সিসিসি নির্বাচন-সরকারের জন্য একটি সতর্কবার্তা by বদিউল আলম মজুমদার

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী মন্জুর আলম আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেছেন। গত নির্বাচনের আগের নির্বাচনে বিএনপি যখন নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল তখন মহিউদ্দিন চৌধুরী বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী মীর নাছিরকে প্রায় ৯৫ হাজার ভোটে পরাজিত করেছিলেন।


এবার তিনি প্রায় একই পরিমাণের ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন। অর্থাৎ সেই নির্বাচনের পর চট্টগ্রামের প্রায় দুই লাখ ভোটার মহিউদ্দিন চৌধুরীর প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করেছেন, যা অত্যন্ত প্রণিধানযোগ্য। আরও প্রণিধানযোগ্য, সরাসরি আসনের কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত বিজয়ীরা সংখ্যালঘিষ্ঠ (দৈনিক সমকাল, ১৯ জুন, ২০১০)। অর্থাৎ নির্বাচনে শুধু মহিউদ্দিন চৌধুরীরই ভরাডুবি হয়নি, আওয়ামী লীগ-সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরাও ভালো করতে পারেনি।
নির্বাচনের এ ফলাফল ছিল অনেকের কাছেই অপ্রত্যাশিত। এর তাৎপর্য নিয়ে ইতিমধ্যে বিতর্কও শুরু হয়েছে। বিরোধী দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এ পরাজয়ের মাধ্যমে সরকারের দুঃশাসন ও ব্যর্থতারই দাঁতভাঙা জবাব জনগণ দিয়েছে—এটি সরকারের প্রতি অনাস্থাস্বরূপ। অন্যদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এটি একটি স্থানীয় নির্বাচন এবং স্থানীয় ইস্যুর ভিত্তিতেই নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়েছে এবং এর সঙ্গে সরকারের জনপ্রিয়তার বিষয়টি কোনোভাবেই জড়িত নয়। চট্টগ্রামের ভোটাররা মূলত মহিউদ্দিন চৌধুরীকে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং নির্বাচনে তিনিই পরাজিত হয়েছেন, দল নয়। উল্লেখ্য, ২০০৫ সালের নির্বাচনের পর তৎকালীন ক্ষমতাসীন আর বিরোধী দল প্রায় একই বক্তব্য দিয়েছিল।
কী কারণে চট্টগ্রামের ভোটাররা মহিউদ্দিন চৌধুরীর প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছেন, তা সঠিকভাবে নিরূপণের জন্য গবেষণা প্রয়োজন। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করে ভোটারদের মধ্যে জরিপ পরিচালনা করা আবশ্যক। আশা করি, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-গবেষকেরা এ গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করবেন। তবে রাজনীতির এবং চট্টগ্রামের সাম্প্রতিক নির্বাচনের একজন ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষক হিসেবে আমার মনে হয়, দুই প্রধান দলের দাবি-পাল্টাদাবির মাঝখানেই প্রকৃত সত্যটি নিহিত।
আমার ব্যক্তিগত ধারণা, চট্টগ্রামের মেয়র নির্বাচনে মহিউদ্দিন চৌধুরীর ‘ল্যান্ডস্লাইড’ বা ভূমিধস পরাজয়কে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের পরাজয় বলে দাবি করা অত্যুক্তি হবে, যদিও প্রধানমন্ত্রী নিজে এবং দলের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতা নির্বাচনের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করেছিলেন। তবে দলের জনপ্রিয়তা নির্বাচনী ফলাফলের ওপর কোনো প্রভাবই ফেলেনি, তাও একেবারেই অস্বীকার করা যাবে না। আমি মনে করি, দেড় বছর বয়সের বর্তমান সরকারের জন্য চট্টগ্রামের নির্বাচনী ফলাফল একটি তির্যক সতর্কবার্তা বহন করে এনেছে, যা তাদের জন্য জেগে ওঠার ঘণ্টাধ্বনি হিসেবে বিবেচিত হওয়া আবশ্যক।