প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে মুরসিপন্থীদের বিক্ষোভ

জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদের বাইরে ইসলামপন্থী দল হামাসের
সমর্থকেরা গতকাল মুরসির সমর্থনে ও মিসরীয় সেনাপ্রধান আবদেল
ফাত্তাহ আল-সিসির বিরুদ্ধে মিছিল বের করে ষ ছবি: এএফপি
মিসরের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে পুনর্বহালের দাবিতে গতকাল শুক্রবারও রাজধানী কায়রোতে তাঁর হাজারো সমর্থক বিক্ষোভ করেছেন। যদিও আগের দিন দেশটির অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হুঁশিয়ারি দেন, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে। সেনাবাহিনী দুই সপ্তাহেরও বেশি আগে ইসলামপন্থী মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে। এর পর থেকেই মুসলিম ব্রাদারহুড তাদের নেতাকে পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চালিয়ে আসছে। ব্রাদারহুডের অভিযোগ, সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অবৈধভাবে মিসরের প্রথম গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। তিনি এখনো দেশের বৈধ প্রেসিডেন্ট। মুরসিকে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে সারা দেশে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে ব্রাদারহুড। এর অংশ হিসেবে গতকাল কায়রোর উপকণ্ঠে নাসার এলাকায় রাত-দিন চব্বিশ ঘণ্টা অবস্থানের জন্য তাঁবু গেড়েছেন দলটির কর্মী-সমর্থকেরা। মাগরিবের নামাজের পর হাজারো সমর্থক সেখানে জড়ো হয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল সিসির পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন। এদিকে দায়িত্ব গ্রহণের পর গত বৃহস্পতিবার টেলিভিশনে প্রথম দেওয়া ভাষণে মিসরের সেনা-সমর্থিত অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আদলি মানসুর বলেন, ‘আমরা এখন সংকটময় সময় পার করছি। কিছু লোক আমাদের সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে চায়। রক্তাক্ত পথে হাঁটতে চায়। কিন্তু আমরা শান্তি ও স্থিতিশীলতা চাই। তবে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ সংঘাত বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে।’ তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যারা বিক্ষোভের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করবে, আপনারাও তাদের মোকাবিলা করবেন। মুসলিম ব্রাদারহুডের জ্যেষ্ঠ নেতা এসাম এল-এরিয়ান গতকাল সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে এক বার্তায় বলেন, ‘আমাদের বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ উপায়ে চলবে। সারা দেশের স্কয়ারগুলোতে কর্মী-সমর্থকেরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করবেন।’ মুরসিপন্থীদের তাহরির স্কয়ারে আসা প্রতিরোধ করতে নীল নদের সেতুর ওপর সামরিক বাহিনীর সাঁজোয়া যান রাখা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে বিপুলসংখ্যক পুলিশ। মধ্যপ্রাচ্য সফরে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি গতকাল মিসরের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নবী ফাহমির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। এ সময় কেরি আশা প্রকাশ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার সফল হবে। মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র এ তথ্য জানান। মিসরের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ পশ্চিমা মিত্র যুক্তরাষ্ট্র চলমান এ সংকটের বিষয়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার ঘটনাকে সেনা অভ্যুত্থান বলে এখনো আখ্যা দেয়নি হোয়াইট হাউস। এ ঘটনাকে সেনা অভ্যুত্থান হিসেবে স্বীকার করলে মার্কিন আইন অনুযায়ী মিসরের সামরিক বাহিনীকে প্রায় ১৫০ কোটি ডলার সহায়তা বন্ধ করে দিতে হবে। গত ৩ জুলাই মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। এ সময়ের পর থেকে সংঘর্ষে অন্তত ৯৯ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের অধিকাংশই ৮ জুলাই কায়রোতে সেনাদের গুলিতে নিহত হন। এএফপি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.