জেলায় জেলায় ডেঙ্গু চিকিৎসা নিয়ে সংকট

দেশের প্রায় সব জেলার সরকারি হাসপাতালে গাণিতিকহারে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। বিপুল সংখ্যক রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অনেক হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগ শনাক্তের নেই কিট। অনেক হাসপাতালে এখনো পৌঁছেনি রোগ নির্ণয়ের সেই কিট। আবার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে অনেকে হাসপাতালের ভেতরেই এডিস মশা দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন। এদিকে বেসরকারি হাসপাতালগুলো নানা অজুহাতে ডেঙ্গু রোগ নির্ণয়ের পাশাপাশি একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে বলেও রোগীদের অভিযোগ। ওদিকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে পৌঁছেনি ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট। তাই হাসপাতালে আসা রোগীদের পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে প্রাইভেট হাসপাতালে।

এতে গ্রামের দরিদ্র নারী-পুরুষ রোগীরা পড়ছেন মারাত্মক বিপাকে। সকল উপসর্গ থাকার পরও টাকার অভাবে পরীক্ষা না করায় ডেঙ্গু হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হতে পারছেন না দরিদ্র রোগীরা। ফলে ডেঙ্গু আতঙ্কে ভোগছেন হবিগঞ্জবাসী। এদিকে কুমিল্লায় চিকিৎসা নেয়া রোগীদের অধিকাংশই ঢাকায় আক্রান্ত হয়ে এসেছেন। ডেঙ্গু শনাক্তকরণে কিট পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই বলে জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন। এদিকে গাজীপুরে বেড়েই চলছে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ। শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বর্তমানে ৫৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।  তাদের মধ্যে ৩৫ জন পুরুষ, ৯ জন মহিলা ও ৯ জন শিশু। হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের অনেকেই মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে ওঠছেন।  দক্ষিণাঞ্চলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। প্রতিদিনই অসংখ্য রোগী ভর্তি হচ্ছে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ হাসপাতালের ওয়ার্ডে তিল ধারণের জায়গা নেই। সর্বশেষ শুক্রবার সকালে জানা গেছে ১০৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন এ হাসপতালে। এতদিন ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট না থাকায় সর্বশেষ রোগ নির্ণয় সম্ভব হত না। এদিকে সামান্য জ্বর হলেই আতংকে হাসপাতালে ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে ছুটে আসছে বিভিন্ন বয়সী মানুষ। বগুড়ায় গত ১৭ দিনে কয়েক’শ ডেঙ্গু রোগী ভেবে হাসপাতালে  ভর্তি করা হলেও ধরা পড়েছে ৪৩ জন। শুক্রবার পর্যন্ত হাসপাতালে পুলিশের এক এএসআই, দুইজন শিশুসহ এখন  ভর্তি আছেন ২৩ জন। এদিকে বৃহস্পতিবার কিট সরবরাহ পেয়েছেন জেলা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে ফলোআপ পরীক্ষার জন্যে যে উপকরন (ওয়ান জি এম এবং ওয়ান জি জি) সরবরাহ নেই বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র।

এদিকে কিট সংকটের প্রধান কারণ হচ্ছে জ্বর হলেই হাসপাতালে গিয়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা করছে বেশির ভাগ রোগী। ফলে বাজারে কিটের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। দুই একটি জায়গায় কিট পাওয়া গেলেও দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। ২২০ টাকার কিট দাম বৃদ্ধি পেয়ে দুই দিন আগেও ৩৫০-৩৬০ টাকায় পাওয়া যেতো। এখন ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত নতুন করে ২১ জন ডেঙ্গু রোগী বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। উত্তরাঞ্চল থেকে ডেঙ্গুর ভয়ে ঢাকা যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে লোকজন। বিশেষ কারণ কেউ ঢাকায় যাচ্ছে না। ডেঙ্গুর ভয়ে এ অঞ্চলের মানুষের মূলত ঢাকা যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.