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন প্রথম থেকেই আইন-বিধি-বিধান প্রয়োগের ব্যাপারে কড়াকড়ি ও নিরপেক্ষতা প্রদর্শন করে আসছে। প্রশাসনিক যন্ত্র, আমাদের জানামতে, কমিশনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়েছে, যদিও নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার সময়কার বিলম্ব নিয়ে অনেক গুজব বিরাজ করছে। নির্বাচন কমিশনের কঠোরতার কারণে দল ও প্রার্থীরাও সদাচরণ করেছেন। এমনকি টাকার ছড়াছড়িও ব্যাপকভাবে হয়নি বলেই অনেকের ধারণা। তাই এসব স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষ নির্বাচনী ফলাফলকে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে প্রভাবিত করেনি বলেই প্রতীয়মান হয়। প্রসঙ্গত, এ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা জেসমিন টুলীর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
আমাদের ধারণা, নির্বাচনী ফলাফল মূলত প্রভাবিত হয়েছে প্রার্থীদের ব্যক্তিগত গুণাবলি ও জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাঁদের সফলতা-ব্যর্থতা দ্বারা। অর্থাৎ ব্যক্তি হিসেবে মহিউদ্দিন চৌধুরী ও মন্জুর আলমের ব্যাকগ্রাউন্ড ও কর্মদক্ষতা সম্পর্কে ভোটারদের মনোভাব, তাঁদের জনপ্রিয়তাই বহুলাংশে নির্বাচনী ফলাফল নির্ধারণ করেছে। ফলাফল আরও প্রভাবিত হয়েছে ভোটারদের সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের ভূমিকার দ্বারা।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রবণতা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ সম্পর্কে অনেক ভোটারকেই অভিযোগ করতে শোনা গেছে। নারীদের সম্পর্কে তাঁর মনোভাব অনেকের কাছেই গ্রহণযোগ্য ছিল না। সংখ্যালঘুদেরও তিনি অনেকভাবে ক্ষিপ্ত করেছেন। বিশেষত এ দুটি ভোটার গ্রুপের সমর্থন তিনি ব্যাপকভাবে হারিয়েছেন বলেও অনেকের ধারণা। তাঁর জনপ্রিয়তা হ্রাসের ব্যাপারে নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগের অনেক নেতাও হতাশা ব্যক্ত করেছেন বলে আমরা শুনেছি। পক্ষান্তরে, একজন ভদ্র-নম্র ব্যক্তি বলে মন্জুর আলমের সুনাম রয়েছে। এ ছাড়া মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির গুরুতর অভিযোগও উঠেছে।
আমাদের সামন্তবাদী সমাজে নাগরিকেরা সরকার থেকে তাদের ন্যায্য প্রাপ্য সাধারণত অধিকার হিসেবে পায় না। এমনকি সিটি করপোরেশন থেকে প্রাপ্য সেবাও অনেক ক্ষেত্রে তদবির ছাড়া পাওয়া যায় না। অর্থাৎ যেকোনো সরকারি সেবা ও সুযোগ-সুবিধা পেতে হলে নাগরিকদের হয় উৎকোচ দিতে হয়, না-হয় সমাজের প্রভাবশালীদের পেট্রন হিসেবে গ্রহণ করতে হয়। এ ধরনের পেট্রন-ক্লায়েন্ট বা দাতা-গ্রহীতার সম্পর্কে দাতারা গ্রহীতাদের ‘আপনজনে’ পরিণত হন। আর নির্বাচনের সময় এলে গ্রহীতারা সাধারণত তাঁদের আপনজন তথা পেট্রনদেরই ভোট দেন, প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতা ও সততা-অসততার বাছ-বিচার না করেই। আমাদের অতীতের অনেক নির্বাচনে তা-ই ঘটেছে। আমাদের ধারণা, মহিউদ্দিন চৌধুরী তাঁর উগ্র আচরণের কারণে তাঁর কাছ থেকে ‘অনুগ্রহপ্রাপ্তদের’ও আপনজনে পরিণত হতে পারেননি, যা তাঁর পরাজয়ের অন্যতম কারণ।
