ইউএস-বাংলা বিমান দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো ১৯ মি. ডলারের মামলা করেছে নেপালে by সাঙ্গাম প্রাসাইন

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো গত বুধবার বাংলাদেশী বিমান সংস্থাটির বিরুদ্ধে নেপালের কাঠমাণ্ডু ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছে। দুর্ঘটনার প্রায় দেড় বছর পরে তারা এই মামলা দায়ের করলো।

বাদীদের আইনজীবী অমৃত খারেলের মতে, সাতজন মেডিকেল শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যরা বিমান সংস্থাটির বিরুদ্ধে ১৯.০৯ মিলিয়ন ডলারের ওই মামলা করেছে। ওই সাত শিক্ষার্থী দুর্ঘটনায় মারা যায়।

২০১৮ সালের ১২ মার্চ ঢাকা থেকে কাঠমাণ্ডুগামী ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ত্রিভূবন ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়। এতে ২২ নেপালিসহ বিমানের ৫১ যাত্রী নিহত হয়। ৭৬ আসনের বিমানটিতে চারজন ক্রু সদস্যসহ ৭১ জন মানুষ ছিল।

নিহত যাত্রী আশনা শাক্য, আঞ্জিলা শ্রেষ্ঠা, মিলি মাহার্জান, নিগা মাহার্জান, প্রিন্সি ধামি, সাঞ্জায়া মাহার্জান এবং শ্রেয়া ঝা’র পরিবারের সদস্যরা ওই মামলাটি দায়ের করেছেন।

খারেল বলেন, “আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বৈধ দাবির বিষয়ে এই মামলা করা হয়েছে, কারণ ১৯৯৯ সালের মন্ট্রিল কনভেনশান অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করেছে ঢাকাভিত্তিক বিমান সংস্থাটি”।

মন্ট্রিল কনভেনশান অনুযায়ী ১১৩,১০০ ডলারের ন্যূনতম দায়বদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে, যেখানে প্রত্যেক যাত্রীর ক্ষেত্রে ১৫৮,৫৬৫ ডলার। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী এর পরিমাণ প্রায় ১৭.৪৪ মিলিয়ন রুপি। বিমান সংস্থা যদি প্রমাণ করতে না পারে যে, দুর্ঘটনার পেছনে তাদের কোন অবহেলা বা অন্য ভুল ভূমিকা ছিল না, তাহলে তাদেরকে এই অর্থ পরিশোধ করতে হবে।

গত বছরের ১৬ অক্টোবর নেপাল কানাডার মন্ট্রিলে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশান অর্গানাইজেশানের প্রতি তাদের অনুসমর্থন দেয়। ২০১৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে নেপালে মন্ট্রিল কনভেনশানের বাস্তবায়ন শুরু হয়।

খারেল বলেন, নেপাল সরকারের এয়ারক্র্যাফট অ্যাকসিডেন্ট ইনভেস্টিগেশান কমিশন রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে এই মামলা করা হয়েছে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, বিমান এয়ারলাইন্সের ‘ইচ্ছাকৃত ভুল কর্মকান্ড’ এবং ‘ব্যাপক অবহেলার’ কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।

১৭ জুলাই বিমান দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারগুলো ১৯৯৯ সালের মন্ট্রিল কনভেনশান অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দাবি করে, কিন্তু এয়ারলাইন্স জানায় তারা জনপ্রতি শুধুমাত্র ৫০,০০০ ডলার দিতে পারবে। খারেল বলেন, “২৩ জুলাই, কোম্পানি আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের দাবি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাখ্যান করে”।

No comments

Powered by Blogger.