সময়ের প্রতিবিম্ব-আমার সাম্প্রতিক মিডিয়া ভাবনা by এবিএম মূসা

লন্ডনভিত্তিক কমনওয়েলথ প্রেস ইউনিয়ন একসময় সংবাদপত্র-জগতের জাঁদরেল একটি প্রতিষ্ঠান ছিল। দায়িত্ব ছিল মূলত কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর সংবাদপত্রের প্রাতিষ্ঠানিক স্বার্থরক্ষা। এ ছাড়া ছিল সাংবাদিকতার পেশাগত মানোন্নয়ন কর্মসূচি এবং এই লক্ষ্যে ১৯৬০ সাল থেকে তখনকার ৫০টি কমনওয়েলথভুক্ত দেশের সাংবাদিকদের দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ দান করে আসছিল।


পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি ছিল সেসব দেশে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার স্বাধীনতার ‘ওয়াচ ডগ’। শেষোক্ত কারণে তারা কমনওয়েলথ দেশগুলোর সংবাদপত্র-জগতে বিদ্যমান পরিস্থিতির নিয়মিত খোঁজখবর করত। প্রতিষ্ঠানটি (সিপিইউ) কমনওয়েলথভুক্ত দেশে সাংবাদিক নির্যাতিত হলে অথবা সংবাদপত্রের ওপর কোনো আঘাত এলে সম্মিলিত প্রতিবাদ জানাত। সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্র-সরকারপ্রধানদের সম্মেলনের আলোচ্যসূচি অন্তর্ভুক্ত করত। কালক্রমে ব্রিটিশ কমনওয়েলথের বন্ধন শিথিল হয়ে এলে সিপিইউ স্থবির হয়ে পড়ে, প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। প্রসঙ্গত, বিশ্বে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা সংরক্ষণে সাংবাদিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম শক্তিশালী ভূমিকা গ্রহণ করত আইপিআই তথা জেনেভাভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল প্রেস ইনস্টিটিউট। ইউরোপিয়ান কমিশন গঠিত হওয়ার পর এই প্রতিষ্ঠানটি মিডিয়ার ক্ষেত্রে অনেকখানি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।
বর্তমানে টিমটিম করে সিপিইউর বাতি যাঁরা জ্বালিয়ে রেখেছেন, মেরি ওয়াকার তাঁদের অন্যতম। আমি ১৯৬১ সালে সিপিইউ ফেলোশিপ নিয়ে ব্রিটেনে যাই। কর্মভিত্তিক তথা হাতে-কলমে পেশাগত মানোন্নয়নে বিভিন্ন পত্রিকায় হাতে-কলমে কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন, অক্সার্ডের কুইন এলিজাবেথ হাউসে বিভিন্ন কর্মশালায় অংশগ্রহণ ছিল প্রশিক্ষণ কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত। আমার পরের বছর গিয়েছিলেন বর্তমান ইনডিপেনডেন্ট-এর সম্পাদক মাহবুব আলম। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর গিয়েছেন এ এম মোফাজ্জল, পারভিন সুলতানা, নাসিমুন্নাহার নিনি ও রওশন আরা জলি। সিপিইউ প্রশিক্ষণই আমার সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। কমনওয়েলথ প্রেস ইউনিয়নের শাখা বা চ্যাপ্টার ছিল প্রতি সদস্যদেশে। এই চ্যাপ্টার সংশ্লিষ্ট দেশের সংবাদপত্রের ও সাংবাদিকতার পরিস্থিতি সম্পর্কে লন্ডনের প্রধান দপ্তরে নিয়মিত খবরাখবর পাঠাত। সিপিইউ সারা বিশ্বে সেই খবর ছড়িয়ে দিত। দীর্ঘদিন বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতি ছিলেন আহমদুল কবির, সম্পাদক ছিলাম আমি।
প্রতিষ্ঠানটি এখন বিখ্যাত সংবাদপত্রপাড়ার ফ্লিট স্ট্রিটের দ্বিতল ভবন থেকে ল্যান্ডার স্ট্রিটে ছোট্ট একটি কামরায় অন্তরীণ। বছর দুই আগে লন্ডনে গিয়েছিলাম সিপিইউর একটি আমন্ত্রণ পেয়ে। প্রতিষ্ঠানের হতশ্রী দুই কামরার কার্যালয়ে দেখা হলো মেরির সঙ্গে। ’৬১-তে যুবতী মেরি ছিলেন সহকারী কর্মকর্তা। এবার তাঁকে পেলাম সহকারী পরিচালক পদে। আমি ছাড়াও আরও দু-একটি দেশের প্রাক্তন ফেলো আমন্ত্রিত হয়ে এসেছিলেন। বিশেষ ছোটখাটো সম্মেলনটির উদ্দেশ্য ছিল সিপিইউর সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন। প্রস্তাবিত সম্মেলনে ৫০ বছর ধরে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের যাঁরা বেঁচে আছেন, তাঁদের অনেকে উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, সিপিইউ চলত কমনওয়েলথ দেশগুলোর রাষ্ট্রীয় অনুদান ও কমনওয়েলথ সচিবালয়ের আর্থিক সহায়তায়। এখন সেই সাহায্য-সহায়তা বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। তার পরও কমনওয়েলথ ইউনিয়ন তো আছে। প্রতিষ্ঠানটি সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করবে। বৈঠকের ফলাফল নিয়ে আলোচনা করব না। প্রতিষ্ঠানটির অতীত নিয়ে লেখাও আমার বর্তমান প্রতিবেদনের মুখ্য বিষয় নয়। এত দিন পর সিপিইউ প্রসঙ্গ নিয়ে কেন লিখছি তা ব্যাখ্যা করার জন্যই প্রতিষ্ঠানটির পশ্চাৎপট বর্ণনা করলাম।
