নায়কের নামে ব্যাঘ্র শাবকের নাম

সারাভানানের বয়স আট মাস। না, তিনি ভারতের তামিল অভিনেতা সারাভানান নন। তবে এ অভিনেতার নামেই রাখা হয়েছে ব্যাঘ্র শাবকটির নাম। ওটার আরো একটি পরিচয় রয়েছে, ওর বাবার নাম বিজয়, আর মা গনেশান। বিজয় মানে সেই বিজয়, যে কি না কিছু দিন আগে দিল্লি চিড়িয়াখানায় এক স্কুলছাত্রের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে হত্যা করেছিল। তামিল নায়কেরা তো এমনই করেন। শত্রু এলেই ঝাঁপিয়ে পড়েন। তারপর সব ছারখার করে ছাড়েন।

>>>দিল্লির এক চিড়িয়াখানায় বাঘের খাঁচার সামনে গিয়ে ছবি তলার চেষ্টা করছিল ওই ছাত্রটি l তবে এর উল্টোটাও হয়েছে বলে দাবি করেছেন অনেক দর্শক l তাদের কেউ বলেছেন, ২০ বছরের ওই ছাত্রটি লাফিয়ে বাঘের এনক্লোসারে ঢোকার চেষ্টা করছিল , কোনও আবার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, অসাবধানতাবশত ওই ছাত্রটি পা পিছলে বাঘের এনক্লোসারের মধ্যে পড়ে যায় l এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আচমকা চিত্কারে চিড়িয়াখানার বহু দর্শক বাঘের খাঁচার দিকে ছুটে গিয়ে দেখেন একটি পূর্ণবয়স্ক সাদা বাঘ একটি ছেলের ঘাড় কামড়ে ধরে রয়েছে l    
প্রথমে বাঘটি শান্তই ছিল l কিন্তু ছাত্রটি আতঙ্কিত হয়ে বাঘের দিকে পাথর ছুড়ে মারতেই হিংস্র হয়ে ওঠে বাঘটি l তারপরই সে আক্রমণ করে বসে ছাত্রটিকে l বাঘের আক্রমনে সারা শরীর থেঁতলে গিয়েছে ছাত্রটির l তবে ঘটনার ২০ মিনিট পরেও ঘুমপাড়ানি গুলি এনে বাঘটিকে নিরস্ত করতে পারেনি l  ১০ মিনিট ধরে বাঘের সঙ্গে লড়াই করে মারা যায় ছেলেটি l >>ঘটনাটি ঘটেছে ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর দেড়টা নাগাদ<<<
বিজয়ের আট মাস বয়সী সারাভানান এরই মধ্যে খাঁচার ভেতর দৌড়াদৌড়ি করছে। নতুন বাড়ি পেয়ে সে মহা খুশি। ওর ক্ষিপ্রতা দেখে মনে হয় সত্যি সত্যিই যেন ও তামিল নায়ক সারাভানানই।
আর এ কারণেই তার এই নামটি রেখেছেন ড. সেলভান। এ চিড়িয়াখানায় আশা পশুপাখিদের নাম তিনিই রাখেন। তার বাড়িও ভারতের তামিলনাড়ুতেই।
ড. সেলভান প্রথম দিকে নতুন প্রাণীদের দেখাশোনা করেন। পরে এদেরকে নাম দিয়ে পাঠিয়ে দেন খাঁচায়। বর্তমানে তার তত্ত্বাবধানে আরো ১০টি প্রাণী আছে। এদের একটি ভারতীয় হাতি। নাম দিয়েছেন রাজলক্ষ্মী। আফ্রিকান হাতিটির নাম রেখেছেন জেনেশান। গণ্ডারের নাম মহেশ্বরি এবং বুনো ভালুকটাকে তিনি সেনডিল বলেই ডাকেন। তবে তার সবচেয়ে প্রিয় পার্বতী নামের একটি লক্ষ্মী গণ্ডার।
তিনি বলেন, এসব প্রাণীকে আমি নিজের সন্তানের মতোই দেখাশুনা করি। একটু বড় হয়ে উঠতে থাকলে ওদের জন্য নামও খুঁজি। সাধারণত ভারতীয় সামাজিক প্রেক্ষাপটের ওপর ভিত্তি করেই নামগুলো রাখা হয়। প্রতিটি নামের পেছনেই অর্থপূর্ণ গল্প থাকে।
তবে বিশ্বের অন্যান্য চিড়িয়াখানায় প্রাণীদের নামকরণ হয় সাধারণত ওটাকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করার জন্য এবং পূর্ব পুরুষদের রেকর্ড সংরক্ষণে রাখার জন্য।
ড. সেলভান বলেন, আমাদের চিড়িয়াখানায় হঠাৎ বাইরে থেকে নতুন কোনো প্রাণী এলে ১০ থেকে ৪৫ দিন ওটাকে হাসপাতালে রাখি। হাসপাতালে ওদেরকে বোঝার চেষ্টা করা হয়। ওদের প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করা হয়। আর চিড়িয়াখানায় জন্ম হওয়া নতুন শাবকদের আমরা ছয় মাস পর্যবেক্ষণে রাখি। তখন অন্য পশুদের সাথেও মিশতে দেই। এ সময়ের মধ্যেই ওরা সবার সাথে বেশ মানিয়ে নিতে পারে। সূত্র : ওয়েবসাইট।

No comments

Powered by Blogger.