প্রায় দেড় যুগ ধরে মেয়র থাকার কারণে মহিউদ্দিন চৌধুরীর সমর্থক যেমন সৃষ্টি হয়েছে, তেমনিভাবে তাঁর সমালোচনায়ও অনেকে মুখর। নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচন-পরবর্তী ঘটনাবলিও তাঁর সমালোচকদের হাতকে শক্তিশালী করেছে। নির্বাচনের দিনে বৃষ্টি এবং জলাবদ্ধতা অনেক ভোটারের দুর্ভোগের কারণ হয়েছে এবং এ জন্য তাঁকেই দায়ী করা হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনের কয়েক দিন আগে পার্শ্ববর্তী কক্সবাজারে পাহাড়ধসে অর্ধশতাধিক ব্যক্তির প্রাণহানিও সাম্প্রতিক কালে চট্টগ্রামে পাহাড় কাটার বাধাহীন প্রতিযোগিতার কথাই ভোটারদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। এসব ঘটনা মন্জুর আলমের পক্ষেই ভোটারদের বেশি আকৃষ্ট করেছে।
অনেকে দাবি করেন, দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মহিউদ্দিন চৌধুরীর পরাজয়ের একটি বড় কারণ। এ মতের সঙ্গে আমার ভিন্ন মত রয়েছে। বাংলাদেশের নির্বাচনী সমীকরণ হলো, প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ভোটার আওয়ামী লীগের কট্টর সমর্থক। প্রায় একই পরিমাণের সমর্থন রয়েছে বিএনপিরও। অন্যান্য দল মিলে আনুমানিক ৭০ শতাংশ ভোটার কোনো না কোনো দলের প্রতি অনুগত। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রয়েছেন যাঁরা দলের প্রতি অন্ধ বা দলান্ধ। গত কয়েক দশকে ফায়দাতন্ত্রের যে জাল সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিস্তার করা হয়েছে, তার ফলেই এ দলান্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
আমাদের ধারণা, দলান্ধতার কারণে দলীয় নেতৃত্বে কোন্দল সত্ত্বেও নির্বাচনের দিনে ‘ঘরের ছেলে-ঘরের মেয়েদের’ অধিকাংশই ঘরে ফিরে গেছেন এবং তাঁরা আনারস কিংবা জাহাজ মার্কা প্রতীকেই ভোট দিয়েছেন। আমরা মনে করি, অবশিষ্ট প্রায় ৩০ শতাংশ ভোটার যাঁরা কোনো দলের কট্টর সমর্থক নন, তাঁরা নির্বাচনী ফলাফলকে প্রভাবিত করেছেন। তাঁরাই মন্জুর আলমকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছেন।
বাকি এ ৩০ শতাংশ ভোটারের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, তাঁরা কোনো দলের জোরালো সমর্থক নন এবং কোনো প্রার্থীর প্রতিও অন্ধভাবে অনুগত নন। তাঁরা অপেক্ষাকৃত তরুণ ও শিক্ষিত। তাঁদের চোখ-কান খোলা এবং নাগরিকসমাজ ও গণমাধ্যমের প্রচার-প্রচারণা দ্বারা তাঁরা প্রভাবিত হয়েছেন এবং তাঁদের ভোট নির্বাচনী ফলাফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
এবারের চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল, সব প্রার্থীকে সাত ধরনের তথ্য—তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, অতীত ও বর্তমান মামলার বিবরণী, তাঁদের এবং তাঁদের ওপর নির্ভরশীলদের সম্পদ ও দায়-দেনা ইত্যাদি হলফনামা আকারে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হয়েছে। একই সঙ্গে জমা দিতে হয়েছে তাঁদের আয়কর রিটার্নের কপি। উল্লেখ্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রার্থীদের পক্ষ থেকে এসব তথ্য প্রদানের যে বাধ্যবাধকতা স্থানীয় সরকারের সব অধ্যাদেশে অন্তর্ভুক্ত ছিল, বর্তমান সরকার নবম জাতীয় সংসদে পাস করা সব আইন থেকে এগুলো বাদ দিয়েছিল। তবে আমাদের দাবি এবং নির্বাচন কমিশনের অনমনীয়তার কারণে পরবর্তী সময়ে এগুলো নির্বাচনী বিধিতে অন্তর্ভুক্ত হয়, যার জন্য কমিশন ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য।