গত রোববার দুপুরে প্রেসক্লাবে গিয়েছিলাম। দেখলাম সাংবাদিকদের বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ‘মানববন্ধন’ আর নাতিবৃহৎ সমাবেশ। ক্লাবে প্রবেশ করলাম, পরে বেরিয়েও এলাম। বের হওয়ার সময় কতগুলো ব্যানার, ফেস্টুন আর ছোটবড় সমাবেশ দেখে একটু থমকে দাঁড়ালাম। কারণ, সেদিনের মানববন্ধন আর প্রতিবাদসভার সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের পেশাজীবনের হালহকিকত ও অতীতের পেশাগত ঐতিহ্য জড়িত ছিল। তাই বর্তমান প্রজন্মের সাংবাদিক ভাইদের রাস্তায় দেখে জেনে নিলাম ব্যাপার কী। শুনলাম, আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক গ্রেপ্তার, চ্যানেল ওয়ানের সম্প্রচার নিষিদ্ধকরণ, যমুনা টিভির সম্প্রচার নিয়ে সরকারের তেলেসমাতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।
আজ থেকে নয়, আমার সাংবাদিকতার কৈশোরকাল পঞ্চাশের দশক থেকেই তো সব জানি, সমসাময়িক কখন কোন সরকার, কী কারণে, কোন অজুহাতে গণমাধ্যমের ওপর প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ উপায়ে কীভাবে ক্ষিপ্ত ‘ব্যবস্থা গ্রহণ করে।’ সেসব অপব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় নানা পন্থায় সরাসরি অথবা কৌশলী আন্দোলন করেছি। অহংবোধও হচ্ছে আমার, এসবে নেতৃত্বও দিয়েছি। তাই বাসায় এসে অবাক হয়ে ভাবছিলাম, কত ধরনের, কত চরিত্রের, কত বেশে, কত সরকার আসে আর যায়। কিন্তু গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সবার কাছেই কেন এক সময়ে অসহনীয় হয়। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করতে নানা অজুহাত তৈরি করে।
বিকেলে মেরির টেলিফোন পেয়ে অবাক হলাম। তিনি জানতে চেয়েছেন, বাংলাদেশের সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার বিপন্ন পরিস্থিতি সম্পর্কে যেসব খবর পাচ্ছেন, সবই সত্যি কি না। যাক, এদ্দিন পরে সিপিইউ, সাংবাদিকতার তথা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার বিপত্তি নিয়ে আবার মাথা ঘামাচ্ছে। মেরির প্রশ্নটির উত্তর দিতে গিয়ে বিপাকে পড়লাম। আমি কি তাঁদের এ-সম্পর্কীয় খবরের সত্যাসত্য ও প্রকৃত অবস্থার বিস্তারিত বিবরণ পাঠাতে পারি? প্রশ্নটি শুনে সকালে দেখা বিভিন্ন ‘প্রতিবাদ’ কর্মসূচির কথা মনে হলো। মেরির প্রশ্নে একটু বিব্রতও বোধ করলাম। স্বৈরতান্ত্রিক ও সামরিক শাসনকালেও আমাকে তৎকালীন ‘সংবাদপত্রের’ হালহকিকত নিয়ে প্রতিবেদন পাঠাতে হয়েছে। সেগুলোর সত্যতা ও বিশ্বস্ততা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেনি। কিন্তু গণতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থায় কোনো ধরনের অজুহাতে স্বাধীন মত প্রকাশে বাধা প্রক্রিয়ায় বিভিন্নতা ও কৌশলিক প্রক্রিয়ার বিবরণ তাঁদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হবে কি? কারণ, সংবাদপত্র বন্ধ করা, পরোক্ষ হুমকি, সাংবাদিক ঠ্যাঙানোর বর্তমান পন্থাগুলো পরোক্ষ হওয়ার কারণে সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন প্রদানে পক্ষে-বিপক্ষে যা বলব, তা মেরি বা সিপিইউ সদস্যদের স্বল্প দু-চার কথায় বোঝাতে পারব না। বলতে পারব না বাইরে থেকে সিপিইউ, আমেরিকান সাংবাদিক ফেডারেশন যতই উদ্বেগ প্রকাশ করুন, আমাদের সামগ্রিক সাংবাদিক সমাজের মধ্যে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া নেই, যেমনটি আমাদের কালে ছিল। দেশের বহুধাবিভক্ত সাংবাদিকদের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের কেন ধার নেই, তা কীভাবে ব্যাখ্যা করব?
