পোলট্রি শিল্প নিয়ে বিতর্ক-ভোক্তাদের স্বার্থ উপেক্ষিত

ডিম আগে, না মুরগি_ এ নিয়ে পণ্ডিতদের বিতর্কের শেষ নেই। এ সমস্যার নিরসন না করেও মানুষ দিব্যি আছে। বাজারে মোরগ ও মুরগি আছে, ডিমও আছে। দেশি মোরগ-মুরগি যেমন আছে. তেমনি আছে 'ফার্মের' মোরগ-মুরগি। ডিমেরও প্রকারভেদ_ ফার্ম ও দেশি মুরগি। তবে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেশীয় মুরগির ডিম পাওয়া দুষ্কর।


এককালে গ্রামীণ নারীর ঘরে পালা মুরগির ডিমের স্থান নিয়েছে ফার্মের ডিম। রীতিমতো শিল্প হয়ে উঠেছে মুরগির মাংস ও ডিম উৎপাদন ব্যবস্থা। এর সঙ্গে সহায়ক শিল্পও গড়ে উঠছে। কোথাও উৎপাদন হচ্ছে খাবার, কোথাও ওষুধ। কেউ খামার করেছে মাংস উৎপাদনের জন্য, কেউবা ডিমের জন্য। আবার কিছু প্রতিষ্ঠান কেবলই বেছে নিয়েছে একদিনের বাচ্চা সরবরাহের কাজ। সব মিলিয়ে এ শিল্প বেশ বড়। শহর তো বটেই, এমনকি সুদূর পল্লী এলাকাতেও এখন ফার্মের মুরগির ডিম-মাংসের ব্যবসা জমজমাট। দামে এ মাংস দেশীয় জাতের মোরগ-মুরগির চেয়ে কিছুটা সস্তা। তবে ভোক্তাদের অভিযোগ, মালিকরা ক্রমাগত দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। একচেটিয়া ব্যবসায়ের অভিযোগ উঠছে। আবার ডিম-মাংসের উৎপাদকরা অভিযোগ করছেন একদিনের বাচ্চা উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের বিরুদ্ধে। ব্র্রয়লার মুরগির একদিনের বাচ্চা প্রতিটি বিক্রি হয় ৮০-৮২ টাকায় এবং লেয়ার মুরগি ৭৬ টাকা। অভিযোগ রয়েছে_ একদিনের বাচ্চা উৎপাদকরা সিন্ডিকেট করে বাচ্চার দাম বেশি নিচ্ছে। এর ফলে বাজারে মাংস ও ডিমের দাম বাড়ছে। বাজারে একটি ফার্মের মুরগির ডিম কিনতে এখন ৯ থেকে ১০ টাকা ব্যয় পড়ে। সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন পরামর্শের মধ্যে রয়েছে ডিম আমদানির সুবিধা প্রদান। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পরিস্থিতি সামাল দিতে ডিম আমদানির বিষয়টি বিবেচনা করছে। তবে এতে আপত্তি দেশীয় ফার্ম মালিকদের। তাদের বক্তব্য_ আমদানি করা ডিমের দাম অপেক্ষাকৃত কম পড়বে এবং এ কারণে তারা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে না। অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। বিপুলসংখ্যক লোক বেকার হবে। আর আমদানি-লবি বলছে, ভোক্তাদের স্বার্থই বড়। তারা যদি কম দামে ডিম পায়_ সেটাই সরকারের দেখা উচিত। এ বিতর্কও বোধ করি ডিম আগে, না মুরগি আগের মতো চলতে থাকবে। কিন্তু ভোক্তাদের স্বার্থে এ সমস্যার সমাধান কি একেবারেই অসম্ভব?
 

No comments

Powered by Blogger.