আমরা ‘সুজন—সুশাসনের জন্য নাগরিকে’র পক্ষ থেকে এসব হলফনামা ও আয়কর রিটার্নের কপি নির্বাচন কমিশন থেকে সংগ্রহ করে প্রার্থীদের তুলনামূলক চিত্র তৈরি এবং তা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকাশ করি। এসব তথ্য সুজনের ওয়েবসাইটেও (www.votebd.org) প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে সুজন ও টিআইবির উদ্যোগে ১০ জুন চট্টগ্রাম মুসলিম হল মিলনায়তনে একটি ‘ভোটার-প্রার্থী মুখোমুখি’ অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমেও তূলনামূলক চিত্রগুলো বিতরণ করা হয়। আমাদের স্বেচ্ছাব্রতীরা এগুলো পরবর্তী সময়ে ভোটারের কাছে পৌঁছে দেয়। উল্লেখ্য, মন্জুর আলম এ মুখোমুখি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও মহিউদ্দিন চৌধুরী এতে অংশ নেননি। এ ধরনের ভোটার-মুখোমুখি অনুষ্ঠান বিটিভি/বিবিসির উদ্যোগেও অনুষ্ঠিত হয়।
চট্টগ্রামের স্থানীয় গণমাধ্যমের বদৌলতে আমাদের সংকলিত মেয়র পদপ্রার্থীদের তুলনামূলক চিত্র ব্যাপকভাবে প্রচার লাভ করে। অপেক্ষাকৃত দলনিরপেক্ষ ৩০ শতাংশ ভোটারের একটি বড় অংশ এসব তথ্য দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে বলে আমাদের ধারণা। তাঁরা প্রার্থীদের নিজেদের প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে জেনে-শুনে-বুঝে ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পেয়েছেন। এ ছাড়া প্রার্থীদের প্রদত্ত এসব তথ্যের সত্যতা তথা প্রার্থীদের নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও জনমনে ব্যাপক গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে বলে আমরা শুনেছি, যা ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের প্রভাবিত করেছে।
চট্টগ্রাম বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো এলাকা নয়। বস্তুত এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর, যেখানে বহু শিক্ষিত ও সচেতন নাগরিক বাস করে। এসব নাগরিক সরকারের সফলতা-ব্যর্থতা ও কার্যক্রম দ্বারা প্রভাবিত হয় না বললে সত্যের অপলাপ হবে। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাদের অনেকগুলো কাজ ও সিদ্ধান্ত ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে। যেমন, ফায়দাতন্ত্র-দলতন্ত্র-এমপিতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, দলের অঙ্গসংগঠনগুলোর বেপরোয়া চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি-দখলদারি, স্থানীয় সরকার-ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার চেষ্টা, উচ্চ আদালতে দলীয় ব্যক্তিদের নিয়োগ, ক্ষমতাধরদের সম্পদের হিসাব প্রদানে গড়িমসি, দুদককে শৃঙ্খলিত করার প্রচেষ্টা, গণমাধ্যমের ওপর খড়্গহস্ত, প্রতিবাদী কণ্ঠের প্রতি অসহিষ্ণুতা, মাহমুদুর রহমানকে নিয়ে বাড়াবাড়ি ইত্যাদি জনমনে অনেক প্রশ্নের উদ্রেক করেছে এবং অনেকের মোহভঙ্গ ঘটিয়েছে। চট্টগ্রামের ভোটারদের একাংশের সিদ্ধান্তও নিঃসন্দেহে সরকারের এসব কার্যক্রম দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। যেমনিভাবে প্রভাবিত হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনসহ আরও অনেক সাম্প্রতিক নির্বাচন। তাই আমরা বিশ্বাস করি, চট্টগ্রামের নির্বাচনী ফলাফল, বেশি দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই, মহাজোট সরকারের জন্য তাদের কার্যক্রমে গুণগত পরিবর্তন আনারও সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। এ সুযোগ উপেক্ষা করলে সরকার আরেকটি বড় ধরনের ভুল করবে। প্রসঙ্গত, বিরোধী দলেরও আত্মতুষ্টির তেমন কোনো অবকাশ নেই, কারণ তারাও ক্ষমতায় থাকাকালে একই ধরনের আচরণ করেছে।
ড. বদিউল আলম মজুমদার: সম্পাদক, ‘সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক’।

No comments

Powered by Blogger.