শেষোক্ত বিষয়টি অর্থাৎ বর্তমানে বিভাজিত সাংবাদিক ও সংবাদকর্মীদের অবস্থানের প্রেক্ষাপটে স্মরণ করছি এ রকম পরিস্থিতিতে আমরা কী করতাম। এসব ক্ষেত্রে সমগ্র পাকিস্তানের সাংবাদিক, সংবাদপত্র কর্মচারী, সম্পাদক ও মালিক এককাট্টা হতেন। ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচিতে যাঁরা নেতৃত্ব দিতেন, তাঁদের নিজস্ব রাজনৈতিক বিশ্বাস ছিল। দলবাজি করতেন না। বর্তমানে সাংবাদিকেরা আপন রাজনৈতিক অবস্থানকে প্রাধান্য দিয়ে সাংবাদিকতা করেন, মিডিয়া পরিস্থিতি সে আলোকে বিবেচনা করেন। আমাদের সময় তো এমনটি ছিল না। ’৬২-তে আইয়ুবের কালাকানুনের বিরুদ্ধে সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট পত্রিকার মালিক অশীতিপর মওলানা আকরম খাঁ আমাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন। দলমতের ব্যবধান, রাজনৈতিক মতাদর্শের বিভিন্নতা ভুলে সমগ্র পাকিস্তানের তখনকার দিনের কয়েক শ সম্পাদক-সাংবাদিক, মালিক করাচিতে সম্মিলিত বিক্ষোভ জানিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আইয়ুবের শাসনের সমর্থক ছিলেন অনেকেই। এখন একটি সংবাদপত্রের ওপর আঘাত এলে প্রশ্ন ওঠে, ‘কোন দলের’। সাংবাদিক খুন হলে, মাথা ফাটালে বা ঠ্যাং ভাঙলে বলা হয়, ‘অমুক দলের ইউনিয়ন করে তো, বেশ হয়েছে।’
সাংবাদিক সমাজের বহুধাবিভক্ত নেতৃত্ব ক্ষেত্রবিশেষে কোনো অবস্থান নেওয়ার আগে নিজের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততাকে প্রাধান্য দেন। সাংবাদিক সমাজের এই অবক্ষয়ের সূচনা হয়েছিল বিএনপি সরকারের আমলে, তাদেরই ইন্ধনে তৎকালীন ক্ষমতাসীনদের বিভক্তকরণের মাজেজা এখন তাদের সমর্থক-মিডিয়া হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। এ নিয়ে বিস্তারিত কাহিনি বর্ণনা করতে হলে অনেক অপ্রিয় সত্য বলতে হয়। বলব না, ওপরের দিকে থুথু ফেললে নিজের গায়ে পড়ে। তবুও বলব, আমার পেশা অনুসারী অনুজদের ও তাদের ‘মাঝখানে দেয়াল’ প্রতিষ্ঠানের দুরবস্থার জন্য তারা নিজেরাই দায়ী। তাই তাদের বলছি, মানববন্ধন আর বিচ্ছিন্ন প্রতিবাদ মিছিল করার আগে এই দেয়ালটি ভাঙুন।
আসল প্রসঙ্গে আসি। ভাবছিলাম, মেরির প্রশ্নের একটি উত্তর তো দিতে হবে। বিস্তারিত বর্ণনা এড়িয়ে আমি তাঁকে বললাম, ‘তোমার কি মনে আছে, ৫০ বছর আগে লন্ডনে প্রশিক্ষণরত সাংবাদিকদের সিপিইউর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান লর্ড গ্যাভিন অ্যাস্টার কী বলেছিলেন?’ মেরির মনে থাকার কথা নয়। লর্ড অ্যাস্টার প্রতিটি দেশের প্রশিক্ষণগ্রহীতাদের জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘তোমাদের দেশে কি সংবাদপত্রের পূর্ণ স্বাধীনতা আছে (ডু ইউ হ্যাভ ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন)?’ যে যার দেশের অবস্থা বর্ণনা করল। দেশে তখন আইয়ুবের মার্শাল ল। সংবাদ প্রকাশ নিয়ন্ত্রিত। ইত্তেফাক-এর সম্পাদক জেলে, পত্রিকার ছাপাখানায় তালা দেওয়া হয়েছে। সংবাদ আর অবজারভার রোষানলে পড়ে বিজ্ঞাপনবহির্ভূত। এই দেশে ফিরতে হবে, তাই আমি অতি কৌশলী উত্তর দিয়েছিলাম, ‘ইয়েস, মাই লর্ড, উই হ্যাভ ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন।’ এটা বলেই শেষ লাইনে যোগ করলাম, উই আর ওয়ারিড অ্যাবাউট ফ্রিডম ‘আফটার’ এক্সপ্রেশন। মেরিকে জানালাম, আগের দিনই বর্তমান সরকারের তথ্যমন্ত্রী সংসদে একটি বিবৃতি দিয়েছেন, ‘দেশে এখন সংবাদপত্র পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করছে।’ দীর্ঘ ৫৫ বছর সব ধরনের সরকারের আমলে যেমনটি শুনেছি, তেমনটি আমার লর্ড অ্যাস্টারকে দেওয়া উত্তরটির সঙ্গে বিবৃতির কোনো সামঞ্জস্য মেরি খুঁজে পেলেন কি না, তা জানা হয়নি। তবে মেরিকে কোনো প্রতিবেদন পাঠাইনি, বলতে পারিনি সংবাদপত্রের বর্তমান বিচিত্র সংকটের জন্য মালিকের সম্পাদক বনে যাওয়া আর ব্যক্তিগত, ব্যবসায়িক, আর্থিক ও রাজনৈতিক স্বার্থে পত্রিকা, সংবাদ ও মত প্রকাশের প্রাধান্য সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা জগতে ভিন্ন পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে। সাংবাদিকতার বর্তমান দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির জন্য বর্তমান সরকারকে যতখানি দোষারোপ করা যাবে, তার চেয়ে অধিকতর দায়ী করব কতিপয় সাংবাদিকের বশংবদ সাংবাদিকতা।
প্রতিবেদনের মধ্যিখানে সংবাদপত্র তথা মিডিয়ার বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আমাদের সাংবাদিক সমাজের হাল অবস্থার একটুখানি বর্ণনা দিয়েছি। আমার বিভাজিত অনুজ সাংবাদিকদের একজন জার্মান বুদ্ধিজীবীর একটি আক্ষেপের গল্প বলেই আলোচনা সমাপ্ত করছি। কাহিনিটি হিটলারের নাৎসি শাসনামলের। ওই বুদ্ধিজীবীর প্রতিবেশীকে হিটলারের গেস্টাপো বাহিনী ধরে নিয়ে গেল। মহাত্মন ভাবলেন, ‘আমার কী করার আছে, আমাকে তো নেয়নি।’ তার পরদিন উঠিয়ে নিয়ে গেল তাঁর মতাদর্শী একজন দার্শনিককে। বুদ্ধিজীবী ভাবলেন, ‘আমার কিছু হবে না।’ তারপর একে একে উধাও হয়ে গেলেন তাঁর মতো আদর্শবাদী, স্বাধীন, প্রতিবাদী, পেশাজীবী আরও অনেকে। অবশেষে গেস্টাপো এসে তাঁর বাড়ির দরজার কড়া নাড়ল। যখন ধরে নিয়ে যায়, তিনি আর্তনাদ করে উঠলেন, ‘হায় রে! আজ আমার পাশে দাঁড়াবার কেউ নেই।’
এবিএম মূসা: সাংবাদিক ও কলাম লেখক।

No comments

Powered by Blogger.