কাহালুর লাচ্ছা সেমাই by দুপচাঁচিয়া

ঈদ উপলক্ষে বগুড়ার কাহালু উপজেলার শেখাহার গ্রামে লাচ্ছা সেমাই তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে। এখান থেকে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই মেট্রিক টন লাচ্ছা সেমাই যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
গত বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, বগুড়া-নওগাঁ সড়কের শেখাহার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বেশ কয়েকটি লাচ্ছা তৈরির কারখানা। পুরো এলাকায় লাচ্ছা সেমাই ভাজার মৌ মৌ গন্ধ। কারখানাগুলোয় লাচ্ছা তৈরির কাজে ব্যস্ত কারিগরেরা। কোনো কথা বলার ফুরসত নেই তাঁদের। এসব সেমাই খাঁচিতে ভরে মিনিট্রাক ও ভটভটিতে করে পাইকারেরা নিয়ে যাচ্ছেন।
সাতটি কারখানার মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিন বছর ধরে এখানে লাচ্ছা ব্যবসার বড় ধরনের প্রসার ঘটেছে। এ বছর ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৩৫টি কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানায় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার শ্রমিক কাজ করেন। তিন পালায় শ্রমিকেরা দিন-রাত সেমাই তৈরি করছেন। রোজার দুই সপ্তাহ আগে থেকে লাচ্ছা তৈরির কাজ শুরু হয়। প্রথমে ময়দার দাম বস্তাপ্রতি (৭৪ কেজি) এক হাজার ৯০০ টাকা ছিল। তখন এক কেজি লাচ্ছা সেমাইয়ের দাম ছিল ৫৭ টাকা। এখন বস্তাপ্রতি ৩০০ টাকা দাম বেড়ে যাওয়ায় এক কেজি লাচ্ছার পাইকারি দাম ৬০ টাকা পড়ছে। তাঁরা আরও জানান, নামীদামি অনেক কোম্পানি এখান থেকে স্পেশাল লাচ্ছার অর্ডার দিয়ে তৈরি করে নিয়ে তাদের নিজস্ব প্যাকেটে ভরে বাজারজাত করে থাকে।
লাচ্ছা তৈরির কাজে নিয়োজিত কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী রুবাইদুল ইসলাম, নাজিম উদ্দিন, মামুন হোসেন জানায়, কলেজ বন্ধ, তাই তারা এ কাজ করছে। প্রতিদিন কাজ করে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করে। তারা আরও জানায়, তাদের মতো বেশ কয়েকজন ছাত্র লাচ্ছা বানানোর কাজ করছে।
নূর লাচ্ছা সেমাই কারখানার মালিক রুবেল হোসেন জানান, এ এলাকার লাচ্ছা সেমাইয়ের মান ভালো হওয়ায় দেশের সর্বত্র কদর রয়েছে। এখানকার তৈরি লাচ্ছা রাজধানী ঢাকা, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, জয়পুরহাট, রংপুর, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় যায়।
শেখাহার লাচ্ছা সেমাই মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘লাচ্ছার গুণগত মান রক্ষার জন্য আমরা ভালো মানের ময়দা ব্যবহার করি। ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে এ ব্যবসা করছি। বিএসটিআইয়ের অনুমোদনও নিয়েছেন কয়েকজন কারখানার মালিক।’

No comments

Powered by Blogger.