আজ উতসেয়ার জিম্বাবুয়ে

নেট সেশন শেষ করে হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে নিয়ে আজকের ম্যাচের উইকেট দেখতে চলে গেলেন প্রসপার উতসেয়া। ড্রেসিংরুম থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগ দিলেন এলটন চিগুম্বুরা। উইকেটেই ছোটখাটো একটা ‘টিম মিটিং’ হয়ে গেল। এরপর উতসেয়াকে কী সব বলতে বলতে যেন বের হয়ে আসছিলেন চিগুম্বুরা। হয়তো বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন রণপরিকল্পনা। ঘুরে দাঁড়ানোর ম্যাচে আজ নেতৃত্ব দিতে হবে যে উতসেয়াকেই!
অনুশীলনে নিস্ক্রিয় দেখেই সন্দেহ যা হচ্ছিল, পরে সেটাই নিশ্চিত করলেন প্রধান নির্বাচক অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেল, কুঁচকির চোটে আজ খেলা হচ্ছে না জিম্বাবুয়ে অধিনায়কের। গুরুতর কিছু নয়, চাইলে আজকের ম্যাচ খেলাও যেত। কিন্তু এতে চোটের অবনতি হতে পারে আরও। বাকি ম্যাচগুলোর কথা ভেবে তাই ঝুঁকি নিয়ে রাজি নয় জিম্বাবুয়ের টিম ম্যানেজমেন্ট। বাংলাদেশের মতো জিম্বাবুয়ে দলেও কোনো সহ-অধিনায়ক নেই। চিগুম্বুরা যাঁর কাছ থেকে অধিনায়কত্ব পেয়েছিলেন, সেই উতসেয়ার ওপরই বর্তেছে দায়িত্ব।
অধিনায়কের চোটের চেয়েও অবশ্য জিম্বাবুয়ের বড় সমস্যা পুরোনো রোগ ফিরে আসা। বাংলাদেশে গত দুটি সিরিজে প্রথম ম্যাচ জিতে পরে আর কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি তারা। গত মার্চের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও একই ঘটনা। অবস্থার একটু উন্নতি হয়েছিল জুনে নিজেদের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজে, তবে গ্রুপ পর্বে ভারতকে দুবার ও শ্রীলঙ্কাকে একবার হারানোর পর ফাইনালে হারতে হয়েছে যাচ্ছেতাইভাবে। প্রথম ম্যাচ জয়ের পর পথ হারানোর ধারা বজায় আছে এই সিরিজেও।
তবে ধারা বদলে দেওয়ার সুযোগ আছে এখনো। ক্যাম্পবেল তাই অনেক আশা নিয়ে তাকিয়ে আছেন দলের সিনিয়দের দিকে, ‘দ্বিতীয় ম্যাচে হারের পর দলকে আমরা তেমন কিছু বলিনি। বেশি বেশি বলে তো আর লাভ নেই। গত কিছুদিনে এমন অভিজ্ঞতা এই দলের অনেকবার হয়েছে। সবাই জানে কী করতে হবে। টেলর-টাইবুর মতো অভিজ্ঞরা ভালো শুরু পেয়েও কাজে লাগাতে পারছেন না। ২৫-৩০ রান করেই দায়িত্ব শেষ মনে করলে তো হবে না, অন্তত ৭০-৮০ করতে হবে, সেঞ্চুরি করতে হবে। সিনিয়রা ব্যাটসম্যানরা দায়িত্ব না নিলে সিরিজে ফেরা খুব কঠিন।’
এই সিনিয়রদের একজন, সাবেক অধিনায়ক টাটেন্ডা টাইবু কিন্তু ব্যাটিং নিয়ে অতটা চিন্তিত নন। ব্যাটসম্যানরা খুব একটা খারাপ করছেন না বলেই তাঁর ধারণা। এই উইকেটে নাকি রান কমই হওয়ার কথা। প্রথম ম্যাচের পর পথ হারিয়ে ফেলেছেন, রাজি নন এটা মানতেও, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সব ম্যাচই তো আর জেতা সম্ভব নয়। দুই দলই একটি করে ম্যাচ জিতেছে, পুরো সিরিজটাই এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে।’
তখনো জানতেন ম্যাচটি দিবারাত্রির, রাতের শিশিরে স্পিনারদের সমস্যার কথা ভেবে উতসেয়ার ভাবনার মূলে ছিল ‘টস’। দিনে ম্যাচ হওয়ার খবর শুনে নিশ্চয়ই স্বস্তি পেয়েছেন। এখন তিনি মন দিতে পারবেন আসল কাজে, দিবারাত্রি ম্যাচ জেনেই যেটি কাল বিকেলে বলেছেন আরেক স্পিনার রে প্রাইস, ‘টসে কিছু যায়-আসে না, জিততে হলে তো ভালো খেলেই জিততে হবে।’ দিবারাত্রি ম্যাচ হলেও অবশ্য প্রাইসের সমস্যা ছিল না, ‘কৃত্রিম আলোয় পেসাররা বাড়তি সুবিধা পায়, পেস বোলিং শুরু করে দেব!’
প্রাইসের পেস বোলিং না করলেও চলবে, তবে পারফরম্যান্সে নাটকীয় উন্নতি না হলে জিম্বাবুয়ের জন্য অপেক্ষা করছে কঠিন সময়।

No comments

Powered by Blogger.