কেন এই মার্কিন বিমান হামলা?

১৭ বছরে প্রবেশ করতে যাচ্ছে আফগান যুদ্ধ, কিন্তু এত দিনেও বাগরাম বিমানঘাঁটির আকাশে যুদ্ধবিমানের ওড়াউড়ি বন্ধ হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের কাছে অবস্থিত এই বিমানঘাঁটিই ডোনাল্ড ট্রাম্পের আফগান যুদ্ধ জয়ের প্রতিশ্রুতির কেন্দ্রবিন্দু। যদিও তার পূর্বসূরি বারাক ওবামাও ব্যর্থ হয়েছেন এই যুদ্ধ শেষ করতে। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের আফগান যুদ্ধনীতি নিয়ে এক মাসের পর্যালোচনার ইতি টানেন গত আগস্টে। দীর্ঘ ওই পর্যালোচনার পর হোয়াইট হাউজ সিদ্ধান্তে পৌঁছে যে, পূর্ববর্তী ওবামা প্রশাসন আকাশযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা যথাযথভাবে কাজে লাগায়নি। তারা মনে করছে, এই যুদ্ধ শেষ করার একমাত্র হাতিয়ার হতে পারে আকাশপথে যুদ্ধ। ডোনাল্ড ট্রাম্প আরো কয়েক হাজার সৈন্য প্রেরণ করতে যাচ্ছেন আফগানিস্তানে।
তবে এক লাখ মার্কিন সৈন্য মোতায়েন রেখে যুদ্ধ করার সেই দিন আর নেই। স্থলযুদ্ধের দায়িত্ব আরো বেশি করে আফগানিস্তানের সরকারি বাহিনীর হাতে ন্যস্ত হতে পারে এবং পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসীদের আশ্রয় পাওয়া বন্ধ করতে রাজনৈতিক প্রচেষ্টা যতদ্রুত সম্ভব জোরদার করা হবে। তবে তালেবানের বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করা এই যুদ্ধের একটি উল্লেখযোগ্য উন্নতি। আফগানিস্তানে বর্তমানে একমাত্র বিদেশী বাহিনী হিসেবে উপস্থিত আছে মার্কিন বাহিনী। নিয়মিতই তারা তালেবান ও আইএস ঘাঁটি লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালাচ্ছে। গত সেপ্টেম্বরেও তারা ৭৫১টি বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ট্রাম্পের আফগান নীতি পর্যালোচনার পর প্রথম মাসেই এই হামলা চালিয়েছে তারা, যা ছিল ২০১০ সালের পর পার কোনো এক মাসে সর্বোচ্চ। বিমান হামলা বৃদ্ধির ফলে দেশটিতে মার্কিন বিমানবাহিনীর স্থলসেনাদের কাজের পরিধি অনেকটাই কমে এসেছে বলে জানা গেছে। গত মঙ্গলবার ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম কোনো শীর্ষকর্তা হিসেবে আফগানিস্তান সফর করেন। তিনি বলেছেন, নতুন এই যুদ্ধকৌশলের উদ্দেশ্য তালেবানের মনোবল ভেঙে দেয়া। কাবুলে মাইক পেন্স বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট গনি আমাকে জানিয়েছেন, ২০১৭ সালে আমরা বেশ কিছু সিনিয়র তালেবান নেতাকে হত্যা করেছি, যা সংখ্যায় আগের কয়েক বছরের চেয়ে বেশি।’ তিনি বলেন, তালেবানের আত্মবিশ্বাসে বড় ধরনের চির ধরতে শুরু করেছে। গোষ্ঠীটি এখন নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। আমাদের বিশ্বাস, আমরা শত্রুদের পরাজিত করে অগ্রসর হবো।

No comments

Powered by Blogger.