হয়, তবে তা হবে প্রধানমন্ত্রীর ওই ঘোষণার স্ববিরোধী। ঢাকায় আসার পর সরকারের মন্ত্রী ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে, সেই প্রসঙ্গ টেনে বৃটিশ মন্ত্রী লিন ফিদারস্টোন বলেন, তারা আমাকে বলেছেন এটি এখনও আলোচনার পর্যায়েই আছে। এটাকে আইনে পরিণত করা হবে এমন কোন ইঙ্গিত তাদের কথায় পাইনি। মন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেই বাল্যবিয়ে সবচেয়ে বেশি হয়। এটি কমিয়ে আনতে আরও কাজ করতে হবে। নারীদের নিজেদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার থাকা উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের নারী অধিকার পরিস্থিতির আরও উন্নতি প্রয়োজন। সংবাদ সম্মেলনে ঢাকাস্থ বৃটিশ হাইকমিশার রবার্ট গিবসনসহ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.