চিকিৎসকদের কর্মবিরতির তিন দিন-বরিশালে ১৬ রোগীর মৃত্যু, হাসপাতাল ছেড়েছে ৩০০ জন

বরিশালের শেরে বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি তৃতীয় দিনের মতো চলছে। জরুরি চিকিৎসাসেবা ছাড়া সব ধরনের সেবা বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছে রোগীরা।
গত তিন দিনে হাসপাতাল থেকে প্রায় ৩০০ রোগীকে চিকিৎসার জন্য অনত্র সরিয়ে নিয়েছে তাদের স্বজনরা। এ ছাড়া গতকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতালে ১৬ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে।
গত সোমবার রাতে হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ ওঠে। রোগীর স্বজনরা কর্তব্যরত এক শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে মারধর করে। এরপর গত বুধবার সকাল ৮টা থেকে এই কর্মবিরতি শুরু করে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের সংগঠন।
এদিকে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে লাঞ্ছনাকারীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে গতকাল সকালে হাসপাতালের অভ্যন্তরে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। মিছিল শেষে তারা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেটে মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করে।
ইন্টার্নি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী হাসান বলেন, 'ঘটনার তিন দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। অথচ পুলিশ অপরাধীদের এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেনি। আগামী কালের (আজ শনিবার) মধ্যে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য ও তার ভাইবোনকে গ্রেপ্তার করা না হলে হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও অন্তঃবিভাগের সব চিকিৎসক একসঙ্গে আমাদের এই আন্দোলনে যোগ দেবেন।'
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ফেরদৌস আলম শিবিব বলেন, 'হাসপাতালের অন্য চিকিৎসকরা রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অভিযুক্তদের পুলিশ গ্রেপ্তার না করলে ধর্মঘট অব্যাহত রাখার বিষয়ে আমরা দৃঢ়।' বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অন্য চিকিৎসকরা ধর্মঘটকে যদি সমর্থন করে, তাহলে শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা চরমভাবে ব্যাহত হবে। অভিযুক্তদের আটক করার বিষয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শাহিদুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, পরিচালক বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু তাতে সুনির্দিষ্ট করে আসামি ও তার নাম-ঠিকানা উল্লেখ করা হয়নি। বিভিন্ন মাধ্যমে ওই পুলিশ সদস্যের ঠিকানা সংগ্রহ করে মামলার বিষয়ে তার সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করা হয়েছে। অভিযুক্তরা এলাকার হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তাদের আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.