বিদেশি চেইনশপের জন্য খুচরা বাজার উন্মুক্ত-ভারতজুড়ে ধর্মঘট ডেকেছে শ্রমিক জোট

ভারতে খুচরা বাজার বহুজাতিক চেইন শপগুলোর কাছে উন্মুক্ত করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আগামী বৃহস্পতিবার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে দেশটির শ্রমিক ইউনিয়নগুলো। গতকাল সোমবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানায় তারা।


এদিকে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চার অন্যতম শরিক দল তৃণমূল কংগ্রেস জানিয়েছে, এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মন্ত্রিসভা থেকে তাদের সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হতে পারে। আজ মঙ্গলবার এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে তারা। তবে সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করা হবে না।
শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর ধর্মঘটের সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যে সমর্থন জানিয়েছে প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। তারা ওয়ালমার্ট বা টেসকোর মতো বহুজাতিক চেইন শপগুলোকে ভারতে দোকান খুলতে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহবান জানিয়েছে।
১০ হাজার শ্রমিক সংগঠনের জোট অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স (সিএআইটি) জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দিনভর বিক্ষোভ করবে তারা। দেশের সব দোকান বন্ধ থাকবে। সংগঠনের সেক্রেটারি প্রবীণ খাণ্ডেওয়ালা বলেন, 'বহুজাতিক কম্পানিগুলো ভারতে ব্যবসা শুরু করলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে যাবে। কেননা প্রতিদ্বন্দ্বীদের নির্মূলে পণ্যমূল্য একেবারে কমিয়ে দেবে কম্পানিগুলো।' আগামী সপ্তাহে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
খুচরা বাজার বিদেশি চেইন শপগুলোর কাছে উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা প্রসঙ্গে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম। সম্প্রতি ভারত সরকার অর্থনৈতিক সংস্কারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। এসব ব্যবস্থার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কিছুটা কমাতে পারবে বলে আশা করেন তিনি।
তবে বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী নেতারা খুচরা বাজার উন্মুক্ত করে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। এই প্রক্রিয়ায় সুপারশপগুলোর বিদেশি অংশীদাররা ৫১ শতাংশের পর্যন্ত মালিক হতে পারবেন। বাকিটা হবেন ভারতীয়রা।
এদিকে সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে মন্ত্রিসভা থেকে দলের সদস্যদের প্রত্যাহার করা হতে পারে বলে জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে সরকারের ওপর থেকে এখনই সমর্থন সরিয়ে নেবে না তারা। গত শনিবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য দিল্লির সরকারকে ৭২ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন। সেই হিসাবে আজ সিদ্ধান্ত জানাবে দলটি। গত বছরও একই ধরনের একটি পরিকল্পনা প্রতিবাদের মুখে বাতিল করতে বাধ্য হয় কেন্দ্রীয় সরকার। সূত্র : বিবিসি, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.